টিএমসিপি যে ভাবে তাঁর বিরুদ্ধে সভা ও মিছিল করছে তাতে হামলার মুখে পড়ার আশঙ্কা করে আর কলেজে যাবেন না বলে বৃহস্পতিবার বিবৃতি দিয়েছিলেন রায়গঞ্জ ইউনিভার্সিটি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ উত্তম রায়। বিষয়টি নিয়ে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্দরে নানা প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। এরই জেরে শুক্রবার বিকেলে ফ্যাক্স মারফৎ উপাচার্যের কাছে ছুটির আবেদন পাঠালেন উত্তমবাবু। ওই আবেদনে অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে আগামী ২২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ছুটি চেয়েছেন তিনি। একই সঙ্গে বাড়ি থেকেই চিঠি পাঠিয়ে তিনি কলেজের টিচার্স কাউন্সিলের সম্পাদক তাপস মোহান্তকে অস্থায়ীভাবে অধ্যক্ষের দায়িত্ব নেওয়ার অনুরোধও করেছেন। তাপসবাবু অবশ্য ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব নেবেন না বলে জানিয়েছেন। উত্তমবাবু বলেন,“দু’মাস আগে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের পদ থেকে ইস্তফা দিতে চেয়ে চিঠি দিয়েছি। এখন নানা ঝামেলা হচ্ছে। সব তো লেখা সম্ভব নয়। সংশ্লিষ্ট মহলে তা মৌখিকভাবে বলেছি। আবেদনে অসুস্থতার কথা লিখেছি।”
উপাচার্য সোমনাথ ঘোষ ওই চিঠি পাওয়ার কথা স্বীকার করেছেন। উপাচার্য বলেন,“উত্তমবাবুর ছুটি পাওনা আছে কি না তা খতিয়ে দেখে আবেদন মঞ্জুর করা হবে। তাঁর ইস্তফার আবেদন শিক্ষা দফতরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেখান থেকে নির্দেশ না আসা পর্যন্ত অন্য কাউকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দেওয়া সম্ভব নয়।” কলেজের টিচার্স কাউন্সিলের সম্পাদক তাপসবাবু বলেন, “যতদূর জানি, টিচার্স কাউন্সিলের সম্পাদকের পদে থেকে অস্থায়ীভাবে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব নেওয়া যায় না। তাই উত্তমবাবুর অনুরোধ আমি রাখতে পারিনি।”
ঘটনার প্রতিবাদে এদিন কলেজ চত্বরে ধিক্কার মিছিল করেন ছাত্র পরিষদের সমর্থকেরা। ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক তথা ছাত্র পরিষদ নেতা শুভাশিস সাহার অভিযোগ, “উত্তমবাবু হামলার আশঙ্কা করছেন। টিএমসিপি আমাদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়েছে। তাই টিএমসিপিকে ধিক্কার জানাতেই সাধারণ পড়ুয়াদের নিয়ে ধিক্কার মিছিল করা হল।”
টিএমসিপির জেলা সভাপতি অজয় সরকার পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, “শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠানে কলেজ চত্বরে টিএমসিপির সমর্থক এক ছাত্রীকে ছাত্র পরিষদের তিন নেতা মারধর ও শ্লীলতাহানি করেন। উত্তমবাবু ছাত্র পরিষদকে বাঁচাতে বিষয়টিকে ধামাচাপা দেওয়ার জন্য তদন্ত না করেই ওইদিন কলেজে কিছু হয়নি বলে দাবি করেন। ছাত্রীদের নিরাপত্তার স্বার্থে আমরা এই ঘটনার প্রতিবাদ করায় উত্তমবাবু আমাদের উপর পাল্টা চাপ সৃষ্টি করতে হামলার আশঙ্কার নাটক করছেন।” উত্তমবাবু চাইলে বাড়ি থেকে কলেজে যাতায়াতের পথে বা কলেজ চত্বরে টিএমসিপি সমর্থকেরা তাঁকে সর্বক্ষণ নিরাপত্তা দেবেন বলেও দাবি করেন অজয়বাবু।