গাড়ির অপেক্ষায়। ছবি: উমাকান্ত ধর
অসমে জঙ্গি হামলার প্রতিবাদে আদিবাসীদের কয়েকটি সংগঠনের ডাকা বন্ধে শনিবার বিপর্যপ্ত হল উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকা। বন্ধের প্রভাব পড়ে দক্ষিণবঙ্গের আদিবাসী প্রধান বিভিন্ন এলাকায়। যার জেরে দিনভর চরম দুর্ভোগে পড়তে হল বাসিন্দাদের। হামলায় নিহত এবং আহত আদিবাসীদের ক্ষতিপূরণ এবং অভিযুক্তদের কড়া শাস্তির দাবিতে এ দিন ১২ ঘণ্টা বন্ধের ডাক দিয়েছিল অখিল ভারতীয় আদিবাসী বিকাশ পরিষদ এবং চা শ্রমিক নেতা জন বার্লা গোষ্ঠীর সংগঠন। দুই সংগঠনেরই দাবি, এ দিনের বন্ধ হয়েছে সর্বাত্মক।
ভরা পর্যটনের মরসুমে হঠাত্ বন্ধের জেরে দুর্ভোগে পড়েন উত্তরবঙ্গে ঘুরতে যাওয়া পর্যটকেরা। অনেকেই ফেরার টিকিট বাতিল করেন। ডুয়ার্সের ওদলাবাড়ি, মালবাজার, চালসা, মেটেলি, লাটাগুড়ি, নাগরাকাটা সর্বত্রই দোকানবাজার বন্ধ ছিল। উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের কিছু বাস চলে। কিন্তু জাতীয় ও রাজ্য সড়ক অবরোধের জেরে তাও আটকে পড়ে। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ডুয়ার্সের ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কে অবরোধ চলে। কলকাতার বাগুইহাটির বাসিন্দা স্মরজিত্ সান্যাল সপরিবারে ডুয়ার্সের মূর্তি গরুমারাতে ঘুরতে এসেছিলেন। এ দিনই তাঁদের শিলিগুড়ি থেকে ফেরার ট্রেন ধরার কথা। তাঁর কথায়, “পানীয় জল কেনারও দোকান খোলা পাইনি।” অবরোধের জেরে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন স্টেশনে আটকে পড়ে দুরপাল্লার ট্রেন, প্যাসেঞ্জার।
ডুয়ার্সে বিপর্যস্ত জনজীবন। ছবি: রাজকুমার মোদক।
বাগডোগরা বিহার মোড়ে অবরোধ। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।
বন্ধের মিশ্র সাড়া পড়ে বাঁকুড়ার রাইপুর, বারিকুল, রানিবাঁধ ও সারেঙ্গার কিছু এলাকায়। অধিকাংশ দোকানপাট, বন্ধ ছিল। যানবাহন চলাচল প্রয়োজনের তুলনায় কম ছিল। রাইপুরের অবনী দুলে, ভবানী সিং সর্দার বলেন, “বাঁকুড়া মেডিক্যালে ভর্তি থাকা এক আত্মীয়কে দেখতে গিয়েছিলাম। সকালে বাস পেলেও দুপুরে ফেরার পথে বাঁকুড়া থেকে আর বাস পাইনি। ” আদিবাসী বিকাশ পরিষদের রাজ্য সম্পাদক তেজকুমার টোপ্পো বলেন, “কাউকে বিপাকে ফেলতে বন্ধ ডাকা হয়নি। তবে অসমের আক্রান্তদের জন্য রাজ্যজুড়ে যে সহানুভূতি রয়েছে তা এই বন্ধেই প্রমাণিত।”
এ দিনই দলীয় এক সমর্থককে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বীরভূমের ময়ূরেশ্বরের থানার শিবগ্রাম মোড়ে, সাঁইথিয়া- রামপুরহাট সড়ক অবরোধ করে বিজেপি। ফলে নাকাল হতে হয় রাস্তায় আটকে পড়া মানুষজনকে।