এ বার একলব্য মডেল স্কুল নিয়ে কড়া অবস্থান নিচ্ছে জেলা প্রশাসন। বুধবার নাগরাকাটা ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে থানায় আট জন পড়ুয়ার নামে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তদন্তও শুরু হয়েছে বলে জানান মহকুমা পুলিশ আধিকারিক নিমা ভুটিয়া।
১৮ অগস্ট স্কুলে ছুটিতে পাঠানো অধ্যক্ষ অমরজিৎ সিংহ চৌহ্বান এবং শিক্ষক মজিবুল ইসলামকে নিয়ে এক বৈঠক ডাকে অনগ্রসর কল্যাণ দফতর ও স্কুল পরিচালন সমিতি। তাতে অষ্টম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির প্রতিনিধিদেরও ডাকা হয়। সে দিন প্রশাসনিক কর্তারা স্কুল এলেও পড়ুয়াদের একাংশ তাদের স্কুলে ঢুকতে দেয়নি। স্কুল গেটে তালা দিয়ে সন্ধ্যা অবধি বিক্ষোভ চলে। স্কুলে নাগরাকাটার যুগ্ম বিডিও শিরিং জেং ভুটিয়া-সহ শিক্ষকেরা আটকে পড়েন। আর গেটের বাইরে পড়ুয়াদের অভব্য আচরণের শিকার হন জেলা অনগ্রসর কল্যাণ দফতরের প্রকল্প আধিকারিক। মঙ্গলবার থেকেই স্কুলে অনির্দিষ্টকালীন ছুটি ঘোষণা করে জেলা প্রশাসন।
বুধবার ৬ ছাত্র এবং ২ ছাত্রী মোট ৮ পড়ুয়ার নামে সরকারি কাজে বাধা দান, প্রশাসনিক কর্তার বিরুদ্ধে অভব্য ভাষা প্রয়োগ এবং পড়ুয়াদের প্রভাবিত করে স্কুলের পরিবেশ নষ্টের চক্রান্তের অভিযোগ করে থানায় ডায়েরি করা হয়। অধ্যক্ষ অমরজিৎ সিংহ চৌহ্বানের অপসারণ চেয়ে একলব্য বাঁচাও কমিটি সম্পাদক পবন খেড়বার এ দিন বলেন, “পড়ুয়াদের বিরুদ্ধে অভিযোগের খবর শুনে আমরা অবাক হয়েছি। অধ্যক্ষকে প্রশাসন না-সরিয়ে কেন পড়ুয়াদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হচ্ছে বুঝছি না। জেলা প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তকে আমরা মানতে পারছি না।” একলব্য বাঁচাও কমিটির সভাপতি জন বারলা জেলা প্রশাসনের সিদ্ধান্তকে হঠকারী বলে জানিয়ে তিনি দিল্লি গিয়ে কেন্দ্রে অভিযোগ করবেন বলে জানান।
এদিন মালবাজারের মহকুমাশাসক জ্যোতির্ময় তাঁতি বলেন, “একলব্য স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের সমস্যা থাকতেই পারে। কিছু ছাত্রছাত্রী স্কুলের শৃঙ্খলা নষ্ট করে যে ভাবে সরকারি কর্তাদের সঙ্গে অভব্য আচরণ করেছে তা মানা যায় না। থানায় অভিযোগ করা হলেও প্রশাসন একলব্যে শৃঙ্খলা, পঠনপাঠনে পরিবেশ ফেরাতে চায়।” তপশিলী উপজাতিদের জন্যে কেন্দ্র ও রাজ্যের অনুদানে একলব্য আবাসিক মডেল স্কুল রাজ্যে ৭টি রয়েছে। এর মধ্যে উত্তরবঙ্গে ২টি। নাগরাকাটা ছাড়া উত্তরবঙ্গের অন্য একলব্য স্কুল রয়েছে উত্তর দিনাজপুর জেলায়। নাগরাকাটার স্কুলটি ২০০২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০১২-এ সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর অমরজিৎ সিংহ চহ্বানকে স্কুলে অধ্যক্ষের পদে বসানো হয়। ২০১৪ সালের মার্চের গোড়া থেকে অধ্যক্ষের নামে মার, গালি দেওয়ার অভিযোগ তুলে আন্দোলন শুরু করে পড়ুয়া ও অভিভাবকের একাংশ। অন্য অংশ ও তাদের অভিভাবক অধ্যক্ষের ভূমিকায় খুশি। তাঁদের বক্তব্য, অধ্যক্ষের চেষ্টায় এই স্কুলের ফল ভাল হয়েছে।