আন্তর্জাতিক পদক, ‘হিরো’ উত্তর-দক্ষিণের দুই কন্যা

নুন আনতে পান্তা ফুরোয়। পুজোয় একটা সস্তার জামার বেশি দুটো কেনার ক্ষমতা নেই। স্কুলে টিফিনের খরচ কখনও জোটে, কখনও জোটে না। তখন বন্ধুদের কাছ থেকে ভাগ করে খেতে হয়। তেমন পরিবারের দুই মেয়ে লড়াই করে খোখো খেলে যাচ্ছে।

Advertisement
শেষ আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ০২:০৬
Share:

শিলিগুড়িতে খোখো-কন্যারা।—নিজস্ব চিত্র।

নুন আনতে পান্তা ফুরোয়। পুজোয় একটা সস্তার জামার বেশি দুটো কেনার ক্ষমতা নেই। স্কুলে টিফিনের খরচ কখনও জোটে, কখনও জোটে না। তখন বন্ধুদের কাছ থেকে ভাগ করে খেতে হয়। তেমন পরিবারের দুই মেয়ে লড়াই করে খোখো খেলে যাচ্ছে। শুধু খেলাই নয়, আন্তর্জাতিক স্তরে পদক পেয়ে তাঁরাই এখন সত্যিকারের ‘হিরো’। শিলিগুড়ির সালমা মাঝি এবং হুগলির দীপিকা চৌধুরী। দু’জনেই গুয়াহাটিতে অনুষ্ঠিত দ্বাদশ সাফ গেমসে সোনাজয়ী জাতীয় দলের সদস্য। বৃহস্পতিবারই সফর সেরে শিলিগুড়িতে নেমেছেন তাঁরা। তাঁদের শিলিগুড়ি মহকুমা খোখো অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে সংবর্ধনা জানানো হয়। শিলিগুড়ির সালমার বাড়ি সিঙ্গিঝোরায়। বাবা দুমরাবাবু ও মা ইমলিয়াদেবী দু’জনেই ঠিকা শ্রমিকের কাজ করেন। সে নিজে স্থানীয় একটি স্কুলে একাদশ শ্রেণিতে পড়ে। তার আরও এক বোন ও ভাই আছে। সবাইকে পড়ানো তো দূর অস্ত, ঠিকমত খেতেও দিতে পারেন না তাঁরা। তার মধ্যেই আধপেটা খেয়ে অনুশীলন করে সালমা। এ দিন সংবর্ধনায় হাজির ছিলেন তার মা। সবটা বুঝে উঠতে না পারলেও মেয়েকে সবাই ভাল বলছে, ছবি তুলছে দেখে তিনি বুঝতে পারেন, নিশ্চয় মেয়ে ভাল কিছু করেছে। হুগলির দীপিকার বাবা রঞ্জনবাবু কলের মিস্ত্রির কাজ করেন। তিনি শারীর শিক্ষা নিয়ে পড়েন মগরার একটি কলেজে। কলেজে পাওয়া তফসিলি জাতির ভাতা থেকে পড়া ও খেলার খরচ জোগাড় করেন। তাঁর সাফল্যে এগিয়ে আসেনি তাঁর জেলা সংস্থা। সেই আক্ষেপ তো রয়েইছে, সেই সঙ্গে খুশি শিলিগুড়ি থেকে সংবর্ধনা পেয়ে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন