আবাসনের গাছ কেটে নেওয়ায় ক্ষোভ

একটি আবাসনের ২০টি দেবদারু গাছ কেটে ফেলার অভিযোগে উঠল। মঙ্গলবার সকালে শিলিগুড়ির ডন বস্কো রোডে জ্যোতিনগরের সুরভি অ্যাপার্টমেন্টের ঘটনা। আবাসনের বাসিন্দা ত্রিনাঞ্জন ধর বন দফতরের কাছে এ দিন অভিযোগ জানান, সেখানকার বাসিন্দা দুই মহিলা এ দিন সকালে এক দিনমজুরকে ডেকে গাছগুলি কাটিয়েছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০১৪ ০২:১৫
Share:

এই গাছগুলি কাটা নিয়েই বিতর্ক। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।

একটি আবাসনের ২০টি দেবদারু গাছ কেটে ফেলার অভিযোগে উঠল। মঙ্গলবার সকালে শিলিগুড়ির ডন বস্কো রোডে জ্যোতিনগরের সুরভি অ্যাপার্টমেন্টের ঘটনা। আবাসনের বাসিন্দা ত্রিনাঞ্জন ধর বন দফতরের কাছে এ দিন অভিযোগ জানান, সেখানকার বাসিন্দা দুই মহিলা এ দিন সকালে এক দিনমজুরকে ডেকে গাছগুলি কাটিয়েছেন। গাছগুলি কাটাতে দেখে তিনি এবং তাঁর স্ত্রী নিষেধ করেন। সে কথায় কর্ণপাত না করে বাগানে থাকা সমস্ত দেবদারু গাছগুলি কেটে ফেলান তাঁরা। এর পরেই ত্রিনাঞ্জনবাবু এবং স্থানীয় তৃণমূল নেতা মনোজ বর্মা বন দফতরে ফোন করে অভিযোগ জানান। অভিযোগ পেয়ে শালুগাড়ার পেট্রোলিং পার্টির রেঞ্জার নারায়ণ চন্দ্র রায়, বৈকুন্ঠপুর বন বিভাগের সহকারি বনাধিকারিক দেবজ্যোতি বেরা বনকর্মীদের নিয়ে যান। ওই দুই মহিলার এক জনের স্বামীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রেঞ্জ অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়। নিয়ে যাওয়া হয় যিনি গাছ কেটেছেন, তাঁকেও। তাঁদের সন্ধ্যা পর্যন্ত আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। পরে তাঁদের ছাড়া হয়। অন্য এক মহিলাকে ডেকে পাঠানো হলেও সে সময় তিনি ছিলেন না বলে পরিবারের তরফে জানানো হয়। কী কারণে গাছ কাটা হয়েছে তা জানাতে দুই মহিলাকে বন দফতরের তরফে নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

Advertisement

বৈকুন্ঠপুরের বনাধিকারিক ধর্মদেব রাই বলেন, “বন কর্মীদের নিয়ে বন দফতরের অফিসাররা গিয়েছিলেন। তাঁরা অভিযোগ খতিয়ে দেখছেন। তাঁদের রিপোর্ট পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” অভিযুক্ত এক মহিলা বলেন, “ওই গাছগুলি বড় হয়ে গিয়েছে। তা বেয়ে সাপ ঘরে ঢুকতে পারে। তাই কাটা হয়েছে।” আবার দাবি করেন, “গাছগুলি কাটা হয়নি। ছাঁটা হয়েছে।” আরা এক মহিলার স্বামী জানান, “সাফাই করার জন্য বলা হয়েছিল। কে কী ভাবে গাছ কেটেছে বলতে পারব না।”

তৃণমূল নেতা মনোজবাবু বলেন, “এর আগেও হিলকার্ট রোডের ধারে, সেবক রোডের ধারের গাছ রাতের অন্ধকারে কে বা কারা কেটে চলে গিয়েছে। পুলিশে এবং বন দফতরে অভিযোগ জানানো হলেও দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এ দিন এক সঙ্গে এ ভাবে ২০টি বড় দেবদারু গাছ কেটে দেওয়ার ঘটনা নিন্দ্যনীয়। অভিযুক্তদের উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া উচিত। তা না হলে এ ভাবে গাছ কাটার প্রবণতা বাড়বে।” আবাসনের বাসিন্দাদের একাংশ ঘটনার নিন্দা করেছেন। ওই আবাসনের বাসিন্দা দিলীপ আশ্রা জানান, এ ভাবে গাছগুলি কেটে ফেলা উচিত হয়নি। আবাসনের পাশেই থাকেন শিখা মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “এত বড় বড় গাছ এ ভাবে কাটা অপরাধ। শহরে এমনিতেই গাছ কমছে। তার পরেও বাসিন্দারা যদি সচেতন না হন, সেটা দুর্ভাগ্যজনক।”

Advertisement

আবাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৪ সালে গাছগুলি লাগানো হয়েছিল। আবাসনের দুই এবং তিন নম্বর ব্লকের মাঝখানে কিছুটা জায়গা রয়েছে। সেখানেই গাছগুলি লাগানো হয়েছিল। সেগুলি বিশেষ কারও সম্পত্তি নয়। আবাসনের সকলের অধিকার রয়েছে। অথচ আলোচনা না-করে, অনুমতি না নিয়ে এ ভাবে গাছগুলি কাটায় বাসিন্দারা ক্ষুব্ধ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন