উচ্চচাপের ফাঁসে উত্তুরে হাওয়া, উষ্ণ দিনেই শুরু

উচ্চচাপ বলয়ে আটকা পড়েছে উত্তুরে হাওয়া। তার জেরে বছরের শেষ দিনের মতো নতুন বছরের প্রথম দিনেও উষ্ণ থাকল শিলিগুড়ি এবং জলপাইগুড়ি। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার দুই শহরের তাপমাত্রা আরও এক ডিগ্রি বেড়েছে।

Advertisement

অনির্বাণ রায়

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০২ জানুয়ারি ২০১৫ ০২:০২
Share:

জানুয়ারিতেও রোদের তেজ। শিলিগুড়িতে বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র।

উচ্চচাপ বলয়ে আটকা পড়েছে উত্তুরে হাওয়া। তার জেরে বছরের শেষ দিনের মতো নতুন বছরের প্রথম দিনেও উষ্ণ থাকল শিলিগুড়ি এবং জলপাইগুড়ি।

Advertisement

কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার দুই শহরের তাপমাত্রা আরও এক ডিগ্রি বেড়েছে। এ দিন জলপাইগুড়ি শহর এবং লাগোয়া এলাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে ৫ ডিগ্রি বেশি ছিল। শিলিগুড়ি শহরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৯ ডিগ্রি ছুঁইছুঁই। তাপমাত্রার এমন মেজাজ যদিও আরও কয়েকদিন চলতে থাকে, তবে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসকেই ‘উষ্ণতম’ বলে চিহ্নিত করা হতে পারে বলে আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন।

গত দু’সপ্তাহে কোনও পশ্চিমী ঝঞ্ঝা সিকিম এবং উত্তরবঙ্গের আকাশে না আসায় দিনের তাপমাত্রা বাড়তে শুরু করেছে বলে আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে। পশ্চিমী ঝঞ্ঝার টানেই তুষারাবৃত হিমালয় ছুঁয়ে আসা কনকনে উত্তুরে হাওয়া উত্তরবঙ্গে ঢুকতে শুরু করে। সেই হাওয়ার দাপটেই তাপমাত্রা কমতে শুরু করে। যদিও, এখন দক্ষিণী হাওয়ার দাপটে ফিরে গিয়েছে উত্তুরে হাওয়া। আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি বাংলাদেশে একটি শক্তিশালী ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হয়। সেই ঘুর্ণাবর্তের ঠেলায় বঙ্গোপসাগর থেকে তুলনামূলক উষ্ণ হাওয়া পাহাড় লাগোয়া উত্তরবঙ্গের দিকে ধেয়ে এসেছে। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের সিকিমের আধিকারিক গোপীনাথ রাহা বলেন, “বঙ্গোপসাগর থেকে আসা উষ্ণ হাওয়ার প্রভাবে যেমন তাপমাত্রা বাড়ছে, তেমনই সেই হাওয়া সক্রিয় থাকায় উত্তুরে হাওয়াও শিলিগুড়ি বা জলপাইগুড়িতে ঢুকতে পারছে না। এই দুই কারণে তাপমাত্রা একটু একটু করে বাড়ছে। নতুন করে পশ্চিমী ঝঞ্ঝা না এলে তাপমাত্রা কমার সম্ভাবনা নেই।”

Advertisement

গত ত্রিশ বছরের তাপমাত্রা বিশ্লেষণ করে আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, ডিসেম্বরের ২০ তারিখের পরে জলপাইগুড়ির তাপমাত্রা ২৬ ডিগ্রির উপরে ওঠেনি। যদিও এ দিন জলপাইগুড়ি শহরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৯ ডিগ্রি। বৃহস্পতিবারও সকাল থেকে শিলিগুড়ি এবং জলপাইগুড়িতে চড়া রোদ দেখা গিয়েছে। দুপুর বেলায় গরম পোশাক ছাড়াই বাসিন্দাদের একাংশকে শিলিগুড়ির হিলকার্ট রোড, সেবক রোডে চলাফেরা করতে দেখা গিয়েছে। একই দৃশ্য দেখা গিয়েছে জলপাইগুড়িতেও। জানুয়ারি মাসের প্রথম দিনে কবে গরম পোশাক ছাড়াই বাড়ি থেকে বের হয়েছে তা মনে করতে পারলেন না জলপাইগুড়ির প্রবীণ বাসিন্দা উমেশ শর্মা। তাঁর কথায়, “আবহাওয়ার মতিগতি বোঝা ভার। কয়েকদিন আগেই সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কুয়াশা দেখা যেত। আর এখন চাদর বা গরম পোশাক ছাড়াই দিব্যি চলাফেরা করছি।”

কবে থেকে ফের শীত ফিরবে তাও সঠিক ভাবে জানাতে পারেনি আবহাওয়া দফতর। কাশ্মীরের আকাশে একটি পশ্চিমী ঝঞ্ঝা ঘনীভূত হয়েছে বলে জানিয়েছে দফতর। সেই পশ্চিমী ঝঞ্ঝাটি স্বাভাবিক নিয়মেই উত্তরবঙ্গের আকাশে আসবে বলে জানিয়ে গোপীনাথবাবু বলেন, “ঝঞ্ঝার টানে উত্তুরে হাওয়াও ঢুকবে। তবে কবে সেই ঝঞ্ঝাটি আসবে, নাকি মাঝপথে দুর্বল হয়ে ফিরে যাবে তা নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন