গত চারদিনে উত্তরবঙ্গের পাহাড়, জঙ্গল, বন্যপ্রাণ, ক্ষুদ্র জনজাতির এলাকা ঘুরে দেখে রীতিমত উচ্ছ্বসিত ফ্রান্সের বনিস সেবাস্টিয়ান, জার্মানির ইভা মারিয়া, রাশিয়ার ওলেগ, অস্ট্রেলিয়ার শেরিল বা ইটালির অ্যালিশয়া’রা। শুধু তাই নয়, নিজের দেশে ফিরে এই অঞ্চলে পর্যটকদের পাঠানোর জন্য সবরকম উদ্যোগের কথাও জানিয়ে গেলেন শেরিল’রা। মঙ্গলবার সকালে মাটিগাড়ার উত্তরায়ণ উপনগরীর একটি হোটেলে ইস্টার্ন হিমালয়া ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুর অপারেটরর্স অ্যাসোসিয়েশনের (এতোয়া) উদ্যোগে এক আলোচনা সভায় বনিস, ইভা’রা যোগ দিতে ওই কথা জানিয়ে যান।
এ মাসের ১৩ অক্টোবর থেকে তিনদিন কেন্দ্রীয় পর্যটন মন্ত্রকের উদ্যোগে উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলিকে নিয়ে মেঘালয়ের শিলং-এ ইন্টারন্যাশনাল ট্যুরজিম মার্ট হয়। এবার সেখানে যোগ দিয়েছিলেন ২১ দেশের পর্যটনের সঙ্গে জড়িত সংস্থার ৫০ জন প্রতিনিধি। পরবর্তীতে তাঁদেরই মধ্যে ৮ জনের একটি প্রতিনিধি দল রাজ্য পর্যটন দফতরের আমন্ত্রণে উত্তরবঙ্গ সফরে এসেছিলেন। মঙ্গলবার বাগডোগরা বিমানবন্দর হয়ে ফিরে যাওয়ার আগে দলটি আলোচনা সভাটিতে যোগ দেন। উপস্থিত ছিলেন রাজ্য পর্যটন দফতরের যুগ্ন অধিকর্তা (উত্তর) সুনীল অগ্রবালও।
সুনীলবাবু বলেন, “এই নিয়ে উত্তর পূর্বাঞ্চলে তিনবার ট্রাভেল মার্ট হল। আমরা সেখান থেকে প্রতিনিধিদের এই অঞ্চলে নিয়ে আসি। তাঁরা এলাকা ঘুরে দেখেন। পরবর্তীতে তা সরকারি এবং বেসরকারিস্তরে আন্তর্জাতিক পর্যটকদের এই অঞ্চলে আসার ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়।” তিনি জানান, গত ২০১২ সালে দার্জিলিঙের এই অঞ্চলে ২০ হাজারের মত বিদেশি পর্যটক এসেছিলেন। গতবছর তা প্রায় ৪০ হাজার দাঁড়ায়। এবার তা আরও বাড়তে চলছে। আর এতোয়ার কার্যকরী সভাপতি সম্রাট সান্যাল বলেন, “এই অঞ্চল সম্পর্কে বিদেশি পর্যটকদের আগ্রহ বাড়াতেই এদিনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। আমাদের আশা, এতে এলাকার পর্যটন সম্পর্কে দেশের বাইরে বার্তা পৌঁছাবে।”
এবার বিদেশি প্রতিনিধিদের দলটি গত শনিবার মেঘালয় থেকে অসম হয়ে জলদাপাড়া, টোটোপাড়া, কালিম্পং এবং দার্জিলিং ঘুরে এদিন শিলিগুড়িতে আসেন। দলটির প্রতিনিধিরা দার্জিলিঙের নাম শুনলেও কোনওদিনই এই অঞ্চলে আসেননি। ফ্রান্সের বনিস, রাশিয়ার ওলগে’রা বলেন, “আমরা রাজস্থান, কেরালা, কর্ণাটকের কথা জানতাম। কিন্তু কাঞ্চনজঙ্ঘায় ঘেরা এই অঞ্চল এত সুন্দর জানতাম না। জঙ্গল, বন্যপ্রাণ, পাহাড়, নদী-কী নেই এখানে। আমরা চেষ্টা করব, আগামীতে দিনে যত বেশি সম্ভব দেশের পর্যটকদের এখানে পাঠাতে।”
এদিনের অনুষ্ঠান শুরুতেই এতোয়ার সম্পাদক পার্থ গুহ প্রতিনিধি দলের সামনে এই অঞ্চলের নানা বৈশিষ্ট্যের কথা তুলে ধরেন।