সাংবাদিক বৈঠক। —নিজস্ব চিত্র।
শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের প্রকল্পে যে সমস্ত অনিয়ম যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞ দলের রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে সে মতো ব্যবস্থা নিতে কর্তৃপক্ষ উদ্যোগী হননি বলে অভিযোগ তুলেছেন প্রাক্তন পুরমন্ত্রী তথা সিপিএম নেতা অশোক ভট্টাচার্য। মঙ্গলবার দলীয় কার্যালয়ে সাংবাদিক বৈঠক করে তিনি জানান, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়কে দিয়ে রিপোর্ট তৈরি করানো হয়েছে বলে বর্তমান চেয়ারম্যান উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী অনেক সময়ই বলছেন। কিন্তু ওই রিপোর্টেই যে অনিয়মের কথা বলা হয়েছে সেই অনুযায়ী তদন্তের জন্য তাঁরা বলেননি। কিছু আধিকারিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানো হলেও এসজেডিএ-র তরফে প্রাক্তন সিইও গোদালা কিরণ কুমার বা বোর্ড সদস্যদের কারও নামে কোনও রকম অভিযোগ করা হয়নি। দফতরের কয়েক জন বাস্তুকার এবং ঠিকাদার সংস্থার নামে কয়েকটি অভিযোগ করেই তাঁরা দায় সেরেছেন।
উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, “উনি কী বলতে চান জানি না। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই পুলিশে অভিযোগ করা হয়েছিল। হাই কোর্টে মামলাও চলছে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের দল যে তদন্ত করেছে তার রিপোর্টও হাইকোর্টে পেশ করা হয়েছে।”
অশোকবাবুর অভিযোগ, এত বড় দুর্নীতির পিছনে কয়েক জন বাস্তুকার এবং ঠিকাদাররা কেবল যুক্ত নয়। বোর্ড সদস্যরা ছাড়া এটা সম্ভব নয়। তিনি বলেন, “টেন্ডার কমিটিতে প্রকল্পের কাজগুলি ঠিক হয়েছে। বোর্ডের সভায় সেই সমস্ত কাজের অনুমোদন করে টাকা মিটিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। টেন্ডার কমিটি বা নীতি নির্ধারকরা কেন তা খতিয়ে দেখেননি তা নিয়ে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের রিপোর্টে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ হয়নি।” অশোকবাবুর দাবি, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের রিপোর্টে উল্লেখ রয়েছে, জোড়াপানি নদী খাত সংস্কারে ১ হাজার কিউবিক মিটার মাটি কাটার কথা বলে বোর্ডের সভায় ১ লক্ষ কিউবিক মিটার মাটি কাটার টাকা অনুমোদন করা হয়েছে। কী ভাবে তা নজর এড়িয়েছে সেই প্রশ্ন রিপোর্টে রয়েছে। ১ জন সদস্য টেন্ডার কমিটি থেকে ইস্তফা দিলেও বাকিরা আছেন। তখনকার বোর্ড সদস্যরাও রয়েছেন।
গৌতমবাবুর পাল্টা আক্রমণ, যে সব বাস্তুকার ঠিকাদার অভিযুক্ত, তারা সিপিএম ঘনিষ্ঠ। ওই সমস্ত ঠিকাদারদের মাধ্যমে অশোকবাবু এবং তার দলের কাছে টাকা গিয়েছে। অশোকবাবু তার জবাব দিক বলে গৌতমবাবু তোপ দাগেন। অশোকবাবু বলেন, “এখন তারা বলছেন আমি নাকি অভিযুক্তদের বাঁচাতে চাইছি। এর পর হয়তো আমার বাড়িতেই পুলিশ পাঠাবেন।”