উল্টে গেল ট্রাক, চাপা পড়ে মৃত এক পরিবারের চার জন

রাজমিস্ত্রির কাজে যোগ দিতে যাওয়ার পথে উল্টে যাওয়া পাথর বোঝাই ট্রাকের নীচে চাপা পড়ে একই পরিবারের চার জনের মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার ভোর পাঁচটা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে করণদিঘি থানার বিহিনগর বাসস্ট্যান্ড এলাকার ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে। পুলিশ জানায়, মৃতদের নাম জেহেলি শেখ (৪৫), খাবির শেখ (২৫), মিজারুল শেখ (২০) ও হাবিল শেখ (২০)।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রায়গঞ্জ ও ইসলামপুর শেষ আপডেট: ২৪ মে ২০১৪ ০১:৫৩
Share:

রাজমিস্ত্রির কাজে যোগ দিতে যাওয়ার পথে উল্টে যাওয়া পাথর বোঝাই ট্রাকের নীচে চাপা পড়ে একই পরিবারের চার জনের মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার ভোর পাঁচটা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে করণদিঘি থানার বিহিনগর বাসস্ট্যান্ড এলাকার ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে। পুলিশ জানায়, মৃতদের নাম জেহেলি শেখ (৪৫), খাবির শেখ (২৫), মিজারুল শেখ (২০) ও হাবিল শেখ (২০)। তাঁদের বাড়ি মুর্শিদাবাদ জেলার সুতি থানার উমরাপুর এলাকায়। দুর্ঘটনায় শুলু শেখ ও জিয়াউল শেখ নামে মৃতদের আরও দুই আত্মীয় জখম হন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁদের উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। উত্তর দিনাজপুর জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ডেভিড ইভান লেপচা বলেন, “সম্ভবত ট্রাকটি দ্রুতগতিতেপাশ কাটাতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ছয় জনের উপর উল্টে যায়। জেলা হাসপাতালে ময়নাতদন্তের পরে দেহগুলি পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। ট্রাকের চালক ও খালাসির খোঁজ চলছে।”

Advertisement

পুলিশ সূত্রে খবর, শিলিগুড়িতে রাজমিস্ত্রির কাজে যোগ দিতে যাওয়ার জন্য বৃহস্পতিবার রাত ৮টা নাগাদ মুর্শিদাবাদের ধুলিয়ান বাস স্ট্যান্ড থেকে জেহেলি শেখ দুই ছেলে খাবির ও মিজারুল, ভাইপো হাবিল, খুড়তুতো ভাই শুলু ও তার ছেলে জিয়াউলকে নিয়ে শিলিগুড়িগামী একটি বেসরকারি বাসে ওঠেন। করণদিঘির পাতনোর এলাকায় তাঁদের এক আত্মীয়ের বাড়ি রয়েছে। সেখানে যাওয়ার জন্য ভোর সাড়ে চারটা নাগাদ সকলেই বিহিনগর এলাকায় বাস থেকে নামেন। সেই সময় ঠিকমতো ভোরের আলো ফোটেনি। পাতনোরগামী যাত্রিবাহী গাড়ি চালু না হওয়ায় তাঁরা ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে বিহিনগর বাস স্ট্যান্ডে বসে অপেক্ষা করছিলেন। সেই সময় মুর্শিদাবাদের পাকুড় থেকে শিলিগুড়িগামী একটি পাথর বোঝাই দশ চাকার ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার ধারে উল্টে যায়। ছয় জনই ট্রাকের নীচে চাপা পড়েন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ‘রিকভারি ভ্যানের’ সাহায্যে ট্রাকটিকে তোলে। ঘটনাস্থলেই চার জনের মৃত্যু হয়। জখম শুলু ও জিয়াউলকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় করণদিঘি ও রায়গঞ্জ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাঁদের উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন।

দুর্ঘটনার খবর পেয়ে উমরাপুর থেকে রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালে পৌঁছে কান্নায় ভেঙে পড়েন মৃত ও জখমদের পরিবারের লোকজনেরা। জেহেলি শেখের ভাইপো পেশায় ঠিকাদার মহম্মদ বারিক হক হাসপাতালে কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি বলেন, “কাকার স্ত্রী ছাড়াও বাড়িতে আরও এক ছেলে রয়েছে। খাবিরের স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। মিজারুলের স্ত্রী ও একমাস বয়সী এক ছেলে রয়েছে। হাবিল অবিবাহিত হলেও তাঁর বাবা ও মা রয়েছে। ওদের কী হবে! কাজের জন্য সকলে শিলিগুড়ি যাচ্ছিলেন। রাস্তায় আত্মীয়ের বাড়িতে যাওয়ার জন্য না নামলে হয়তো এমন অঘটন ঘটত না।” রাজ্যের পরিষদীয় সচিব অমল আচার্য জানান, রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী মদন মিত্রকে দুর্ঘটনার খবর জানানো হয়েছে। মৃতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া যায় কি না তা দেখা হচ্ছে।

Advertisement

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন