একই বাজারে আলুর নানা দর

শহরের বিভিন্ন বাজারে বিভিন্ন সময়ে আলুর দামের হেরফের হওয়ার অভিযোগ তো ছিলই, শুক্রবার শিলিগুড়ির একই বাজারে আলু কিনতে গিয়ে একেক রকম দাম দিতে হয়েছে বলে ক্রেতাদের দাবি। বিধান মার্কেটের গায়ে লাগানো দু’টি দোকানেও খুচরো বিক্রেতারা আলুর বিভিন্ন দাম দাবি করেছে বলে অভিযোগ। আলুর দাম নিয়ন্ত্রণ করতে মহকুমা প্রশাসনের তরফে তিন দিন আগেই অভিযান চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু কোনও পদক্ষেপ হয়নি বলে অভিযোগ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৫ নভেম্বর ২০১৪ ০২:৩৮
Share:

শহরের বিভিন্ন বাজারে বিভিন্ন সময়ে আলুর দামের হেরফের হওয়ার অভিযোগ তো ছিলই, শুক্রবার শিলিগুড়ির একই বাজারে আলু কিনতে গিয়ে একেক রকম দাম দিতে হয়েছে বলে ক্রেতাদের দাবি। বিধান মার্কেটের গায়ে লাগানো দু’টি দোকানেও খুচরো বিক্রেতারা আলুর বিভিন্ন দাম দাবি করেছে বলে অভিযোগ। আলুর দাম নিয়ন্ত্রণ করতে মহকুমা প্রশাসনের তরফে তিন দিন আগেই অভিযান চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু কোনও পদক্ষেপ হয়নি বলে অভিযোগ।

Advertisement

গত বছর থেকেই ন্যায্য দামে ক্রেতাদের কাছে আলু পৌঁছে দিতে একাধিক বিধিনিষেধ জারি করেছে সরকার। সেই নির্দেশে পাইকারি বাজারে আলুর কত দাম হবে এবং সেই দামে কিনে পরিবহণ সংক্রান্ত অনান্য খরচ যোগ করে খুচরো বাজারে সর্বোচ্চ কত দামে আলু বিক্রি করা যাবে তা নির্দিষ্ট করে দিয়েছে সরকার। পাইকারি বাজার থেকে কত দামে আলু কেনা হচ্ছে, তার নথিও খুচরো বিক্রেতাদের কাছে রাখার নির্দেশও দেওয়া হয়েছিল। নির্দেশ থাকলেও, প্রশাসনের নজরদারির অভাবে শিলিগুড়ির বিভিন্ন বাজারে ইচ্ছেমতো আলুর দাম বাড়িয়ে নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। বৃহস্পতি এবং শুক্রবার, দু’দিন সকালেই বিধান মার্কেটের ব্যবসায়ীদের একাংশ ২৮ টাকা কেজি দরে জ্যোতি আলু বিক্রি করেছে বলে অভিযোগ। যা কিনা সরকারি নির্ধারিত দরের দ্বিগুণ। এ দিন কিছুটা বেলায় বাজারে গিয়ে দেখা যায় বাইরের দিকের দোকানে আলু বিক্রি হয়েছে ২৫ টাকা এমনকী ২৪ টাকাতেও। বাজারের ভিতরে যে দোকানে ২৭ টাকা কেজি দরে আলুর দাম চাওয়া হয়েছে, তার পাশের দোকানেই ক্রেতারা ২৫ টাকা দরে আলু পেয়েছেন। একই ঘটনা দেখা গিয়েছে ক্ষুদিরাম পল্লির বাজারেও। সেখানেও পাশাপাশি দোকানেই আলুর জন্য একেক দাম চাওয়া হয়েছে বলে ক্রেতাদের অভিযোগ।

যদিও, ব্যবসায়ীদের একাংশই দাবি করেছেন, পাইকারি বাজার থেকে খুচরো বাজারে আনার জন্য পরিবহণ খরচ সকলেরই একই হওয়ার কথা। যদিও, ক্রেতাদের অভিযোগ, আলুর দাম বাড়ার সুযোগ নিয়ে একাংশ ব্যবসায়ী অতিরিক্ত মুনাফা করার জন্য ইচ্ছেমতো দাম চাইছেন। দার্জিলিঙের জেলাশাসক পুনীত যাদব বলেন, “বিষয়টি আমাকে জানানো হয়নি। কোন বাজারে কত দরে আলু বিক্রি হচ্ছে এবং কেন হচ্ছে তা জানতে চাইব। আগমী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পদক্ষেপ করা হবে।”

Advertisement

শুক্রবার কুইন্টাল প্রতি ৪০ টাকা দাম কমেছে বলে জানা গিয়েছে। সে হিসেবে কেজি প্রতিও কিছুটা হলে দাম কমার কথা। তবে খুচরো বাজারে তার কোনও প্রভাবই দেখা যায়নি বলে অভিযোগ। পাইকারি বাজার থেকে এক দামে কেনা আলু খুচরো বাজারে বেশি দরে বিক্রির কারণ ব্যাখ্যা করতে পারেননি পাইকারি ব্যবসায়ীরাও। শিলিগুড়ি নিয়ন্ত্রিত বাজারে আলু ও সব্জি ব্যবসায়ী সমিতির নির্বাহী সদস্য তপন কুমার সাহা বলেন, “পাইকারি বাজার থেকে বিক্রি হওয়া আলুর দাম এবং গুণগত মান একই। সেই আলু খুচরো বাজারে গিয়ে কেন বিভিন্ন রকমের দাম নেওয়া হচ্ছে তা প্রশাসনের আধিকারিকরা বলতে পারবেন।”

বিধান মার্কেটের ভিতরে খুচরো বিক্রেতা জিতেন প্রসাদ বলেন, “পাইকারি বাজার থেকে কেনার পরে নষ্ট আলু বেছে ফেলে দিতে হয়, তার একটা খরচ রয়েছে। বাজারে নিয়ে আসারও আলাদা খরচ রয়েছে। পাইকারি দরে ২১-২২ টাকায় আলু কিনতে হয়েছে। তারপরে সব খরচ ধরে ২৫-২৬ টাকা দরে আলু বিক্রি করছি।” পাশের ব্যবসায়ী দুলাল দাস ২৩ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি করেছেন। তাঁর কথায়, “কিছু লাভ তো রাখতেই হয়, এর থেকে কমে আলু বিক্রি করা সম্ভব নয়।” আরেক ব্যবসায়ী সঞ্জীব সাহা দাবি করেছেন, তিনি দিনভরই ২৪ টাকা দরে আলু বিক্রি করেছেন।

ক্রেতাদের অভিযোগ, নিয়মিত অভিযান চললে এই প্রবণতা রোখা যেত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন