কাউন্সিলরদের নিয়ে বৈঠকে মন্ত্রী

মন্ত্রিপুত্রের নিয়োগ নিয়ে বিতর্কের মধ্যেই পুরসভার কাউন্সিলরদের সঙ্গে বৈঠকে বসলেন মন্ত্রী নিজেই। এ মাসে তৃণমূল পরিচালিত বালুরঘাট পুরসভার চেয়ারম্যান মন্ত্রী তথা বালুরঘাটের বিধায়ক শঙ্কর চক্রবর্তীর ছেলেকে পুরসভার আইনজীবী নিয়োগ করার কথা ঘোষণা করেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বালুরঘাট শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০১৪ ০১:৫১
Share:

মন্ত্রীর বাড়ি থেকে বৈঠক সেরে বেরিয়ে আসছেন চেয়ারপার্সন-সহ কাউন্সিলরেরা। রবিবার রায়গেঞ্জে তোলা নিজস্ব চিত্র।

মন্ত্রিপুত্রের নিয়োগ নিয়ে বিতর্কের মধ্যেই পুরসভার কাউন্সিলরদের সঙ্গে বৈঠকে বসলেন মন্ত্রী নিজেই। এ মাসে তৃণমূল পরিচালিত বালুরঘাট পুরসভার চেয়ারম্যান মন্ত্রী তথা বালুরঘাটের বিধায়ক শঙ্কর চক্রবর্তীর ছেলেকে পুরসভার আইনজীবী নিয়োগ করার কথা ঘোষণা করেন। একতরফা ভাবে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে অভিযোগ করে দলের ১১ কাউন্সিলর পুর প্রধানের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ তুলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়কে চিঠি পাঠান। তার পরে রবিবার সকালে দলের কাউন্সিলরদের কংগ্রেস পাড়ার নিজের বাড়িতে ডেকে পাঠান মন্ত্রী। বৈঠকে দলের ১৪ জনের মধ্যে প্রধান সহ ১০ কাউন্সিলর উপস্থিত ছিলেন। ঘণ্টাখানেক বৈঠক চলে। বৈঠকের পরে মন্ত্রী থেকে কাউন্সিলর সকলেই দাবি করেছেন, পুর এলাকার উন্নয়ন নিয়েই শুধু আলোচনা হয়েছে।

Advertisement

যদিও, তৃণমূল সূত্রের খবর, ছেলে ঋতব্রতকে নিয়োগ নিয়ে তৈরি বির্তকে ঘরে বাইরে চাপের মুখে পড়েই মন্ত্রী পরিস্থিতি সামাল দিতে চেষ্টা করছেন। শনিবার সাংবাদিক বৈঠকে সরাসরি বিদ্রোহ ঘোষণা করা তিন তৃণমূল কাউন্সিলর শঙ্কর দত্ত, পিন্টু হালদার এবং ব্রতময় সরকার এ দিনের বৈঠকে মন্ত্রীর বাড়িতে যাননি। বৈঠকের পরে শঙ্করবাবু বলেন, “এদিন পুর উন্নয়ন নিয়ে বৈঠক হয়েছে। সকলকে একত্রিত হয়ে উন্নয়নের কাজ করতে বলা হয়।”

তাঁর ছেলেকে নিয়ে যে বিতর্ক উঠেছে, সেই প্রসঙ্গে মন্ত্রীর বক্তব্য, “আমি দলের সাংগঠনিক দিক দেখি না।” মন্ত্রী তাত্‌পর্যপূর্ণ ভাবে বলেন, “পুরসভায় দলের সমস্ত কাউন্সিলার পদ পাবেন, সেটা সম্ভব নয়।” দলীয় সূত্রের খবর, যে তিন কাউন্সিলর গত শনিবার প্রকাশ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তাঁরা কেউ মন্ত্রী ঘনিষ্ট নন। সে কারণে তাঁদের চেয়ারম্যান পরিষদের সদস্য করা হয়নি বলে অভিযোগ। ‘সব কাউন্সিলরের পদ পাওয়া সম্ভব নয়’ বলে তাঁদেরই মন্ত্রী বার্তা দিতে চাইলেন বলে দলে অনেকে মনে করছেন।

Advertisement

মন্ত্রীর বৈঠকের পরে কাউন্সিলররা প্রকাশ্যে ঐক্যের ছবি তুলে ধরতে তত্‌পর ছিলেন। চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অভিযোগ পত্রে পুরসভায় তৃণমূলের দলনেতা ভাইস চেয়ারম্যান রাজেন শীলও সই করেছিলেন। এ দিন বৈঠক সেরে পুরপ্রধান চয়নিকা লাহার পাশে বসে রাজেনবাবু বলেছেন, “নিজেদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি দূর করে শঙ্করবাবু আমাদের পুর উন্নয়নের কাজে জোর দিতে বলেছেন।” তাঁর কথায়, “আইনজীবী নিয়োগ প্রসঙ্গে মন্ত্রী বৈঠকে কিছু বলেননি। কাউকে না জানিয়ে চেয়ারপার্সন আইনজীবী নিয়োগ করায় প্রতিবাদ হয়েছে। ভুল বোঝাবুঝি মিটিয়ে ফেলা হবে।” বিদ্রোহী ওই তিন কাউন্সিলার ব্রতময়, শঙ্কর ও পিন্টু সাংবাদিকদের বলেন, “আইনজীবী নিয়োগ বাতিল করতে হবে। ওই দাবি থেকে আমরা সরছি না।” দলের জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্রও এ প্রসঙ্গে মন্তব্য করতে চাননি। মন্ত্রিপুত্রকে পুরসভার আইনজীবী হিসাবে নিয়োগের প্রসঙ্গ তুলে এ দিন পথসভা করেছে বিজেপি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন