রাজ্য জুড়ে নারী নির্যাতন বেড়ে চলার অভিযোগ সহ সারদা কাণ্ড নিয়ে কংগ্রেসের অবস্থান-অবরোধ কর্মসূচিতে মঙ্গলবার দুপুরে বেশ কিছুক্ষণ স্বাভবিক জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে উত্তরের ৭ জেলাতেই। রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ এবং দাবি তুলে রাজ্যজুড়েই এ দিন কংগ্রেসের অবস্থান-অবরোধ কর্মসূচি ছিল। এ দিন সকাল সাড়ে ১১টা থেকে ঘণ্টাখানেক রায়গঞ্জের শিলিগুড়ি মোড় এলাকায় ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে রাখেন কংগ্রেস কর্মীরা। একই দাবিতে জেলার ইটাহার, হেমতাবাদ, কালিয়াগঞ্জ, করণদিঘি, ইসলামপুর, চোপড়া, গোয়ালপোখর-১ ও ২ ব্লকের বিভিন্ন এলাকার রাজ্য ও জাতীয় সড়ক অবরোধ করেও বিক্ষোভ চলায় জেলা জুড়েই যানজট ছড়িয়ে পড়ে। ব্যস্ত সময়ে অবরোধের জেরে দুর্ভোগে পড়েন নিত্যযাত্রীরা।
একই সময়ে বিক্ষোভ হয় মালদহেও। দুপুর ১২টা থেকে অবরোধ শুরু হয় জেলার বিভিন্ন এলাকায়। ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের বিভিন্ন অংশে অবরোধ চলতে থাকে। ইংরেজবাজারের রথবাড়ি মোড়, কালিয়াচকের চৌরঙ্গি মোড়ে অবরোধে দু’পাশে যাত্রী এবং পণ্যবাহী গাড়ির লম্বা লাইন দাঁড়িয়ে পড়ে। অবরোধে যাত্রী দুর্ভোগের কারণে ক্ষমা চেয়ে নিয়েছেন উত্তর দিনাজপুর জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক পবিত্র চন্দ। তিনি বলেন, “সাধারণ মানুষের স্বার্থেই ওই আন্দোলন হয়েছে। অবরোধের জেরে যাঁরা সমস্যায় পড়েন, তাঁদের কাছে আমরা ক্ষমাপ্রার্থী।” অন্যদিকে, মালদহ জেলা কংগ্রেসের সাধারন সম্পাদক নরেন্দ্র নাথ তিওয়ারি বলেন, “সাধারণ বাসিন্দাদের কথা ভেবে ঘন্টাখানের মধ্যে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়।”
কংগ্রেসের বিক্ষোভ কর্মসূচি হয়েছে ডুয়ার্সেও। মালবাজারের কর্মসূচিতে সন্ত্রাস এবং পুলিশের নিষ্ক্রয়তার অভিযোগও তোলা হয়। মালবাজার ব্লক এবং শহর কংগ্রেসের উদ্যোগে শহরের সুভাষ মোড়ে ৩১নম্বর জাতীয় সড়কে পথ অবরোধ করা হয়। অবরোধ শুরুর মিনিট পাঁচেকের মধ্যেই শহর কংগ্রেস সভাপতি মিঠু মুখোপাধ্যায় সহ ৯জন কংগ্রেস কর্মীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাঁদের প্রায় ৪ ঘণ্টা থানায় আটকে রেখে, জামিন দিতে টালবাহানা করা হয় বলে অভিযোগ। নাগরাকাটার কংগ্রেস বিধায়ক যোসেফ মুণ্ডা থানায় গিয়ে ক্ষোভ জানান। দুপুর তিনটে নাগাদ থানা থেকে ধৃতদের ছেড়ে দেওয়া হয়। শহর কংগ্রেস সভাপতি মিঠু মুখোপাধ্যায় অভিযোগ করে বলেন, “সামনেই মালবাজারের পুর ভোট হবে। সে কারণেই ভয় দেখাতে তৃণমূল পুলিশ দিয়ে কংগ্রেস কর্মীদের হয়রান করছে। এর বিরুদ্ধেও লাগাতার আন্দোলন হবে।” তবে মালবাজারের এসডিপিও নিমা ভুটিয়া বলেন, “যা করা হয়েছে, আইন মেনেই হয়েছে।”
শিলিগুড়ির হাসমিচক, জলপাইগুড়ির গোশালা মোড়েও এ দিন অবরোধ করেন কংগ্রেস কর্মীরা। শিলিগুড়ির হাসমিচকে অবস্থান-অবরোধে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন জেলা কংগ্রেস সভাপতি শঙ্কর মালাকার।