কীটনাশক দিয়ে মাছ ধরা রুখতে পুরস্কার ঘোষণা মৎস্য দফতরের

মাইকে প্রচার, লিফলেট বিলি, শিবির ও আলোচনাসভা করে লাভ হয়নি বিশেষ। কম পরিশ্রমে বেশি মাছ ধরার লোভে রাশ টানা যায়নি। কয়েক সপ্তাহ আগেও কোচবিহার ২ ব্লকের ঢাংঢিংগুড়ি লাগোয়া এলাকায় তোর্সার প্রায় এক কিমি এলাকা জুড়ে কীটনাশক ঢেলে প্রচুর মাছ ধরার খবরে উদ্বিগ্ন মৎস্য দফতর। মাথাভাঙার মানসাই, তুফানগঞ্জে রায়ডাক, দিনহাটার ধরলা, মেখলিগঞ্জে তিস্তা নদীতেও বিক্ষিপ্ত ভাবে কীটনাশকে মাছ ধরার খবর পৌঁছেছে দফতরের কর্তাদের কাছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ২৯ জুলাই ২০১৪ ০২:২০
Share:

মাইকে প্রচার, লিফলেট বিলি, শিবির ও আলোচনাসভা করে লাভ হয়নি বিশেষ। কম পরিশ্রমে বেশি মাছ ধরার লোভে রাশ টানা যায়নি। কয়েক সপ্তাহ আগেও কোচবিহার ২ ব্লকের ঢাংঢিংগুড়ি লাগোয়া এলাকায় তোর্সার প্রায় এক কিমি এলাকা জুড়ে কীটনাশক ঢেলে প্রচুর মাছ ধরার খবরে উদ্বিগ্ন মৎস্য দফতর। মাথাভাঙার মানসাই, তুফানগঞ্জে রায়ডাক, দিনহাটার ধরলা, মেখলিগঞ্জে তিস্তা নদীতেও বিক্ষিপ্ত ভাবে কীটনাশকে মাছ ধরার খবর পৌঁছেছে দফতরের কর্তাদের কাছে।

Advertisement

সাধারণত কীটনাশক প্রয়োগের জলে অক্সিজেনের মাত্রা কমে যাওয়ায় একসঙ্গে ভেসে ওঠে অনেক মাছ। তখনই চলে অবাধ শিকার। পরিস্থিতি এতটাই ঘোরালো যে এ বার বর্ষার মরসুমে কোচবিহারের নদীগুলিতে কীটনাশক ঢেলে মাছ শিকার বন্ধ করতে আর্থিক পুরস্কার ঘোষণা করল জেলা মৎস্য দফতর। প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে, কীটনাশক ঢেলে মাছ ধরার প্রস্তুতি সংক্রান্ত আগাম খবর দিলে অথবা মাছ শিকারিদের ব্যাপারে দফতরে জানালে তথ্য যাচাই করে পুরস্কার দেওয়া হবে। পুরস্কারের আর্থিক মূল্য আপাতত পাঁচ হাজার টাকা। জেলা মৎস্য দফতরের সহ-অধিকর্তা অলোকনাথ প্রহরাজ বলেন, “নদী বা জলাশয়ে কীটনাশক ব্যবহার করে মাছ ধরা বেআইনি। তার ওপর বর্ষায় কীটনাশক প্রয়োগের প্রবণতায় নদীয়ালি মাছের অস্তিত্ব সঙ্কটে। বিভিন্ন প্রজাতির মাছের মধ্যে ৯০ শতাংশেরই প্রজনন ঋতু বর্ষা। এ সব রুখতে এ বার নগদ পুরস্কার চালু করা হচ্ছে।”

কোচবিহারের ছোটবড় মিলিয়ে নদীর সংখ্যা অন্তত ২৫টি। উত্তরবঙ্গের বোরোলি মাছের খ্যাতি গোটা রাজ্যজুড়ে। এছাড়াও বিভিন্ন নদীতে সরপুঁটি, ট্যাংরা, পাবদা, বোয়াল, রুই, বাটা, কাতলা, ট্যাংরা, চিংড়ি সহ অন্তত ৮৭ প্রজাতির মাছ রয়েছে। এর মধ্যে ২৬ প্রজাতির মাছ বেশি পাওয়া যায় বর্ষার মরসুমেই। প্রতি বছর জুন মাস এলেই নদীতে কীটনাশক ঢেলে, মশারি জাল ও ব্যাটারি চালিত বিদ্যুৎ ব্যবহার করে মাছ ধরার প্রবণতা বাড়তে থাকে। মাছেদের ডিম নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় মৎস্যজীবীদের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানোর নানান কর্মসূচি নেয় মৎস্য দফতর। এ বারও জেলার বিভিন্ন এলাকায় কীটনাশক ঢেলে মাছ ধরার অভিযোগ পেতেই নড়েচড়ে বসেছেন দফতরের কর্তারা। পুরস্কারের ঘোষণায় যে ওই প্রবণতা বন্ধ হবে তা নিয়ে নিশ্চিত নন পরিবেশপ্রেমীরা। ন্যাস-এর সম্পাদক অরূপ গুহ বলেন, “জাল দিয়ে মাছ ধরার চাইতে কম পরিশ্রমে বেশি মাছের লোভে কীটনাশক সহ বিভিন্ন বেআইনি পদ্ধতি প্রয়োগের প্রবণতা বেড়েছে। পুরস্কার দিলে সমস্যার স্থায়ী সমাধান হবে বলে মনে হয় না। মৎস্য দফতরকে এই ব্যাপারে আরও উদ্যোগী হতে হবে।”

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন