ক্যামেরা বন্ধ, এটিএমের ‘ফুটেজ’ দিতে ব্যর্থ ব্যাঙ্ক

পুলিশকে সিসিটিভি ফুটেজ দিতে পারলেন না ময়নাগুড়ি স্টেট ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। রক্ষীহীন এটিএম কাউন্টার এলাকা থেকে উদ্ধার করা এক জখম ব্যক্তিকে ঘিরে বৃহস্পতিবার হইচই হয়। পুলিশ সূত্রের খবর, ফুটেজ সংগ্রহ করতে গিয়ে ব্যাঙ্ক কর্তাদের মাথায় হাত পড়ে। তাঁরা জানতে পারেন, গত ৩ মার্চ থেকে কাউন্টারের সিসিটিভি’র ক্যামেরা অকেজো হয়ে আছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ০৮ মার্চ ২০১৪ ০১:২৯
Share:

পুলিশকে সিসিটিভি ফুটেজ দিতে পারলেন না ময়নাগুড়ি স্টেট ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। রক্ষীহীন এটিএম কাউন্টার এলাকা থেকে উদ্ধার করা এক জখম ব্যক্তিকে ঘিরে বৃহস্পতিবার হইচই হয়। পুলিশ সূত্রের খবর, ফুটেজ সংগ্রহ করতে গিয়ে ব্যাঙ্ক কর্তাদের মাথায় হাত পড়ে। তাঁরা জানতে পারেন, গত ৩ মার্চ থেকে কাউন্টারের সিসিটিভি’র ক্যামেরা অকেজো হয়ে আছে। এতে একদিকে যেমন পুলিশ কর্তারা বিপাকে পড়েছেন, তেমনই এটিএমগুলিতে গ্রাহক নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

Advertisement

স্টেট ব্যাঙ্কের ময়নাগুড়ি শাখার ম্যানেজার জয়ন্তনাথ সাহা বলেন, “এটিএম কাউণ্টারগুলিতে যে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো রয়েছে, সেটিও দেখভাল করার দায়িত্ব একটি এজেন্সির। ওরা ২ মার্চ পর্যন্ত যাবতীয় ফুটেজ দিয়েছে। এর পরের ফুটেজ দিতে পারেনি। ক্যামেরা পরীক্ষা করে জানিয়েছে, তারের সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় ৩ মার্চ থেকে ক্যামেরা কাজ করেনি। ওই কারণে বৃহস্পতিবারের ফুটেজ পাওয়া যাচ্ছে না।”

ঘটনাটি জানার পরে পুলিশ কর্তারা কার্যত অবাক। তাঁদের অনেকেরই প্রশ্ন, “গ্রাহকদের নিরাপত্তার জন্য এটিএম কাউন্টারগুলিতে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো থাকে। অথচ ৩ মার্চ থেকে ক্যামেরা অকেজো হয়ে থাকলেও কেন ব্যাঙ্ক কর্তারা জানতে পারলেন না, সেটাই অবাক লাগছে। পুরোটাই উদাসীনতার নজির। জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, “যে ব্যক্তি জখম হয়েছেন। তিনি ময়নাগুড়ির বাইরের ভোরে কেন এটিএম কাউণ্টারে গেলেন তা নিয়ে প্রশ্ন আছে। শুধু তাই নয়, তিনি কী স্থানীয় দুষ্কৃতীদের হামলায় জখম হন নাকি অন্য কোনওভাবে জখম হয়েছেন, সেটাও সিসি টিভি ফুটেজ থেকে স্পষ্ট হত। এখন জখম ব্যক্তির বক্তব্যের উপরে ভরসা করতে হবে।” জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার কুনাল অগ্রবাল বলেন, “সুস্থ হলে জখম ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলা হবে। তাঁর পরিবারের লোকজনকে ডাকা হয়েছে। তদন্ত চলছে। ঘটনার পিছনে পারিবারিক কোনও সমস্যা রয়েছে কি না তাও দেখা হচ্ছে।”

Advertisement

জখম মঙ্গলচাঁদ মণ্ডলকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। পুলিশ জানিয়েছে, বর্তমানে তিনি সুস্থ আছেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ছুটি দেওয়ার পরে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। পুলিশ সূত্রের খবর, জখম ব্যক্তির বাড়ির লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগের পরে তাঁরা বৃহস্পতিবার বিকেলের পরে ময়নাগুড়ি থানায় আসেন। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে না গিয়ে ফিরে চলে যান। এতে ঘটনার পর পারিবারিক কোনও বিবাদ ঘটনার রয়েছে কি না সেটা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। গত বৃহস্পতিবার ময়নাগুড়ি বাস টার্মিনাসে স্টেট ব্যাঙ্কের এটিএম কাউণ্টারের পাশে কোচবিহার জেলার মাথাভাঙার জোরপাটকি এলাকার বাসিন্দা ৫৪ বছর বয়সের মঙ্গলচাঁদ মণ্ডল নামে এক ব্যক্তিকে জখম অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। এটিএম কাউণ্টারের কাঁচের গেট ভাঙা এবং মেঝে রক্ত মাখা ছিল। ঘটনার পরে এই এলাকার বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, কয়েকবার বলার পরেও ব্যাঙ্ক কর্তারা এটিএম কাউণ্টারে নিরাপত্তা রক্ষীর ব্যবস্থা করেনি। ব্যাঙ্ক কর্তারা জানিয়েছেন, কাউণ্টারগুলিতে নিরাপত্তা রক্ষী রাখার দায়িত্ব একটি বেসরকারি এজেন্সিকে দেওয়া আছে, কেন ওঁরা সেখানে রক্ষী দেয়নি সেটা এজেন্সির কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে। কিন্তু সিসিটিভির ক্যামেরা বিকল হয়ে থাকার ঘটনা সামনে উঠে আসার পরে এ বার ব্যাঙ্ক কর্তাদের বিরুদ্ধে এটিএম কাউন্টারগুলির নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে উদাসীনতার অভিযোগ তুলেছেন এই এলাকার বাসিন্দারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন