ফের কলেজ রাজনীতিতে টিএমসিপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে।
এ বারে কোচবিহার পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান বীরেন কুন্ডুর ছেলে যুব তৃণমূলের জেলা সভাপতি শুভজিত্ কুণ্ডুুর গোষ্ঠীর সঙ্গে অভিজিত্ দে ভৌমিকের গোষ্ঠীর বিরোধ চরম আকার নিয়েছে। যে কোনও সময় দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করছে তৃণমূল নেতৃত্ব। প্রতিদিনই দুই পক্ষ বিভিন্ন জায়গায় জমায়েত করছেন বলে অভিযোগ।
সোমবার অভিজিত্বাবুর গোষ্ঠীর তরফে শহরে মিছিল করে জেলাশাসককে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। তারা বিটি অ্যান্ড ইভিনিং কলেজ চত্বরের দুশো মিটারের মধ্যে ১৪৪ ধারা জারির দাবি করে রাস্তায় নেমেছেন। তাঁদের অভিযোগ, যে কোনও সময় বহিরাগত দুষ্কৃতীরা কলেজে হামলা করতে পারে। তৃণমূলের যুব সভাপতি শুভজিত্বাবু বহিরাগতদের মদত দিচ্ছেন বলেও অভিযোগ করেন তাঁরা। তবে তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ অবশ্য বরাবরই শুভজিত্বাবুর পক্ষে রয়েছেন। তিনি বলেন, “গোষ্ঠী রাজনীতির কিছু নেই। পড়ুয়ারা আমাদের সঙ্গেই আছেন। যারা বাইরে আছেন, তাঁরাও মূলস্রোতে ফিরছেন।” দলের কোচবিহার জেলার-সহ সভাপতি আব্দুল জলিল আহমেদ বিষয়টি নিয়ে কিছু বলতে চাননি।
দলীয় সূত্রের খবর, কোচবিহার শহরের কলেজ রাজনীতিতে বরাবর অভিজিত্ দে ভৌমিক গোষ্ঠীর দাপট রয়েছে। কোচবিহার কলেজ, বিটি অ্যান্ড ইভিনিং কলেজ এবিএনশীল কলেজে অভিজিত্বাবুর গোষ্ঠী শক্তিশালী। কংগ্রেসে থাকার সময়ই অভিজিত্বাবু কলেজের ছাত্র সংসদ নিজের অনুগামীদের কব্জায় রেখেছেন। তৃণমুলের ছাত্র সংগঠন তো বটেই, বাম আমলে এসএফআই ওই কলেজগুলিতে সুবিধে করতে পারেনি। তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর ওই তিন কলেজের ছাত্র রাজনীতি নিজেদের কব্জায় আনার চেষ্টা করে ব্যার্থ হয়েছে।
চলতি বছরের প্রথম দিকে কংগ্রেস ছেড়ে কোচবিহার পুরসভার প্রাক্তন বীরেন কুণ্ডু তৃণমূলে যোগ দেন। তিনি সেই সময় বিশাল মিছিল নিয়ে গিয়ে বিটি কলেজে তৃণমূলের ছাত্র সংগঠনের দখলে আনার চেষ্টা করেন। সে সময় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। বিপাকে পড়ে অভিজিত্বাবু সদলবলে তৃণমূলে যোগ দেন। কিন্তু তিনি তৃণমূল সভাপতি রবীন্দ্রনাথবাবুর ঘনিষ্ঠ ছিলেন না। তাঁর সঙ্গে তৃণমূলের দলের সহ সভাপতি আব্দুল জলিল আহমেদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে বলে দল সূত্রের দাবি। সম্প্রতি বীরেনবাবুর ছেলে শুভজিত্ তৃণমূলের যুব নেতার দায়িত্ব নেন। ওই দায়িত্ব হাতে পাওয়ার পর তিনি সংগঠন মজবুত করতে আসরে নামেন।
কয়েকদিন আগে বিটি অ্যান্ড ইভিনিং কলেজে ছাত্র সংসদের সম্পাদকের বিরুদ্ধে অনাস্থা জানিয়ে অধ্যক্ষকে স্মারকলিপি দেন। সংসদের কয়েকজন সদস্য টিএমসিপি সূত্রের খবর, ওই কলেজের ছাত্র সংসদের সম্পাদক অভিজিত্বাবুর ঘনিষ্ঠ। শুভজিত্বাবু অবশ্য বলেন, “আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করে কিছু মিথ্যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে। আমি ছাত্র রাজনীতি করি না। যুব সংগঠনের দায়িত্ব পেয়েছি। দলের নির্দেশে তা শক্তিশালী করছি।” অভিজিত্বাবু বিষয়টি নিয়ে কিছু বলতে চাননি। তাঁর ঘনিষ্ঠ ছাত্র নেতা বিটি কলেজের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক টুইঙ্কল মোহন্ত বলেন, “শুভজিত্বাবুর ছেলেরা বাইরে থেকে গিয়ে কলেজে গণ্ডগোল করার চেষ্টা করছে। তাই ১৪৪ ধারা জারির দাবি করছি।”