খুনে অভিযুক্ত ফরিদুল ইসলামকে জিপে তুলছে পুলিশ।
খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত এক যুবককে গনপিটুনির হাত থেকে উদ্ধার করতে গিয়ে বাসিন্দাদের হামলার মুখে পড়ল পুলিশ। দু’টি পুলিশের গাড়ির কাঁচ ভাঙচুর হয়েছে, পুলিশকে লক্ষ্য করে ঢিল ছোঁড়া হয়েছে বলেও অভিযোগ। ঘটনায় ৫ পুলিশ কর্মী জখম হয়েছেন বলে দাবি করা হয়েছে। তাঁদের অবশ্য প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে ডুয়ার্সের মাদারিহাট থানা এলাকার শিশুবাড়ি গ্রামে। খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত জখম ওই যুবককে বীরপাড়া হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। আলিপুরদুয়ারের পুলিশ সুপার অনুপ জায়সবাল বলেন, “নতুন করে উত্তেজনা যাতে না ছড়ায় সে জন্য ওই গ্রামে পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে। পুলিশের গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় অভিযুক্তদের চিহ্নিত করে গ্রেফতার করা হবে।”
গত বুধবার রাতে ছটপুজোর মেলা দেখে বাড়ি ফেরার পথে শিশুবাড়ির বাসিন্দা এক দিনমজুরকে কুপিয়ে খুনের অভিযোগ ওঠে। পুলিশ জানিয়েছে নিহতের নাম মহম্মদ মানিক (২৪)। গ্রামের পাশে রেললাইনের ধারে ইকতি নদীর পাশে রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে পড়ে থাকতে দেখেন কয়েকজন বাসিন্দা। তাঁদের দাবি, মানিকের তখনও সংজ্ঞা ছিল। তাঁকে প্রথমে বীরপাড়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় পরে জলপাইগুড়িতে পাঠানো হয়। বুধবার গভীর রাতে তাঁর মৃত্য হয়। তবে বাসিন্দারা দাবি করেছেন, মৃতুুর আগে মানিক ফরিদুল ইসলাম তাঁকে অস্ত্র দিয়ে মাথায় আঘাত করেছে বলে অভিযোগ করেছিলেন। বৃহস্পতিবার সকালে মানিকের মৃত্যুর খবর গ্রামে পৌঁছনর পর ফরিদুলের খোঁজে বেশ কিছু গ্রামবাসী বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি চালান। সে সময় একটি বাড়িতে চড়াও হয়ে ফরিদুলকে বের করে গণপিটুনি শুরু হয় বলে জানা গিয়েছে। একটি গাছের সঙ্গে বেঁধে তাঁকে পুড়িয়ে মারার হুমকিও দিতে শোনা যায় অনেককে। খবর পেয়ে বীরপাড়ার সার্কেল ইনস্পেক্টর সহ মাদারিহাটের ওসি দু’টি জিপে চেপে পুলিশ বাহিনী পৌঁছলে পুলিশের উপর মারমুখি হয়ে ওঠে জনতা।
অভিযুক্ত যুবককে ক্ষুব্ধ জনতার হাত থেকে উদ্ধার করার চেষ্টা করলে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি শুরু হয় বলে অভিযোগ। তবে জনতার হাত থেকে কোনমতে ওই জখম যুবককে জিপে তোলার পর বাসিন্দারা জিপ দু’টি লক্ষ্য করে যথেচ্ছ ঢিল ছুঁড়তে থাকেন বলে পুলিশের দাবি। জেলা পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে, সে সময় পুলিশ কর্মীরা পাথরের আঘাতে জখম হন। তবে বাধার মুখেই পুলিশ ওই যুবককে বীরপাড়া হাসপাতালে নিয়ে যায়। বাসিন্দাদের অভিযোগ, ফরিদুল দীর্ঘ দিন ধরে অসামাজিক কাজকর্মের সঙ্গে জড়িত। ধর্ষণের অভিযোগে সম্প্রতি সে তিন মাস জেল খেটে জামিনে ছাড়া পেয়ে বাড়িতে ফেরে বলেও জানা গিয়েছে। খুনের ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।