অসম থেকে অস্ত্র আনায় মদত দেওয়ার অভিযোগে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার নেতা তথা জিটিএ-এর এক সদস্যের বাড়িতে তল্লাশি চালাল পুলিশ। রবিবার রাতে দার্জিলিঙের তাকদা এলাকায় ওই তল্লাশি চলে। পুলিশ জানিয়েছে, শনিবার চিরাং জেলায় প্রচুর অত্যাধুনিক অস্ত্র-সহ দু’জনকে পুলিশ গ্রেফতার করে। ধৃত উমেশ স্বামী ও গণেশ ছেত্রীকে জেরা করে তাকদার জিটিএ সদস্য সঞ্জয় টুলুংয়ের নাম জানা যায়। সেই সূত্রেই দার্জিলিং জেলা পুলিশকে সতর্ক করেন অসমের গোয়েন্দারা। চিরাং জেলার এসপি রঞ্জন ভুঁইয়া জানান, জেরায় দার্জিলিঙের কয়েকজনের নাম পেয়ে তা সেখানকার পুলিশকে জানানো হয়েছে। রাতে দার্জিলিঙের পুলিশ সুপার অখিলেশ চতুর্বেদী বলেন, “জিটিএ সদস্য সঞ্জয় টুলুংয়ের বাড়িতে তল্লাশি চলেছে। আরও কিছু সূত্র মিলেছে। আরও কয়েক জায়গায় তল্লাশি হবে।”
দলের এক নেতার বিরুদ্ধে অস্ত্র লেনদেনে যুক্ত থাকার অভিযোগ ওঠার বিষয়টি নিয়ে পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি তুলেছেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা মোর্চার নেতারা। মোর্চার কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা জ্যোতি কুমার রাই বলেন, “পাহাড় পুরোপুরি শান্ত। এখানে আন্দোলন কর্মসূচিও শান্তিপূর্ণভাবে হয়। দার্জিলিঙে অস্ত্র পাঠানো হচ্ছে এটা মানা যায় না। আমরাও সঠিক তদন্তের দাবি তুলেছি।”
শনিবার চিরাং জেলার চাপাগুড়ি থেকে গাড়িতে অস্ত্র-সমেত ওই দুই জনকে পুলিশ ধরে। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা এবং পুলিশ সূত্রের খবর, ওই অত্যাধুনিক অস্ত্র এবং কাতুর্জ নাগাল্যান্ডের ডিমাপুর থেকে দার্জিলিঙের কোনও সংগঠনের জন্য পাঠানো হচ্ছিল। ধৃতদের মধ্যে উমেশের বাড়ি ডুয়ার্সের বীরপাড়া লঙ্কাপাড়া চা বাগান এলাকায়। অন্যজন, গণেশের বাড়ি অসমের বাকসা জেলায়।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, বছর চারেক আগে ধৃত উমেশ ডুয়ার্স ছেড়ে দার্জিলিং পাহাড়ে চলে যায়। বাড়িতে তার বাবা-মা, স্ত্রী এবং সন্তান আছে। বীরপাড়ার আরএসপি নেতা গোপাল প্রধানের দাবি, “উমেশ একসময় বাম রাজনীতি করত। পরে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা করত। তার পরে বাড়ি ছেড়ে যায়। কিছু অসামাজিক কাজের অভিযোগও ছিল ওর বিরুদ্ধে।” এই প্রসঙ্গে ডুয়ার্সের মোর্চা নেতা মধুকর থাপা বলেন, “আমাদের ওই নামে কোনও কর্মী নেই।” অসম পুলিশের কাছ থেকে তথ্য পেয়ে আলিপুরদুয়ার জেলা পুলিশও এদিন উমেশের সম্পর্কে খোঁজখবর শুরু করেছে।
পাহাড়ের রাজনৈতিক দলগুলির তরফে গোটা ঘটনার পিছনে বড় চক্রান্ত রয়েছে বলে দাবিও করা হয়েছে। সিপিআরএমের মুখপাত্র গোবিন্দ ছেত্রী বলেন, “দার্জিলিঙে শান্তি নেই। পাহাড় অশান্ত, এটাও হয়ত কোনও মহল থেকে দেখানোর জন্য এই চক্রান্ত করা হতে পারে।”