গুলি বের করতে ছাত্রকে রেফার এসএসকেএম-এ

দু’দিন ধরে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ফেলে রাখা হল পুরাতন মালদহের সাহাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের গুলিবিদ্ধ স্কুলছাত্রকে। বুধবারও সকালেও মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের শয্যায় শুয়ে যন্ত্রণায় কাতরাতে দেখা যায় পবন দাস নামে ওই ছাত্রকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মালদহ শেষ আপডেট: ১৫ জানুয়ারি ২০১৫ ০২:২৮
Share:

দু’দিন ধরে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ফেলে রাখা হল পুরাতন মালদহের সাহাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের গুলিবিদ্ধ স্কুলছাত্রকে। বুধবারও সকালেও মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের শয্যায় শুয়ে যন্ত্রণায় কাতরাতে দেখা যায় পবন দাস নামে ওই ছাত্রকে। পরে দুপুরে চিকিত্‌সকেরা পরিবারের লোকজনকে জানান, মালদহ হাসপাতালে ওই অস্ত্রোপচার করা সম্ভব নয়। আজ, বৃহস্পতিবার তাকে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে পাঠানো হবে।

Advertisement

চিকিত্‌সকদের মুখে এমন কথা শুনে বিভ্রান্তের মতো ছোটাছুটি করতে দেখা যায় পবনের বাবা অবিনাশবাবুকে। তিনি বলেন, “আমি একটি স্কুলের ভ্যানরিকশা চালাই। কলকাতায় নিয়ে গিয়ে কী ভাবে চিকিত্‌সা করাব, বুঝতে পারছি না। ছেলে যন্ত্রণায় ছটফট করছে।” হাসপাতালে যখন ওই অস্ত্রোপচারের পরিকাঠামো নেই, তখন কেন দু’দিন ধরে সেখানে ফেলে রাখা হল ওই ছাত্রকে?প্রশ্ন তুলেছেন পুরাতন মালদহের বিধায়ক অর্জুন হালদার। তিনি বলেন, “ছেলেটির চিকিত্‌সার ব্যবস্থা করা হবে। তবে এই হাসপাতালে চিকিত্‌সা হবে না জেনেও কেন ছেলেটিকে এই ভাবে ফেলে রাখা হল? হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় ভুগতে হচ্ছে ছাত্রটিকে।”

এই বিষয়ে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সুপার তথা সহকারি অধ্যক্ষ মহম্মদ আব্দুর রশিদ বলেন, “পায়ের গুলিটি সন্ধিস্থলে থাকায় তার অস্ত্রোপচার এখানে করা সম্ভব নয়। তাই তাকে কলকাতায় রেফার করা হবে।”

Advertisement

সোমবার পুরাতন মালদহের সাহাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বিমল দাস কলোনি এলাকায় জমি নিয়ে গ্রামবাসীদের উপরে দলবল নিয়ে হামলা করে স্থানীয় তৃণমূল কর্মী পাণ্ডব দাস। গ্রামবাসী ও পাণ্ডবদের দলবলের সঙ্গে সংঘর্ষের সময় কয়েক রাউন্ড গুলি চালানো হয় বলে অভিযোগ। সেই সময় দোকান থেকে বাড়ি ফেরার পথে সংঘর্ষের মাঝখানে পড়ে যায় পবন। বাঁ পায়ের গোড়ালির উপরে গুলি লাগে।

পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে যান। পায়ে গুলি নেই বলে দাবি করে শুধুমাত্র প্রাথমিক চিকিত্‌সা করে ব্যান্ডেজ বেঁধেই ছেড়ে দেওয়া হয় তাকে। তবে পরিবারের লোকেরা চিকিত্‌সককে বারবার জানিয়েছিলেন, তার পায়ে গুলি ঢুকে রয়েছে। ওই ছাত্রটিও জানিয়েছিল। অথচ ওই শল্যচিকিত্‌সক অর্কপ্রভ রায় জানান, শীঘ্রই ব্যাথা সেরে যাবে। তাঁর কথা মতো পরিবারের লোকেরা তাকে বাড়ি নিয়ে চলে যান। ব্যাথা না কমায় পরের দিন সকালে শহরের এক বেসরকারি নার্সিংহোমে পায়ের এক্স রে করান। সেখানে পায়ে গুলি ঢুকে থাকার বিষয়টি পরিষ্কার হয়। ফের তাকে মেডিক্যালেই ভর্তি করানো হয়। ওই চিকিত্‌সকের বিরুদ্ধে পরিবারের লোকেরা গাফিলতির অভিযোগ তোলেন। মেডিক্যালের সুপার তথা সহকারি অধ্যক্ষ বলেন, “শল্যবিভাগের প্রধানের নেতৃত্বে তদন্ত শুরু হয়েছে। রিপোর্ট এলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” মালদহের পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “গুলি চালানোর বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন