চাকুলিয়ায় দীপা। —নিজস্ব চিত্র।
কালিয়াগঞ্জ পুরসভার কংগ্রেসের ১০ কাউন্সিলর সম্প্রতি শাসক দলে যোগ দেওয়ায় পুরসভার ক্ষমতা কার্যত দখলের পথে তৃণমূল। এই পরিস্থিতিতে নিজের খাসতালুক কালিয়াগঞ্জে দলের ভাঙন রুখতে আসরে নামলেন রায়গঞ্জের প্রাক্তন কংগ্রেস সাংসদ দীপা দাশমু্ন্সি।
বৃহস্পতিবার রাতে দিল্লি থেকে বিমানে বাগডোগরা হয়ে কালিয়াগঞ্জের বাড়িতে ফেরেন দীপাদেবী। সেখানেই তিনি পুরসভার বিদায়ী চেয়ারম্যান তথা কালিয়াগঞ্জ শহর কংগ্রেস সভাপতি অরুণ দে সরকার-সহ দলের চার কাউন্সিলর, শহরের ১৭টি ওয়ার্ডের দলীয় সভাপতি ও দলের বিভিন্ন শাখা সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। আজ, শুক্রবারও দীপাদেবী নিজের বাড়িতে দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে কংগ্রেস সূত্রের খবর। এ দিন কালিয়াগঞ্জে আসার পথে দীপাদেবী চাকুলিয়ার কানকি ও সুর্যাপুর এলাকায় বন্যা দুর্গতদের আশ্রয় শিবিরে গিয়ে তাঁদের পাশে থাকার আশ্বাস দেন। দীপাদেবী বলেন, ‘‘কিছু পাইয়ে দেওয়ার লোভ দেখিয়ে তাদের দলে নেওয়ার চেষ্টা করছে. এটা তাদের মতো করে রাজনীতি। আমরা সেই রাজনীতি বিশ্বাস করিনা। সদস্যরা চলে গেলেও মানুষ কংগ্রেসের সঙ্গেই রয়েছে।’’ এরপর তিনি চাকুলিয়া সদর এলাকায় গিয়ে নদীতে স্নান করতে নেমে নিখোঁজ এক বালকের পরিবারের সদস্যদেরও সবরকম সহযোগিতারও আশ্বাস দিয়েছেন।
অরুণবাবু বলেন, ‘‘কোনও পদ বা প্রলোভনে পা দিয়ে তৃণমূলে যোগ না দেওয়ার জন্য দীপাদেবী সতর্ক করেছেন। প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির স্বপ্নের শহর কালিয়াগঞ্জে দলকে রক্ষা করতে প্রয়োজনীয় পরামর্শও দিয়েছেন তিনি। সেইসঙ্গে, ভবিষ্যতে পুর এলাকায় নাগরিক পরিষেবা দেওয়ার কাজে কোনও বিঘ্ন ঘটলে তৃণমূল পরিচালিত পুরসভার বিরুদ্ধেও আন্দোলনে নামারও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।’’ তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক কালিয়াগঞ্জের বাসিন্দা অসীম ঘোষ পাল্টা বলেন, ‘‘উন্নয়নের স্বার্থে দীপাদেবীর ঘনিষ্ঠ কংগ্রেস কাউন্সিলরেরা তৃণমূলকে পুরসভা উপহার দিয়েছেন।’’
গত ২০ জুলাই ১৭ আসনের কালিয়াগঞ্জ পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান কার্তিকচন্দ্র পালের নেতৃত্বে ছয় কংগ্রেস কাউন্সিলর, দুই তৃণমূল কাউন্সিলরের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কংগ্রেসের চেয়ারম্যান অরুণবাবুর বিরুদ্ধে অনাস্থা এনে তৃণমূলে যোগ দেন। পরে আরও তিন কাউন্সিলরও তৃণমূলে যোগ দেন। দল সূত্রে খবর, চেয়ারম্যানের পদ ধরে রাখতে অরুণবাবু গত ২১ জুলাই তাঁর অনুগামী ছয় কংগ্রেস কাউন্সিলরকে সঙ্গে নিয়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার ইচ্ছেপ্রকাশ করেন। কিন্তু তৃণমূলের তরফে কোনও সাড়া না পেয়ে ২২ জুলাই অরুণবাবু রাজনীতি ছেড়ে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন। তবে বুধবারই সিদ্ধান্ত বদল করে পুরসভায় বিরোধী দলনেতার ভূমিকা পালন করার সিদ্ধান্ত নেন। আগামী ৩ অগস্ট তলবি সভা ডেকে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন অরুণবাবু।