জলসা চলাকালীন মোবাইলে ফোন করেছিল কেউ। ফোন ধরতে দিদির নজরের বাইরে চলে গিয়েছিল অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী। শুক্রবার রাতে উত্তর দিনাজপুরের গোয়ালপোখরের ওই জলসা থেকে নিখোঁজ হয়ে যাওয়া মেয়েটির দেহ শনিবার সকালে মিলল জলসাস্থলের কাছেই গমখেত থেকে। গলায় ওড়নার ফাঁস। পরিবারের দাবি, খুনের আগে ধর্ষণও করা হয়ে থাকতে পারে কিশোরীকে। পুলিশ মৃতদেহটি ময়না-তদন্তে পাঠিয়েছে। মেয়েটির মোবাইলটি উদ্ধার না হলেও, সেটির কল-রেকর্ড পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে।
এসডিপিও (ইসলামপুর) বৈভব তিওয়ারি বলেন, “বছর চোদ্দোর ওই মেয়েটির খুনের কারণ স্পষ্ট নয়।” পুলিশের দাবি, বাইরে থেকে আঘাতের চিহ্ন মেলেনি। প্রাথমিক তদন্তে অনুমান, শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে মেয়েটিকে। ময়না-তদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার আগে ছাত্রীটিকে খুনের আগে ধর্ষণ করা হয়েছিল কি না, সে ব্যাপারে নিশ্চিত করে বলতে চায়নি পুলিশ।
গোয়ালপোখর সদর থেকে কিছুটা ভিতরে বাড়ি ওই ছাত্রীর। সম্পন্ন কৃষিজীবী পরিবার। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বছরখানেক আগে তারা একটি মোবাইল ফোন কেনে। পরিবার সূত্রের খবর, মাঝেমধ্যেই লুকিয়ে মোবাইলটি ব্যবহার করত তাদের ছোট মেয়ে। ধরা পড়ে গেলে বলত, “বান্ধবীরা মোবাইলে ফোন করেছে।”
শুক্রবার সন্ধ্যায় বছর চারেকের বড় দিদি, দিদির কিছু বান্ধবী ও পড়শি কিছু বয়স্ক মহিলার সঙ্গে বাড়ি থেকে এক কিলোমিটার দূরে একটি জলসা দেখতে যায় ওই কিশোরী। তার দিদি জানিয়েছে, ঘণ্টাখানেক পর মোবাইলে একটি ফোন আসে। ফোনটি ছিল তার ছোট বোনের কাছে। ফোন আসতেই জলসা থেকে বেরিয়ে যায় বোন। বলে যায়, সে না ফিরলে তার দিদি যেন বাড়ি চলে যায়। মেয়েটির দিদির কথায়, “যেখানে জলসা চলছিল, তার কাছেই আমাদের বড়দির বিয়ে হয়েছে। বোন বলেছিল, রাতে ওখানে ফিরবে। সকালে বাড়ি আসবে।”
এ দিন সকালে জলসা যে মাঠে হচ্ছিল, তার থেকে শ’দু’য়েক মিটার দূরে গমখেতে এক কিশোরীর দেহ পড়ে রয়েছে বলে হইচই শুরু হয়। মেয়েটির জামাইবাবু বলেন, “মোবাইলে শেষ কলটা কার ছিল, জানা গেলেই খুনের কিনারা হবে। আমাদের সন্দেহ, মারার আগে ধর্ষণ করা হয়েছে শ্যালিকাকে।”