ঘুর্ণাবর্তে ঝড়-বৃষ্টি সিকিম, উত্তরবঙ্গে

নিম্নচাপ ও ঘুর্ণাবর্তের প্রভাবে সিকিম ও উত্তরবঙ্গে ঝড়-বৃষ্টি চলছেই। শনিবার রাত থেকে রবিবার সকাল পর্যন্ত উত্তরবঙ্গের নানা এলাকায় টানা বৃষ্টি হয়েছে। সেই সঙ্গে ঘনঘন বিদু্যৎ ঝলকানি এবং বজ্রপাত হয়েছে। বৃষ্টির সঙ্গে চলা ঝড়ের দাপটে কোচবিহারে বিদ্যুৎ সরবারহ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। রবিবার বিকেল পর্যন্ত কোচবিহারের বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ পরিষেবা স্বাভাবিক হয়নি বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ। এ দিকে টানা বৃষ্টিতে তাপমাত্রা কমেছে অনেকটাই।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৫ মে ২০১৪ ০১:১৯
Share:

উপরে বৃষ্টির জলে ভরে গিয়েছে কোচবিহার পুলিশ লাইনের মাঠ।

নিম্নচাপ ও ঘুর্ণাবর্তের প্রভাবে সিকিম ও উত্তরবঙ্গে ঝড়-বৃষ্টি চলছেই। শনিবার রাত থেকে রবিবার সকাল পর্যন্ত উত্তরবঙ্গের নানা এলাকায় টানা বৃষ্টি হয়েছে। সেই সঙ্গে ঘনঘন বিদু্যৎ ঝলকানি এবং বজ্রপাত হয়েছে। বৃষ্টির সঙ্গে চলা ঝড়ের দাপটে কোচবিহারে বিদ্যুৎ সরবারহ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। রবিবার বিকেল পর্যন্ত কোচবিহারের বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ পরিষেবা স্বাভাবিক হয়নি বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ। এ দিকে টানা বৃষ্টিতে তাপমাত্রা কমেছে অনেকটাই।

Advertisement

কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ২৪ ঘণ্টায় শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ি শহরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রি কমে গিয়েছে। কোচবিহারের তাপমাত্রা কমেছে ৫ ডিগ্রিরও বেশি। রবিবার সকালে বৃষ্টির সঙ্গে হাওয়ার কারণে শিলিগুড়িতে শীতের পোশাক দেখা গিয়েছে। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরে সিকিম আধিকারিক গোপীনাথ রাহা বলেন, “সিকিমেও টানা বৃষ্টিপাত চলছে। সিকিম এবং উত্তরবঙ্গ এলাকায় ভূপৃষ্ঠ থেকে দেড় কিলোমিটার একটি নিম্নচাপ অক্ষরেখা অবস্থান করছে। সেই সঙ্গে ঘুর্ণাবর্তও তৈরি হয়েছে। এর প্রভাবে টানা বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টি চলছে। দু’দিন বিক্ষিপ্ত বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে।”

শনিবার রাত থেকে জলপাইগুড়ি-শিলিগুড়িতে বৃষ্টি শুরু হয়। সেই সঙ্গে ছিল ঝোড়ো হাওয়া। তবে দুই শহরে ঝড়ে ক্ষয়ক্ষতির খবর না মিললেও, কোচবিহারের বিস্তীর্ন এলাকায় ঝড়ের তাণ্ডবে ক্ষতি হয়। একাধিক এলাকায় ঝড়ে বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে রাতভর লোডশেডিং ছিল। রাতে বৃষ্টি শুরু হতেই কোচবিহার শহর ও লাগোয়া গুড়িয়াহাটি, ঘুঘুমারি, বাণেশ্বরে বিদ্যুৎ সংযোগ চলে যায়। রাতভর অন্ধকারে ডুবে থাকে এলাকাগুলি। দিনহাটা, মাথাভাঙার বিস্তীর্ণ এলাকায় দুর্ভোগে পড়েন বাসিন্দারা। বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, ঝড়ো হাওয়া টানা বৃষ্টিতে বেশ কিছু এলাকায় গাছ ভেঙে পড়ে শহরে বিবেকানন্দ স্ট্রিট ও সংলগ্ন এলাকায় গাছ উপড়ে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে যায়। জেলার বিভিন্ন এলাকায় এমন আরও ঘটনা হয়েছে। বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার কোচবিহারের বিভাগীয় ম্যানেজার বিষ্ণু দত্ত বলেন, “তার ছিঁড়ে পড়ায় নানা এলাকায় পরিষেবা স্বাভাবিক রাখায় সমস্যা হয়।”

Advertisement

শনিবার রাত থেকে জেলা জুড়ে শুরু হওয়া বৃষ্টি চলে রবিবার বিকেল পর্যন্ত। এ দিন কোচবিহারের জনজীবন বিপর্যস্ত হয়। বৃষ্টি কৃষকদের মুখে হাসি ফুটিয়েছে। কৃষি দফতর জানিয়েছে, পাট, বোরো ধান, সব্জির চাষে এই বৃষ্টি উপকারে লাগবে। কোচবিহারের সদরের সহ কৃষি অধিকর্তা (প্রশাসন) বলরাম দাস বলেন, “এ বছরে এটাই প্রথম ভারী বৃষ্টিপাত। সব্জি, পাট, ধানে উপকারে লাগবে।”

শনিবার রাত থেকে বৃষ্টির পরে, রবিবারও বৃষ্টির শব্দে ঘুম ভেঙেছে শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ির বাসিন্দাদের। আবহাওয়া দফতর জানায়, শনিবার রাতে বৃষ্টির পরিমাণ ছিল ৩২ মিমি। রবিবার আকাশ ছিল কালো মেঘে ঢাকা। সেই সঙ্গে ঘুর্ণাবর্তের প্রভাবে দমকা হাওয়ায় শহরে অকাল ঠান্ডার আমেজ ফিরে আসে। এ দিন সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত টানা বৃষ্টি চলছে। সকাল ৯টাতে শিলিগুড়ির হাসমিচকে পথচারীর গায়ে হাফ হাতা সোয়েটার, টুপিও দেখা গিয়েছে। দার্জিলিঙেও নাগাড়ে বৃষ্টি হয়েছে। দার্জিলিঙে থাকা পর্যটকদের এ দিন ছাতা মাথায় ঘুরতে দেখা গিয়েছে। নাগাড়ে বৃষ্টি হয়েছে ডুয়ার্সে। আবহাওয়া দফতরের পুর্বাভাস অনুযায়ী এই পরিস্থিতি আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত চলতে পারে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন