ঘুড়ি থেকে মূর্তি, থিমে পিছিয়ে নেই শিলিগুড়িও

কারও হাতিয়ার ঘুড়ি। কেউ মায়ের বাহান্ন রূপকে তুলে ধরবে মাটির মূর্তির মধ্যে দিয়ে। কারও আবার থিম কাল্পনিক মন্দির। কেউ আবার রথের আদলে মণ্ডপ তৈরি করবেন। কালীপুজোতেও থিমের ছড়াছড়ি শিলিগুড়িতে।

Advertisement

নমিতেশ ঘোষ

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০১৪ ০১:৪৫
Share:

কারও হাতিয়ার ঘুড়ি। কেউ মায়ের বাহান্ন রূপকে তুলে ধরবে মাটির মূর্তির মধ্যে দিয়ে। কারও আবার থিম কাল্পনিক মন্দির। কেউ আবার রথের আদলে মণ্ডপ তৈরি করবেন। কালীপুজোতেও থিমের ছড়াছড়ি শিলিগুড়িতে।

Advertisement

হাকিমপাড়া সঙ্ঘশ্রী সঙ্ঘের পুজোতে থিম করা হয়েছে ঘুড়ি। এই পুজো পা দিয়েছে ৬৭ বছরে। শহরের ঠিক মাঝে আকাশের দিকে তাকালেই দেখা মিলবে ঘুড়ির। রং-বেরংয়ের। কোনওটি জাপানের, কোনওটি মালয়েশিয়ার। কম্বোডিয়া, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, কোরিয়ার সঙ্গে ইউরোপিয়ান ঘুড়ির দেখাও মিলবে। বিদেশের সঙ্গে সঙ্গে বাংলার ঘুড়ির দেখাও মিলবে। ঢাউস, চিলা, পেটকাটি, চাঁদিয়াল, বগ্গা ঘুড়ি উড়তে দেখা যাবে হাকিমপাড়াতে। সেই সঙ্গে জাপানের ইদো, রক্কাকু, মালয়েশিয়ার ওয়াউ, কম্বোডিয়ার সোলাং, ইন্দোনেশিয়ার বিবিন, থাইল্যান্ডের চুলা, কোরিয়ার ব্যাং পে ইয়ং এ ছাড়াও ইউরোপের কোনাই, ডেল্টা, এবে ঘুড়ির দেখা মিলবে মণ্ডপের সামনে। কিছু ঘুূড়ি যেমন আকাশে উড়বে, কিছু দিয়ে আবার তৈরি করা হবে মণ্ডপ। কোন ঘুড়ি কোথাকার, কী নাম? সব লিখে দেওয়া হবে ঘুড়ির মধ্যেই। পুজো উদ্যোক্তারা জানান, ঘুড়ি সম্পর্কে শিশুদের মধ্যে একটা ধারণা তৈরি করার জন্য এবারে তাঁরা ওই উদ্যোগ নিয়েছেন। পুরো বিষয়টি করা হচ্ছে ঘুড়ি বিশারদ রথীন পালের সাহায্য নিয়ে। ঘুড়ি তৈরির কাজও ইতিমধ্যেই শুরু করা হয়েছে। রথীনবাবু বলেন, “এক সময় গ্রাম বাংলাতে ঘুড়ি উড়তে দেখা যেত। এখন সে সব প্রায় দেখাই যায় না। এই সময়ের শিশুদের ঘুড়ি সম্পর্কে কোনও ধারণাই নেই। কালীপুজোর মাধ্যমে শিশুদের মধ্যে ঘুড়ি সম্পর্কে একটা ধারণা তৈরি করতেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।”

শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের সামনে গ্লোব ট্রটার্স স্পোর্টিং ক্লাব (জিটিএস) এর পুজো পা দিল ৫৩ বছরে। মায়ের বাহান্ন রূপকে তুলে ধরবেন তাঁদের পুজোয়। প্রকৃতির মধ্যে থেকেই মায়ের সৃষ্টি। সেই বিষয়টিকেই থিম হিসেবে তুলে ধরা হবে। মণ্ডপে ঢুকেই দর্শনার্থীরা দেখতে পাবেন অর্ধ-নারীশ্বর একটি মূর্তি। তাঁর পরেই থাকবে একটি হাত, যেটি প্রকৃতির। হাতের তালুতে জমে থাকা জল থেকে গাছপালা জন্ম নিচ্ছে। সেখানে থাকবে একটি পদ্মফুল। ফুলের মধ্যেই সাধারণ নারীর বেশে থাকবে কালী মায়ের মূর্তি। পাশাপাশি চারিদিকে মায়ের বাহান্ন রূপকে মাটির মূর্তি দিয়ে তুলে ধরা হবে। ক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক প্রদীপ রায় বলেন, “জীবন্ত গাছপালার মধ্যে দিয়ে আমারা পুরো বিষয়টি ফুটিয়ে তুলব।” সন্ধানী ক্লাবের পুজোয় কাপড় ও থার্মোকল দিয়ে তৈরি করা হবে কাল্পনিক মন্দির। মন্দিরের ভিতরে পৌরাণিক কাহিনী লেখার মধ্যে দিয়ে তুলে ধরা হবে। মায়ের মূর্তির মধ্যেও ভিন্নতা থাকবে। থাকবে আলোর কারসাজিও। এবারে এই পুজো ৩৭ তম বছরে পড়েছে। ক্লাবের পক্ষে শেখর পাল বলেন, “পৌরাণিক কাহিনী অবলম্বন করে আমরা মণ্ডপ ফুটিয়ে তুলব।”

Advertisement

সেবক রোডের দুই মাইল এলাকার উল্কা ক্লাবের পুজোয় তৈরি করা হবে রথ। রথে সওয়ার হবেন দেবী। মাটি, কাপড়ের পাশাপাশি তামা ও পিতল রথ তৈরিতে কাজে লাগানো হবে। রথের উচ্চতা ৬৫ ফুট ও চওড়া ৭০ ফুট। মণ্ডপের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে থাকবে চন্দননগরের আলো। উল্কা ক্লাবের পুজো এবার ৩৬ বছরে পা দিল। ক্লাবের অন্যতম কর্তা প্রবীর মণ্ডল বলেন, “মণ্ডপসজ্জার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন