পর্যটন মেলায় রয়েছে ‘হোম-স্টে’-র ব্যবস্থা।—নিজস্ব চিত্র।
পাহাড়ের কোলে কালিম্পঙের চুইখিমে বুধবার থেকে শুরু হল তিন দিনের ইন্দ্রধনু পর্যটন মেলা। বুধবার থেকে কালিম্পঙের চুইখিমে পর্যটন মেলা শুরু হতেই গ্রামে গ্রামে এখন উত্সবের মেজাজ। সাংস্কৃতিক মঞ্চ, স্থানীয় খাবার, পোশাক, চা সব কিছুরই আয়োজন রয়েছে মেলায়।
ডুয়ার্সের বাগরাকোট থেকে ৩১ নম্বর জাতীয় সড়ক হয়ে বাগরাকোটা বাজার পেরিয়ে বাঁ দিকের পাহাড়ি আঁকাবাঁকা পথে কিছুটা গেলে চুইখিমে পৌঁছে যাওয়া যায়। ‘লিটারেসি ইন্ডিয়া’ নামে একটি বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন তিন বছর ধরে চুইখিম গ্রামে জনজাতি উন্নয়নের কাজ করছে বলে জানিয়েছে। এলাকায় একটি স্কুলও তৈরি করেছে সংগঠনটি। তাদের উদ্যোগেই এই মেলা। গ্রামে মোট ১৬টি ‘হোম স্টে’-র আদলে পর্যটনকেন্দ্র খোলা হয়েছে। গত তিন বছর ধরেই চুইখিমে পর্যটন মেলারও আয়োজন করা হচ্ছে। সংগঠনের উপদেষ্টা, আমেরিকার বাসিন্দা অশোক মারোয়াও চুইখিমে এসেছেন। বুধবার মেলার উদ্বোধন করেন তিনিই। মেলার ব্যবস্থাপনায় সামিল করা হয়েছে স্থানীয় বাসিন্দাদেরও।
গ্রামের একটি মাঠে মেলার সাংস্কৃতিক মঞ্চ বাঁধা হয়েছে। তাঁকে ঘিরে রয়েছে নানা স্টল। চারটি বিরাট বাঁশগাছে তৈরি হয়েছে বড় একটি দোলনা। মাঠের থেকে কিছুটা দূরে আরেকটি মাঠে চলছে ফুটবল টুর্নামেন্ট। মেলাকে কেন্দ্র করেই ওই টুর্নামেন্ট শুরু হয়েছে। বুধবার সকালে বাসিন্দাদের নিয়ে একটি শোভাযাত্রা বের করা হয়। শেষ হয় মেলার মাঠে। শোভাযাত্রা শেষ হওয়ার পর থেকে শুরু হয় নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। প্রতিদিন রাত ৯টা পর্যন্ত টানা অনুষ্ঠান চলবে বলে জানানো হয়েছে।
স্থানীয় একটি ‘হোম স্টে’র কর্ণধার নরেশ গুরুঙ্গ, পবিত্রা খাওয়াসেরা জানান, প্রতিটি ‘হোম স্টে’ থেকে থাকার খরচ একই। মাথাপিছু ৭৫০ টাকা খরচেই থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। পর্যটকদের মেনুতেও রাখা হচ্ছে স্থানীয় খাবার। ডোল্লে খুরশিয়ানির (গোলাকৃতির পাহাড়ি লঙ্কা) চাটনি, বাড়ির উঠোনে ফলানো স্কোয়াশের সব্জি নিয়মিত মেনুতে পাওয়া যায়। জানা গেল, উত্সবের সময়ে ‘চিকেন চুইখিম’ নামের একটি মুরগির পদকেও জনপ্রিয় করার চেষ্টা চলছে। বেসরকারি সংগঠনের উদ্যোগে ‘হোম স্টে’-র রাঁধুনিদের প্রশিক্ষণ দিতে কলকাতা থেকে এসেছেন স্বাতী রায়চৌধুরী। কলকাতায় নিজের একটি প্রকাশনা সংস্থা চালান তিনি। স্বাতী জানালেন, “মূলত বাঙালি পর্যটকেরা যাতে চুইখিমে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সঙ্গে রান্নাতেও আকৃষ্ট হন, তার জন্য এখানে কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছে। মেলাতেও সকলকে রান্না শেখানো হবে।”