মালদহের চাঁচলে বোমা ফেটে আহতদের মধ্যে আরও একজনের মৃত্যু হল শনিবার ভোররাতে। ফলে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল চার।
পুলিশ জানায়, এ দিন মৃত জাকির হোসেনের (২০) বাড়ি গোয়ালপাড়ায়। এছাড়াও শুক্রবার রাতে যারা মারা গিয়েছিল তাদের মধ্যেও দুজনের পরিচয় জানতে পেরেছে পুলিশ। নিহত কালু শেখ (৩৬) গোয়ালপাড়া ও সফিকুল রহমান (৩৭) হজরতপাড়ার বাসিন্দা। মৃত আরও একজনের পরিচয় এখনও জানা যায়নি। মালদহের একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে এখনও দুজন চিকিৎসাধীন। মালদহের পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, নিহত ও আহতরা প্রত্যেকেই এলাকার পরিচিত দুষ্কৃতী। জখম দুই দুষ্কৃতী নামনুর জামাল ও আমির হোসেন সুস্থ হলেই তাদের গ্রেফতার করা হবে বলেও জানান তিনি।
যদিও শনিবার ভোররাতে মৃত জাকির হোসেন স্থানীয় একটি স্কুলে নবম শ্রেণিতে পড়ত বলে তার পরিবার দাবি করায় বিভ্রান্তি ছড়ায়। মাঠ থেকে বাড়ি ফেরার সময় বোমা ফেটে জাকির জখম হয়েছিল বলেও দাবি করে তার পরিবার। পুলিশ অবশ্য সেই দাবি উড়িয়ে দিয়েছে। চাঁচলের এসডিপিও পিনাকীরঞ্জন দাস বলেন, সংশ্লিষ্ট স্কুল কর্তৃপক্ষ ওই নামে কোনও ছাত্রের হদিশ দিতে পারেনি। একই নামে ছাত্র থাকলেও বয়সে কোনও মিল নেই। স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সুশান্ত মণ্ডল বলেন, “পুলিশ কর্তারা এসেছিলেন। তাদের সব জানিয়েছি।”
পুলিশ জানায়, শুক্রবার বিকেলে গোয়ালপাড়ায় শ্মশানের পাশে একটি নির্জন এলাকায় বোমা বাঁধছিল দুষ্কৃতীরা। বোমা বাঁধায় দক্ষ ওই দুষ্কৃতীদের সঙ্গে ছিল তাদের সঙ্গীরাও। বোমা তৈরির সময় অনেকগুলি বোমা একসঙ্গে ফেটে গিয়েছিল। ঘটনার পর মৃত তিন জনের দেহ একটি ছোট গাড়িতে চাপিয়ে লোপাট করে দেওয়ার চেষ্টা করেছিল তাদের সঙ্গীরা। গাড়িটি বাঁশঝোপে রেখে সন্ধ্যা হওয়ার জন্য অপেক্ষা করছিল তারা। কিন্তু পুলিশ পৌঁছে যাওয়ায় তা সম্ভব হয়নি। তবে গুরুতর জখম তিন জনকে নিয়ে কয়েকজন মালদহে চলে যায়। শুধু দেহ লোপাটের চেষ্টাই নয়, ঘটনাস্থলের রক্তও জল দিয়ে ধুয়ে পরিষ্কার করে দেয় তারা। রাতে পুলিশ ঘটনাস্থল বেশ কিছু বোমার টুকরো উদ্ধার করেছে।
ঘটনার জেরে আতঙ্ক ছড়িয়েছে গোটা এলাকায়। পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে।