লাল খামে মোড়া ডাকাতির হুমকি চিঠি বদলে দিয়েছিল গ্রামের চেনা ছবি। তার উপরে শনিবার রাতে পাশের গ্রামে দুষ্কৃতীদের ছোঁড়া বোমার আঘাতে একজনের মৃত্যু ও চারজনের আহত হওয়ার ঘটনায় আতঙ্ক কয়েকগুণ বেড়ে গিয়েছে ইংরেজবাজারের শোভানগর গ্রামপঞ্চায়েতের মাদিয়া বাধাগাছ গ্রামের বাসিন্দাদের। সোমবার দুপুরবেলাতেও গ্রামের রাস্তাঘাট শুনশান। দোকান খোলেনি। গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ুয়ার সংখ্যাও হাতে গোনা। এই গ্রাম থেকে এক কিলোমিটার দুরে একটি পুলিশ ক্যাম্প বসানো হলেও পুলিশের উপর আস্থা রাখতে পারছেন না সাধারণ মানুষ।তাই রাত জেগে গ্রাম পাহারা চলছেই।
গত শুক্রবার সকালে ডাকাতির হুমকি দেওয়া চিঠি পান ইংরেজবাজারের মাদিয়া বাধাগাছ গ্রামের বাসিন্দা ছয় সম্পন্ন গৃহস্থ। এই ঘটনায় গোটা গ্রামে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। এদিন রাতেই গ্রাম পাহারা দেওয়ার সময় তিনজন সন্দেহভাজন মোটরবাইক আরোহীকে ব্যাপক মারধর করে এলাকার মানুষজন। তাদের মোটরবাইকেও আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। শনিবার রাতে ওই গ্রাম থেকে এক কিলোমিটার দূরে দুষ্কৃতীদের ছোড়া বোমায় মৃত্যু হয় আতাউর সবজি নামে এক সবজি বিক্রেতার। জখম হন এক স্কুল পড়ুয়া-সহ চারজন। পরপর এই দু’টি ঘটনায় আতঙ্কে ঘুম ছুটেছে এলাকার বাসিন্দাদের।
গ্রামের রাস্তাঘাটতো বটেই নিঝুম পরিবেশ গ্রামের প্রাথমিক স্কুলেও। মাদিয়া এস.সি প্রাথমিক বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানান,এই স্কুলে ২৬৩জন ছাত্রছাত্রী রয়েছে। তবে শনিবার থেকে উপস্থিতির হার কমেছে। স্কুলের শিক্ষিকা দিপালী রানি সিংহ বলেন,“ছাত্র ছাত্রীদের স্কুলে আসতে দিচ্ছেন না অভিভাবকরা। ছেলেমেয়েদের অপহরণ করা হবে এই আতঙ্কে তাদের বাড়ি থেকে বের হতে দিচ্ছেন না তাঁরা।”
তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য আজিমুদ্দিন শেখ বলেন,“ পুলিশ গ্রামের পাশে একটি ক্যাম্প বসিয়েছে। তবে যারা হুমকি চিঠি দিয়েছে তাদের গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। আমরা চাই পুলিশ দ্রুত তাদের চিহ্নিত করে গ্রেফতার করুক।” মালদহের পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “একটি অস্থায়ী ক্যাম্প বসানো হয়েছে। রাতে পুলিশের টহলদারি আগের থেকে আরও বাড়ানো হয়েছে। হুমকি চিঠি কারা পাঠিয়েছে, তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।”