চা বাগান নিয়ে মমতার সঙ্গে আন্দোলনেও রাজি কংগ্রেস

বন্ধ চা বাগান খোলানোর দাবিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিল্লি গিয়ে আন্দোলন করলে, কংগ্রেসের তাতে সামিল হতে আপত্তি নেই বলে জানালেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০১৫ ০২:৩২
Share:

বন্ধ চা বাগান খোলানোর দাবিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিল্লি গিয়ে আন্দোলন করলে, কংগ্রেসের তাতে সামিল হতে আপত্তি নেই বলে জানালেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। বৃহস্পতিবার শিলিগুড়িতে অধীরবাবু জানিয়েছেন, বন্ধ চা বাগানের শ্রমিকদের স্বার্থে মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূলনেত্রীর নেতৃত্বেও আন্দোলন করা যেতে পারে। একই সঙ্গে অধীরবাবুর দাবি আগামী বিধানসভায় তৃণমূলের জোট হওয়ার সম্ভাবনা নেই। অধীরবাবুর মন্তব্য, ‘‘এমন জোটের কোনও জল্পনা, আলোচনা নেই।’’

Advertisement

জোট প্রসঙ্গে অধীরবাবু যাই দাবি করুন না কেন, রাজনৈতিক নেতাদের একাংশের দাবি, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির মুখে মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে দিল্লিতে আন্দোলনের ডাক বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। ডুয়ার্সের বিভিন্ন বন্ধ চা বাগান পরিদর্শন করে গত বুধবারই শিলিগুড়িতে ফিরেছেন অধীরবাবু। বন্ধ এবং ধুঁকতে থাকা চা বাগানগুলি খোলার দাবিতে কেন্দ্রীয় সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে দিল্লির যন্তর মন্তরে অবস্থানের কর্মসূচি ইতিমধ্যেই ঘোষণা করেছেন অধীরবাবুরা। বৃহস্পতিবার শিলিগুড়ির সেবক রোডের একটি হোটেলে সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীকেও দিল্লিতে গিয়ে চা শ্রমিকদের স্বার্থে আন্দোলন করার দাবি জানিয়েছেন অধীরবাবু। যা শুনে অনেকেই মনে করছেন, চা নিয়ে দিল্লির বিরুদ্ধে আন্দোলন ঘোষণা করে তৃণমূলকেও পাশে চাইছে কংগ্রেস।

যদিও, অধীরবাবুর কথায়, ‘‘অনটনে থাকা অসহায় চা শ্রমিকদের কথা মাথায় রেখেই মুখ্যমন্ত্রীর দিল্লি গিয়ে আন্দোলন করা উচিত। মুখ্যমন্ত্রী দিল্লি গিয়ে আন্দোলন করলে আমাদের সামিল হতে বাধা নেই। চা শ্রমিকদের স্বার্থে মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে আন্দোলন করব। এর সঙ্গে ভবিষ্যতের জোটের কোনও ইঙ্গিত বা সম্ভাবনা নেই।’’

Advertisement

এ দিনের সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে আন্দোলনের বার্তা ছাড়া বাকি সব প্রসঙ্গেই তৃণমূল সরকারকে বিঁধেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। বন্ধ এবং ধুঁকতে থাকা চা বাগানের শ্রমিকদের যাতে ন্যূনতম প্রয়োজনগুলি পৌঁছে দেওয়া যায়, তার ব্যবস্থা করতে রাজ্য সরকারের সব দলের প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক করা উচিত বলে অধীর দাবি করেছেন। তবে এ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে কোনও আর্জি জানাবেন কি না, জানতে চাওযা হলে অধীরবাবুর উত্তর, ‘‘এই বন্ধ্যা সরকারের কাছে কোনও আবেদন জানিয়ে লাভ নেই।’’ বন্ধ চা বাগান অধিগ্রহণ করতে রাজ্য সরকার যে ঘোষণা করেছে তাও ‘লোক দেখানো’ বলে দাবি করেছেন তিনি। দেনায় জর্জরিত রাজ্য সরকারের পক্ষে কী ভাবে বন্ধ চা বাগান চালানো সম্ভব সে প্রশ্নও তুলেছেন তিনি। বছরখানেক আগে তিনটি চা বাগানের লিজ বাতিল করলেও, একটি বাগানও রাজ্য সরকার চালাতে পারেনি বলে অভিযোগ করে অধীরবাবুর দাবি, ‘‘রাজ্য সরকারের হাতে থাকা বাগানগুলিও চালাতে পারেনি, নতুন বাগান আর কী ভাবে চালাবে।’’

রাজ্যের সর্বত্র বিরোধীদের আন্দোলনের উপরে তৃণমূলের নির্দেশে হামলা চলছে বলে অভিযোগ করেন অধীরবাবু। ব্রিটিশ শাসনের সময়েও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কর্মসূচিতে বাধা দেওয়া হতো না বলে দাবি করে প্রদেশ সভাপতির মন্তব্য, ‘‘রাজ্যে এখন অরাজকতা, স্বৈরতন্ত্র চলছে। ব্রিটিশ সময়ে বিরোধীদের যে অধিকার ছিল, তৃণমূল আমলে তাও নেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন