রাজ্য চা উন্নয়ন পর্ষদের পরিচালনাধীন ৫টি চা বাগানকে বেসরকারি হাতে দেওয়ার সিদ্ধান্তের বিরোধিতায় আন্দোলনে নামল শাসক দলেরই চা শ্রমিক সংগঠন। দার্জিলিং এবং ডুয়ার্সে পর্ষদের নিয়ন্ত্রণাধীন মোট ৫টি বাগান রয়েছে। বছর খানেক আগেই এই বাগানগুলিকে বেসরকারি হাতে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় পর্ষদ। সেই মতো সম্প্রতি দরপত্রও জমা নেওয়া হয়েছে। রাজ্য সরকারের সূত্রে জানা গিয়েছে, সব প্রক্রিয়া শেষ করে চলতি মাসেই দায়িত্ব হস্তান্তরের কাজ সেরে ফেলা হবে। সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে শনিবার থেকেই আন্দোলন শুরু করল তৃণমূল প্রভাবিত চা শ্রমিক সংগঠন তরাই ডুয়ার্স প্ল্যান্টেশন ওয়ার্কাস ইউনিয়ন। এ দিন সকালে ডুয়ার্সের ভূটান সীমান্ত লাগোয়া হিলা চা বাগানে সভা করে সংগঠনের সদস্যরা। বিক্ষোভও দেখান তাঁরা।
শাসক দলের শ্রমিক সংগঠনের হিলা বাগানের ইউনিট সম্পাদক দুর্গা মাহালি বলেন, “রাজ্য সরকার আমাদের চা বাগানকে রুগ্ন আখ্যা দিয়ে বেসরকারি হাতে তুলে দিতে চাইছে। সরকারি যে বরাদ্দ বাগানে আসে তা যাতে ঠিকভাবে বাগানের কাজে লাগানো হয় তা সরকারকে খতিয়ে দেখতে হবে। যে সংস্থাগুলি চা বাগান চালাতে এগিয়ে এসেছে, তাদের আদৌও কোনও দক্ষতা রয়েছে কিনা তাও খতিয়ে দেখতে হবে।”
পর্ষদের তরফে অবশ্য জানানো হয়েছে, শ্রমিক স্বার্থেই এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। বেসরকারি হাতে গেলেও, বাগানগুলিতে পর্ষদের নজরদারি চলবে। ডুয়ার্সের হিলা, মহুয়া ছাড়াও পাহাড়ের রঙ্গেরঙ্গ, রংমুখ সিডার ও পেন্ডাম বাগান বেসরকারিকরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে পর্ষদ। সূত্রের খবর, পাহাড়ের তিনটি চা বাগানের দায়িত্ব দার্জিলিঙের একটি চা বাগান কর্তৃপক্ষকে দেওয়া হচ্ছে। ওই সংস্থার অধিকর্তা অনিল বনশাল বলেন, “আরও বেশ কয়েকটি সংস্থা দরপত্র জমা দিয়েছিল। তবে আমাদেরকেই মনোনীত করা হয়েছে। পুরো প্রক্রিয়া শেষ হতে এখনও কিছুদিন বাকি।”
সরকারি সিদ্ধান্তের বিরোধিতা শুরু হয়েছে পাহাড়েও। সিপিআরএম প্রভাবিত চা শ্রমিক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণবাহাদুর সুব্বা বলেন, “কোন শর্তে দরপত্র হয়েছে তা জানি না। তবে রাজ্য সরকারের হাতেই দায়িত্ব থাকলে ভাল হত। নতুন যে সংস্থা পরিচালনার দায়িত্ব নেবে, তারা পুরোনো সব বকেয়া পরিশোধের লিখিত আশ্বাস না দিলে আন্দোলন হবে।”