শিক্ষকের গাড়ি চালানো শিখতে গিয়ে গাড়ির ধাক্কায় তিনছাত্রীর জখম হওয়ার ঘটনায় আলোড়ন ছড়িয়েছে মালবাজারের সব মহলেই। আহত ছাত্রীদের অভিভাবকেরা কোনও অভিযোগ করতে না চাইলেও পুরো বিষয়টি ঠিক কী ভাবে ঘটেছিল তা জানতে এ বার পুলিশ তদন্তের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মালবাজারের এসডিপিও নিমা ভুটিয়া বলেন, “আমাদের কাছে কোনও লিখিত অভিযোগ আসেনি। তবে মালবাজার থানার পুলিশকে দুর্ঘটনার বিষয়টি সম্পর্কে বিশদে খোঁজ নিতে বলা হয়েছে।” কিন্তু, ঘটনার দু’দিন পরেও স্কুল কর্তৃপক্ষ পরিচালন সমিতির বৈঠক ডেকে কড়া পদক্ষেপ করছে না কেন, প্রশ্ন উঠেছে তা নিয়েও।
যে শিক্ষক গাড়ি চালাতে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে অভিযোগ, সেই বিমলেন্দু নাথ ভৌমিকের সঙ্গে বৃহস্পতিবারেও যোগাযোগ করা যায়নি। একাধিক বার মোবাইলে ফোন করলেও তা বেজে গিয়েছে। তবে স্কুলের অধ্যক্ষ দিলীপ সরকার বলেন, “দ্রুতই স্কুলের পরিচালন সমিতি বৈঠকে বসবে। ওই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
মালবাজার মহকুমা হাসপাতালে প্রথমে আহত ছাত্রীদের নিয়ে যাওয়া হলেও হাসপাতাল থেকেও পুলিশকে জানানো হয়নি। মালবাজারের মহকুমা হাসপাতালের সুপার মাসুদ আলি বলেন, যদি দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে দু-পক্ষই নিজেদের মধ্যে মিটিয়ে নেবার কথা জানায় তাহলে সাধারণ ক্ষেত্রে থানায় জানানো হয় না। তবে এক্ষেত্রে কী হয়েছিল তা জানি না। শুক্রবার হাসপাতালে গিয়ে খোঁজ করে কোন চিকিৎসক দায়িত্বে ছিলেন তা জেনে নিয়ে বিশদে জানাতে পারব।” স্কুলের একাধিক শিক্ষক জানান, তাঁরাও ঘটনাটি পুলিশে নথিভুক্ত করার পক্ষে।
এ ছাড়া দুর্ঘটনার পরেও ওই অভিভাবকেরাও কেন চুপ রয়েছেন, তা নিয়েও পাল্টা সরব হয়েছে স্কুলেরই প্রাক্তন ছাত্রছাত্রীরা। দুর্ঘটনার পরে স্কুল চিকিৎসার ব্যবস্থা করলেও মালবাজার থানায় ঘটনার কোনও বিবরণই জানানো হয়নি কেন তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। এই ঘটনা নিয়ে ‘ফেসবুকে’ সরব হয়েছেন স্কুলের প্রাক্তন পড়ুয়ারা। স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র অরিজিৎ বিশ্বাস প্রথম পুরো ঘটনার বিবরণ দিয়ে প্রতিবাদে জানান। এর পরে স্কুলের পুরনো ছাত্রছাত্রীরাও অরিজিতের থেকে জেনে তাঁরাও প্রতিবাদে সামিল হন। অরিজিৎ বলেন, “স্কুলের শিক্ষক গাড়ি চালানো শিখতে গিয়ে ছাত্রীদের জখম করেছেন। এটার প্রতিবাদ হওয়া দরকার। অভিভাবকেরা প্রতিবাদ করলে অন্তত স্কুল কর্তৃপক্ষ অনেক বেশি সতর্ক ও সচেতন হতেন। আমরা তাই জোট বেঁধেছি।” স্কুলের পরিচালন সমিতির সদস্য মানস দত্ত এ দিন বলেন পুরো ঘটনাই নিন্দনীয়।” মালবাজারের মহকুমাশাসক জ্যোতির্ময় তাঁতি বিষয়টি পুলিশকে জানানোর প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করেন। মালবাজারের বিদ্যালয় পরিদর্শক আধিকারিক বলিয়াস এথান সুব্বাও বলেন, “এ ধরনের ঘটনা প্রশাসনিক স্তরে জানানো প্রয়োজন।”