জিএনএলএফের নেতা হলেন ঘিসিঙ্গের ছেলে

সুবাস ঘিসিঙ্গের পথেই ষষ্ঠ তফসিলের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার কথা ঘোষণা করল জিএনএলএফ। সোমবার দার্জিলিঙের জাকির হোসেন রোডে ঘিসিঙ্গের বাড়িতেই দলের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক হয়। সেখানে দার্জিলিং, কার্শিয়াং এবং কালিম্পং মহকুমার বিভিন্ন দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা উপস্থিত ছিলেন। আর এই সভার মাধ্যমেই বাবার শেষকৃত্যের ২৪ ঘন্টার মধ্যে নিজের রাজনৈতিক জীবন শুরু করে দিলেন প্রয়াত জিএনএলএফ নেতা সুবাস ঘিসিঙ্গের ছেলে মোহন ঘিসিঙ্গ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দার্জিলিং শেষ আপডেট: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০০:৪৩
Share:

লিখিত ভাবে আন্দোলনের ঘোষণা করলেন মোহন। ছবি: রবিন রাই।

সুবাস ঘিসিঙ্গের পথেই ষষ্ঠ তফসিলের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার কথা ঘোষণা করল জিএনএলএফ।

Advertisement

সোমবার দার্জিলিঙের জাকির হোসেন রোডে ঘিসিঙ্গের বাড়িতেই দলের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক হয়। সেখানে দার্জিলিং, কার্শিয়াং এবং কালিম্পং মহকুমার বিভিন্ন দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা উপস্থিত ছিলেন। আর এই সভার মাধ্যমেই বাবার শেষকৃত্যের ২৪ ঘন্টার মধ্যে নিজের রাজনৈতিক জীবন শুরু করে দিলেন প্রয়াত জিএনএলএফ নেতা সুবাস ঘিসিঙ্গের ছেলে মোহন ঘিসিঙ্গ। এই প্রথম নিজেকে জিএনএলএফের সভাপতি বলে আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষণা করেন তিনি।

বাবার মতোই নিজের নামও তিনি ছোট করে নিয়েছেন। ‘মোহনে’র পরিবর্তে তিনি এখন থেকে মন ঘিসিঙ্গ নামে পরিচিত হবেন বলে লিখিত ভাবে জানিয়েছেন।

Advertisement

উল্লেখ্য, সুবাস ঘিসিঙ্গের এক সময় নাম ছিল সেহরাব ঘিসিঙ্গ। পরে তিনি সুবাস ঘিসিঙ্গ নামে লেখালেখির মাধ্যমে নিজের নাম পরিবর্তন করেন। আর পার্বত্য পরিষদের চেয়ারম্যান থাকাকালীন তো বটেই, লোকসভা ভোট বয়কট থেকে কাউকে সমর্থন, জীবনের অধিকাংশ রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ঘিসিঙ্গ লিখিত বিবৃতির মাধ্যমেই সংবাদ মাধ্যমের কাছে তুলে দিতেন। মনও ওই পথেই হাঁটা শুরু করলেন। যদিও সুবাস ঘিসিঙ্গের ছবি তোলাতে আপত্তি থাকলেও মন তা নিয়ে অবশ্য সংবাদ মাধ্যমকে নিরাশ করেননি।

গত বছর লোকসভা নির্বাচনের আগে ৪ এপ্রিল সুবাস ঘিসিঙ্গ শেষবারের মতো প্রেস রিলিজ দিয়ে তৃণমূলকে সমর্থনের কথা ঘোষণা করেছিলেন। সেখানে বলা হয়েছিল, ১৯৮৮ সালের ২২ অগস্ট দীর্ঘদিনের আন্দোলন পর সাংবিধানিক স্বীকৃতির মাধ্যমে পার্বত্য পরিষদ মিলেছিল। যার মাধ্যমে পাহাড়ের স্বায়ত্তশাসন শুরু হয়েছিল। যতদিন ষষ্ঠ তফশিল বিল রাজ্যসভা এবং লোকসভায় পাস না হচ্ছে, ততদিন পার্বত্য পরিষদকে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিও জানান ঘিসিঙ্গ। তার পরেই তৃণমূল প্রার্থী ভাইচুং ভুটিয়াকে সমর্থনের কথা বলে দলীয় কর্মী সমর্থকদের তৃণমূলের পক্ষে ভোট দেওয়ার কথা বলেছিলেন ঘিসিঙ্গ। তবে সেবারও শারীরিক অসুস্থতার কথা বলে তিনি সাংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেননি। তবে গত ৫ এপ্রিল তিনি কোনও শর্ত ছাড়াই তৃণমূলকে সমর্থন করেছেন বলে শেষবারের মতো প্রকাশ্যে কথা বলেছিলেন। তিনি ২০১১ সালের মাঝমাঝি মিরিকে শেষবার জনসভা করেছিলেন।

এদিন জিএনএলএফের তরফে জানানো হয়েছে, সুবাস ঘিসিঙ্গের শেষবার সংবাদমাধ্যমে ঘোষণাকে সামনে রেখেই আন্দোলনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। আগামী দিনে রণনীতি, কর্মসূচি তৈরি হলেই মন ঘিসিঙ্গ তা ঘোষণা করবেন। তিনি জানিয়েছেন, ৩১ জানুয়ারি এবং ১ ফেব্রুয়ারি এই দুই দিন প্রয়াত নেতার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সাধারণ পাহাড়বাসীর পাশাপাশি সমস্ত ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছিল। এ জন্য আমি সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। দলের প্যাডে নেপালিতে লেখা বিবৃতিতে মন লিখেছেন, ‘আমি জাতীয় এবং আঞ্চলিক সকল দলকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। বিশেষ করে সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী পবন চামলিংকে। বিশেষ করে তিনি তাঁর ব্যস্ত সময়ের মধ্যে যে ভাবে প্রয়াত জিএনএলএফ নেতাকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে এসেছিলেন, তাতে আমি কৃতজ্ঞ।’

এদিন দুপুরে জাকির হোসেন রোডের বাড়িতে দলের নেতারা নতুন সভাপতির লিখিত বিবৃতি সংবাদমাধ্যমের হাতে তুলে দেন। তাঁরাই জানিয়ে দেন, এখনও শোকের আবহ রয়েছে। তাই নতুন সভাপতি কোনও কথা বলবেন না। আপাতত তিনি যা বলার সব লিখিত আকারে দিয়ে দিয়েছেন। জিএনএলএফ নেতারা যখন এ কথা বলছেন, সেই সময় ওই ঘরেই এককোণে বাবার মতো বেতের চেয়ারে বসে থাকতে দেখা দিয়েছে মন ঘিসিঙ্গকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন