আজ আমাদের সেমেস্টারের মৌখিক পরীক্ষা ছিল। ১১টার মধ্যেই কলেজে পৌঁছে গিয়েছিলাম। পরীক্ষা দেড়টার মধ্যে শেষ হয়ে যায়। তারপরে কলেজের ফাঁকা চত্বরেই বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছিলাম। হঠাৎ দুপুর আড়াইটে নাগাদ কলেজের ইউনিয়ন রুমের সামনে থেকে চেঁচামেচি-হইচই শুনতে পাই। সবাই মিলে দৌড়ে যাই। দেখি আমাদেরই বন্ধু, সহপাঠী অভিজিৎ সাহা রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে পড়ে রয়েছে। মাথা থেকে অঝোরে রক্ত ঝরছে। মেরে ওর মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে আমাদের কলেজেরই একদল ছাত্র। তারাও আমাদের মতোই তৃণমূল ছাত্র পরিষদেরই সদস্য। অভিজিৎকে বাঁচাতে যেতেই আমাকেও মারধর শুরু করে দেয় ওরা। কোনওমতে আমরা পালিয়ে আসি। আমার বাঁ হাতে লাঠি দিয়ে জোরে মেরেছিল ওরা। লাঠিটা অবশ্য চালিয়েছিল মাথা লক্ষ করে। হাত দিয়ে কোনওমতে ঠেকাই। যারা মেরেছিল তারা আমাদের কলেজেই প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষেই পড়ে। আমরা সবাই ছিলাম খালি হাতে। ওরা অবশ্য দল বেঁধে লাঠি, লোহার রড, পাইপ নিয়ে আমাদের উপরে চড়াও হয়। তবে ওরা এটা পরিকল্পনা করেই করেছে। কারণ, আমি শুনেছি মঙ্গলবার আমাদের বন্ধু অর্পণ মোহান্ত ও হাসান রেজা—এই দু’জন বালুরঘাটে সাড়ে তিন নম্বর মোড় এলাকায় একটি সেলুনে গেলে ওরা কটূক্তি ও অপমান করেছিল। সে কারণেই আজ পরীক্ষার পরে অভিজিৎ কয়েকজনকে নিয়ে ওদের কাছে জানতে গিয়েছিল, কেন ওরা আমাদের কলেজের বাইরে ও ভাবে অপমান করেছিল! আমরা কলেজে ওদের থেকে সিনিয়র হওয়া সত্ত্বেও ওরা এমন কেন করেছে, সেটাই জানতে গিয়েছিল অভিজিৎ। তখনই ওরা অভিজিতকে ফেলে মারে। আমাদেরই সংগঠনের ছেলেরা, যারা আবার আমাদের জুনিয়র, তারা এ ভাবে আমাদের মারল কেন?