হলদিবাড়ি

জামিন খারিজ ধর্ষণে অভিযুক্ত নেতার

জামিনের আবেদন খারিজ হয়ে গেল চাকরির টোপ দিয়ে দিনের পর দিন এক কলেজ ছাত্রীকে সহবাসে বাধ্য করানোর মামলায় অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা সহিদুল আলমের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০১৪ ০২:৩৯
Share:

জামিনের আবেদন খারিজ হয়ে গেল চাকরির টোপ দিয়ে দিনের পর দিন এক কলেজ ছাত্রীকে সহবাসে বাধ্য করানোর মামলায় অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা সহিদুল আলমের।

Advertisement

শুক্রবার কোচবিহার জেলা ও দায়রা বিচারক রবীন্দ্রনাথ সামন্তের এজলাসে জামিনের আবেদন করেন অভিযুক্তের আইনজীবী। সরকারি আইনজীবী শীর্ষেন্দু বসুনিয়া ওই জামিনের বিরোধিতা করেন। আদালত সূত্রের খবর, অভিযোগের গুরুত্ব বিচার করে বিচারক ওই অভিযুক্তের জামিনের আবেদন নাকচ করে দেন।

অভিযুক্ত সহিদুল বর্তমানে মেখলিগঞ্জ জেলে বন্দি রয়েছেন। তিনি মেখলিগঞ্জ এসিজেএম কোর্টেও কিছুদিন আগে জামিনের আবেদন করেছিলেন। সেখানেও জামিনের আবেদন খারিজ করে দেন বিচারক। এর পরেই জেলা আদালতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন অভিযুক্তের আইনজীবী। অভিযোগকারিণীর পরিবারের তরফে কয়েকদিন আগে অভিযোগ করা হয়, ১০ লক্ষ টাকার বিনিময়ে মামলা মিটিয়ে নেওয়ার জন্য তাঁদের উপর সহিদুল ঘনিষ্ঠরা চাপ তৈরি করছিল। সহিদুল জামিন পেলে তাঁদের উপরে চাপ বাড়ত বলে এই ছাত্রীর পরিবারের আশঙ্কা।

Advertisement

সহিদুল একসময় হলদিবাড়ি ব্লক তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তৃণমূল জেলা নেতৃত্ব অবশ্য দাবি করেছেন, দলবিরোধী কাজের অভিযোগে ২০১১ সালে তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। তার পরেও তৃণমূল বিধায়ক অর্ঘ্য রায়প্রধানের ঘনিষ্ঠ হওয়ার সুবাদে ওই এলাকায় সহিদুলের দাপট অক্ষুণ্ণ ছিল। তৃণমূলেরই একাংশের অভিযোগ, অর্ঘ্যবাবুর সুপারিশেই সহিদুলকে হলদিবাড়ি কলেজ পরিচালন সমিতির সদস্য করা হয়।

সরকারি আইনজীবী শীর্ষেন্দুবাবু বলেন, “সমস্ত দিক খতিয়ে দেখার পরে বিচারক ওই অভিযুক্তের জামিনের আবেদন নাকচ করে দেন।” অভিযুক্তের পক্ষে দাঁড়িয়েছিলেন আইনজীবী তথা কোচবিহার জেলার তৃণমূলের সহ সভাপতি আব্দুল জলিল আহমেদ। তিনি অবশ্য বিষয়টি নিয়ে কিছু বলতে চাননি। অভিযুক্তের পক্ষে এক আইনজীবী জানান, জামিনের আর্জি নিয়ে তাঁরা হাইকোর্টে যাবেন।

জেলা ও দায়রা বিচারক রবীন্দ্রনাথ সামন্ত কোচবিহার জেলা আইনি পরিষেবা সমিতির সভাপতি। তাঁর কাছেই দার্জিলিং জেলা লিগাল এড ফোরামের পক্ষ থেকে অভিযোগ জানিয়ে অভিযোগকারিণীর নিরাপত্তার ব্যবস্থা করার জন্য আবেদন করা হয়। পাশাপাশি অভিযোগকারিণীর পরিবার খুব গরিব হওয়ায় তাঁদের বিনামূল্যে আইনি পরিষেবা দেওয়ার জন্য আবেদন করা হয়েছিল। সেই চিঠি পাওয়ার কোচবিহার জেলা পুলিশ সুপার রাজেশ যাদবকে চিঠি দিয়ে অভিযোগকারিণীর নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানানো হয়।

আইনি পরিষেবা সূত্রের খবর, এদিন জেলা বিচারক সমিতির চেয়ারম্যান হিসেবে মেখলিগঞ্জ মহকুমা আইনি পরিষেবা সমিতির চেয়ারম্যানকে চিঠি দিয়ে অভিযোগকারিণীকে বিনামূল্যে আইনি পরিষেবা দেওয়ার নির্দেশ দেন। মেখলিগঞ্জের এসিজেএমকে চিঠি দিয়ে ওই ছাত্রী যেন সবরকম আইনি সহায়তা পান সে ব্যাপারে লক্ষ্য রাখার কথা বলেছেন জেলা আইনি পরিষেবা সমিতির সভাপতি। মেখলিগঞ্জ আইনি পরিষেবা সমিতি থেকে সে ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে ওই ছাত্রী পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন, বছর খানেক আগে কলেজে চতুর্থ শ্রেণির কর্মী পদে নিয়োগের টোপ দেন সহিদুল। সেই কলেজের পরিচালন সমিতির সদস্য ছিলেন সহিদুল। নানা ভাবে টোপ দিয়ে শহিদুল তাঁকে সহবাসে বাধ্য করান বলে তরুণীর অভিযোগ। ২৪ সেপ্টেম্বর সহিদুল ফের তাঁকে ডেকে পাঠালে তিনি মোবাইল ক্যামেরায় পুরো দৃশ্য ভিডিও রেকর্ডিং করে ১৭ সেপ্টেম্বর থানায় অভিযোগ জমা দেন। মোবাইলের ভিডিও ফুটেজ দেখিয়ে থানায় সহিদুলের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা করেন তিনি। পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন