এইমস চেয়ে স্মারকলিপি

জমি অধিগ্রহণের দাবি মমতা, হর্ষবর্ধনকে

রায়গঞ্জে এইমসের ধাঁচে হাসপাতাল তৈরির জন্য জমি অধিগ্রহণের দাবিতে দাবিতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধনের কাছে স্মারকলিপি পাঠাল পশ্চিম দিনাজপুর চেম্বার অফ কমার্স। ওই স্মারকলিপিতে এটাও বলা হয়েছে, কেন্দ্রের আগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রায়গঞ্জেই ওই হাসপাতাল তৈরি করতে হবে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০১৪ ০২:২৯
Share:

জেলাশাসককে স্মারকলিপি চেম্বার অফ কমার্সের। —নিজস্ব চিত্র।

রায়গঞ্জে এইমসের ধাঁচে হাসপাতাল তৈরির জন্য জমি অধিগ্রহণের দাবিতে দাবিতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধনের কাছে স্মারকলিপি পাঠাল পশ্চিম দিনাজপুর চেম্বার অফ কমার্স। ওই স্মারকলিপিতে এটাও বলা হয়েছে, কেন্দ্রের আগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রায়গঞ্জেই ওই হাসপাতাল তৈরি করতে হবে। শুক্রবার দুপুরে সংগঠনের একটি প্রতিনিধি দল রায়গঞ্জের কর্ণজোড়ায় কিছুক্ষণ বিক্ষোভ দেখানোর পর জেলাশাসকের হাতে দুটি স্মারকলিপি তুলে দেন। দ্রুত হাসপাতাল তৈরির স্বার্থে সংগঠনের সদস্যরা জেলাশাসককে অবিলম্বে মুখ্যমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপিগুলি পাঠিয়ে দেওয়ার জন্য জেলাশাসককে আর্জি জানান। জেলাশাসক স্মিতা পান্ডে বলেন, “প্রশাসনের তরফে সংগঠনের দুটি স্মারকলিপি মুখ্যমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে।”

Advertisement

এইমসের ধাঁচে হাসপাতাল তৈরির দাবিতে ইতিমধ্যেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকে নিয়ে রায়গঞ্জ এইমস রূপায়ণ নাগরিক মঞ্চ নামে একটি সংগঠন তৈরি করেছে চেম্বার অফ কমার্স। সংগঠনের তরফে কাল, রবিবার রায়গঞ্জে একটি নাগরিক কনভেনশনেরও ডাক দেওয়া হয়েছে। হাসপাতাল তৈরির দাবিতে ওই কনভেনশন থেকে জেলা জুড়ে টানা পথ অবরোধ, রেল অবরোধ, সাধারণ ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেই সঙ্গে চাষিদের দিয়ে জেলাশাসকের মাধ্যমে লিখিতভাবে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে স্বেচ্ছায় জমি দেওয়ার আবেদন জানানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

এ দিন চেম্বার অফ কমার্সের সদস্যরা জেলাশাসকের কাছে জানান, ২০০৯ সালে কেন্দ্রীয় সরকার ৮২৩ কোটি টাকা খরচে ১০০ একর জমিতে রায়গঞ্জে এইমসের ধাঁচে হাসপাতাল তৈরির কথা ঘোষণা করে। কিন্তু বাম আমলে জমনি অধিগ্রহণ হয়নি। তৃণমূল জমানাতেও সেই কাজ এগোয়নি। সাড়ে পাঁচ বছর ধরে হাসপাতাল তৈরির কাজ আটকে রয়েছে। তাঁদের দাবি, উত্তরবঙ্গবাসীর উন্নত চিকিৎসা পরিষেবা ও জেলার অর্থনীতির উন্নয়নের স্বার্থে হাসপাতাল তৈরির জন্য জেলা প্রশাসনের চিহ্নিত করা পানিশালা এলাকার চাষিরা উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ পেলে স্বেচ্ছায় জমি দিতে প্রস্তুত। রাজ্য সরকার তাঁদের সঙ্গে কথা না বলেই জোর করে জমি অধিগ্রহণ করা হবে না বলে বার বার দাবি করছে বলে কমিটি মনে করে।

Advertisement

এই পরিস্থিতিতে কিছুদিন আগে রাজ্যের প্রস্তাব অনুযায়ী কেন্দ্র নদিয়ার কল্যাণীতে হাসপাতাল তৈরির ব্যাপারে সম্মত হয়েছে। সংগঠনের সদস্যরা এদিন জেলাশাসককে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেন, রায়গঞ্জ থেকে হাসপাতাল তৈরির চক্রান্ত তাঁরা কোনওভাবেই মেনে নেবেন না। অবিলম্বে জমি অধিগ্রহণ করে হাসপাতাল তৈরির কাজ শুরু না হলে সংগঠন ও মঞ্চের তরফে জেলা জুড়ে জঙ্গি আন্দোলন শুরু করা হবে। জেলাশাসক তাঁদের আশ্বস্ত করে জানান, তাঁদের দাবি পূরণের এক্তিয়ার জেলা প্রশাসনের নেই। তাঁদের দাবি মুখ্যমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

চেম্বার অফ কমার্সের সম্পাদক জয়ন্ত সোম বলেন, “সরকারি পদ্ধতি মেনে জেলাশাসকের মাধ্যমে আমরা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে জমি অধিগ্রহণের দাবি জানালাম। কয়েকদিনের মধ্যে পানিশালা এলাকার চাষিরাও জেলাশাসকের মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে স্বেচ্ছায় জমি দেওয়ার আবেদন জানাবেন। এর পরেও রাজ্য সরকার জমি অধিগ্রহণ না করে মনগড়া জমি অধিগ্রহণ সমস্যা বললে জেলার সরকারি কাজকর্ম অনির্দিষ্টকালের জন্য অচল করে আন্দোলনে নামা হবে।”

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক শঙ্কর কুন্ডু জানান, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কাছে তাঁরা কেন্দ্রের আগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রায়গঞ্জেই এইমসের ধাঁচে হাসপাতাল তৈরির দাবি জানিয়েছেন। তাঁর দাবি, জমি অধিগ্রহণে কোনও সমস্যা নেই জেনেই কেন্দ্রের ইউপিএ-১ সরকার রায়গঞ্জে এইমসের ধাঁচে হাসপাতাল তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। তাঁর কথায়, “আমরা কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে সে কথাই বিশদে জানিয়েছি। বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার অবিলম্বে রাজ্যের সঙ্গে সমন্বয় করে আগের সেই সিদ্ধান্ত কার্যকরী না করলে কেন্দ্রীয় সরকারের সমস্ত সরকারি দফতরও অনির্দিষ্টকালের জন্য অচল করে আমরা আন্দোলনে নামতে বাধ্য হব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন