রাজ্য সরকার জমি দিয়ে সহযোগিতা করলে রায়গঞ্জে এইমসের ধাঁচে হাসপাতাল তৈরি করতে কেন্দ্রের আপত্তি নেই বলে দাবি করলেন বিজেপি বিধায়ক শমীক ভট্টাচার্য। সম্প্রতি বসিরহাটের বিধায়ক হিসেবে নির্বাচিত হওয়ায় রবিবার বিজেপির উত্তর দিনাজপুর জেলা কমিটির তরফে শমীকবাবুকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
রায়গঞ্জের ইনস্টিটিউট মঞ্চে ওই অনুষ্ঠানে শমীকবাবু বলেন, “রায়গঞ্জে এইমসের ধাঁচে হাসপাতাল তৈরি নিয়ে গত পাঁচ বছর ধরে প্রচুর রাজনীতি হয়েছে। বিজেপি চায় রায়গঞ্জেই এইমসের ধাঁচে হাসপাতাল তৈরি হোক। তবে রাজ্য সরকার জমি অধিগ্রহণ না করলে তো কেন্দ্রের পক্ষে হাসপাতাল তৈরি করা সম্ভব নয়। রাজ্য জমি দিয়ে সহযোগিতা করলে রায়গঞ্জে এইমসের ধাঁচে হাসপাতাল তৈরিতে কেন্দ্রের কোনও আপত্তি নেই।”
উল্লেখ্য, বিজেপি কেন্দ্রের ক্ষমতায় আসার পরে রাজ্য সরকার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধনকে রায়গঞ্জের বদলে নদিয়ার কল্যাণীতে এইমসের ধাঁচে হাসপাতাল তৈরির প্রস্তাব দিয়ে জমি দিতে চেয়েছে। কেন্দ্র তাতে সম্মতিও প্রকাশ করে। এ বিষয়ে শমীকবাবুর বক্তব্য, “রাজ্য সরকার রায়গঞ্জে জমি অধিগ্রহণ না করলে কেন্দ্র তো জোর করে জমি নিতে পারে না।”
দলের তরফে এ দিন শমীকবাবুকে সংবর্ধনা দেন বিজেপির জেলা সভাপতি শুভ্র রায়চৌধুরী, জেলা সাধারণ সম্পাদক শঙ্কর চক্রবর্তী-সহ অন্য নেতারা। সংবর্ধনার পরে বক্তৃতায় তিনি দাবি করেন, “রাজ্যে একমাত্র বিরোধী দল হিসেবে বিজেপির স্বীকৃতি পাওয়া এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা।” তিনি জানান, আগামী বিধানসভা নির্বাচনে এককভাবে লড়বে বিজেপি।
রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়েও এ দিন অভিযোগ তোলেন শমীকবাবু। তাঁর অভিযোগ, “রাজ্য সরকার ও তৃণমূল নেতারা পুলিশকে স্বাধীনভাবে নিজেদের দায়িত্ব পালন করতে দিচ্ছে না। কারণ, পুলিশ ঠিকমতো কাজ করলে বিভিন্ন মামলায় তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা গ্রেফতার হবেন। সে কারণেই রাজ্যজুড়ে আইনশৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে। খুন, ধর্ষণ, বোমাবাজি, গোষ্ঠী-সংঘর্ষ-সহ পুলিশকেও তৃণমূলের মদতপুষ্ট দুষ্কৃতীদের হাতে আক্রান্ত হতে হচ্ছে।” শমীকবাবু এ দিন রায়গঞ্জের এফসিআই মোড় ও কালিয়াগঞ্জের সাহেবঘাটা এলাকায় দু’টি দলীয় কার্যালয়ের উদ্বোধন করেন। রায়গঞ্জ থেকে সাহেবঘাটা যাওয়ার পথে দলের কর্মী সমর্থকেরা কসবামোড়, দুর্গাপুর ও রূপাহার এলাকায় তাঁর গাড়ি আটকে তাঁকে ফুল দিয়ে সংবর্ধনা জানান। দলীয় কর্মসূচিতে যোগ দিতে সন্ধ্যায় তিনি মালদহ রওনা হন।
শমীকবাবুর এ দিনের রায়গঞ্জ ও কালিয়াগঞ্জ সফরকে কটাক্ষ করেছেন জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা রাজ্যের পরিষদীয় সচিব অমল আচার্য। তাঁর অভিযোগ, “বিজেপি কেন্দ্রের ক্ষমতা দখল করার পর রাজ্যজুড়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার রাজনীতি শুরু করেছে। তাই বাসিন্দারা শমীকবাবুদের অপপ্রচার ও উস্কানিমূলক বক্তব্যে প্রভাবিত হবেন না।”