টোটো কিশোরীর পাশে নেই অনগ্রসর দফতর

টোটো সম্প্রদায়ের কিশোরীকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ আগেই উঠেছিল। কিন্তু তার দু’দিন পরেও অনগ্রসর কল্যাণ দফতরের কোনও প্রতিনিধি পরিবারের পাশে না দাঁড়ানোয় তৈরি হয়েছে ক্ষোভ। শুধু তাই নয়, স্থানীয় পঞ্চায়েতও বিষয়টি নিয়ে উদাসীন বলে অভিযোগ উঠেছে। এই প্রথম ওই সম্প্রদায়ের কোনও মেয়ের উপরে নির্যাতনের অভিযোগ ওঠায় নানা মহলে ব্যাপক চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ফালাকাটা শেষ আপডেট: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০০:৫৭
Share:

টোটো সম্প্রদায়ের কিশোরীকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ আগেই উঠেছিল। কিন্তু তার দু’দিন পরেও অনগ্রসর কল্যাণ দফতরের কোনও প্রতিনিধি পরিবারের পাশে না দাঁড়ানোয় তৈরি হয়েছে ক্ষোভ। শুধু তাই নয়, স্থানীয় পঞ্চায়েতও বিষয়টি নিয়ে উদাসীন বলে অভিযোগ উঠেছে।

Advertisement

এই প্রথম ওই সম্প্রদায়ের কোনও মেয়ের উপরে নির্যাতনের অভিযোগ ওঠায় নানা মহলে ব্যাপক চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। শনিবার দার্জিলিং জেলা লিগাল এইড ফোরামের পক্ষে সব রকম আইনি সাহায্য দেওয়ার কথা জানিয়ে দেওয়া হয়। বিষয়টি নিয়ে জাতীয় মহিলা কমিশনের হস্তক্ষেপের দাবি করেছেন একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরা। নির্যাতিতার পরিবারের পাশে কেন এত দিনেও অনসগ্রসর কল্যাণ দফতর দাঁড়াল না, তা নিয়ে তাঁরা ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। সংগঠনের সম্পাদক রাতুল বিশ্বাসের বলেন, “টোটোরা অত্যন্ত নীরিহ প্রকৃতির মানুষ। ওই পরিবারের পাশে সবার আগে রাজ্যের অনগ্রসর কল্যাণ দফতরের দাঁড়ানো উচিত। তারা কেন এখনও চুপ, বুঝতে পারছি না।” আজ সোমবার ‘আলিপুরদুয়ার মানবিক মুখে’র পক্ষেও চিঠি পাঠিয়ে মহিলা কমিশনের হস্তক্ষেপের দাবি করা হবে বলে সংস্থার পক্ষে জানানো হয়।

রবিবার সংবাদ মাধ্যমের কাছে ঘটনার খবর পান রাজ্যের অনগ্রসর কল্যাণ মন্ত্রী উপেন বিশ্বাস। কেন তাঁর দফতরের কোনও প্রতিনিধি টোটোপাড়ায় যাননি, সে বিষয়ে খোঁজ নেবেন বলে জানান তিনি। পাশাপাশি দ্রুত ওই পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর জন্য সোমবারই তিনি আধিকারিকদের নির্দেশ দেবেন বলেও জানিয়ে দেন।

Advertisement

কিশোরীর বাবা বলেন, “আমার মেয়ের যা ক্ষতি হয়েছে, তা কিছুতে মানতে পারছি না। অভিযুক্তের যাতে উপযুক্ত শাস্তি হয়, সেই দাবি করছি। কোনও সরকারি প্রতিনিধি কেন ঘটনার পর খোঁজ নিতে এলেন না কেন তা বুঝতে পারছি না।”

তবে টোটোপাড়া-বল্লালগুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য রূপচাঁদ টোটো অবশ্য বলেন, “আমরা সব সময়ে ওই পরিবারের পাশে রয়েছি। পঞ্চায়েতের তরফে কী ভাবে তাঁদের আরও সাহায্য করা যায়, আমরা আলোচনা করব।”

শুক্রবার দুপুরে ওই প্রতিবন্ধী কিশোরীর বাড়িতে লটারি বিক্রি করতে আসে অর্জুন দাস নামে এক যুবক। ঘরে একা পেয়ে কিশোরীকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ ওঠে মাদারিহাটের বাসিন্দা ওই যুবকের বিরুদ্ধে। পরে মূক ও বধির ওই কিশোরী তার বাবাকে সব কথা জানালে টোটোপাড়ার বাসিন্দারা অভিযুক্তকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেন। জেলার এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, “কিশোরীর ডাক্তারি পরীক্ষা হয়েছে। প্রয়োজনে অর্জুনেরও ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য আদালতের কাছে অনুমতি চাওয়া হবে।” অসুস্থ ওই কিশোরীকে শনিবার বীরপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। জলপাইগুড়ির মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রকাশ মৃধা বলেন, “ভবিষ্যতেও ওই কিশোরীর কাউন্সেলিং-এর প্রয়োজন হলে সে বিষয়ে সাহায্য করব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন