জেলায় এনসেফ্যালাইটিসের সংক্রমণ চললেও, কোচবিহারের তৃণমূল সাংসদ কেন এতদিন জেলার বাইরে ছিলেন তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিরোধী দলগুলি। চলতি মাসের মাঝামাঝি থেকে কোচবিহারেও রোগ সংক্রমণ শুরু হয়েছে। জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় সাড়ে তিন হাজার বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে শনিবার তৃণমূল সাংসদ রেণুকা সিংহ জেলায় পৌঁছেছেন। এ দিনই এনসেফ্যালাইটিস নিয়ে উত্তরকন্যায় স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে প্রশাসনিক কর্তাদের বৈঠকে জনপ্রতিনিধিদের ডাকা হলেও,কোচবিহারের সাংসদ সেখানে উপস্থিত ছিলেননা বলে জানা গিয়েছে। তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে বিজেপি। যদিও সাংসদের দাবি, এতদিন জেলায় না এলেও দিল্লিতে এনসেফ্যালাইটিস নিয়ে তিনি দলের অন্য সাংসদদের সঙ্গে যৌথভাবে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কাছে দরবার করেছেন। তারপরেই বিজ্ঞানীদের দল উত্তরবঙ্গে এসেছে।
সাংসদ বলেন,“সংসদে জেলার পরিস্থিতি তুলে ধরেছি। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দলীয় সাংসদরা সবাই মিলে কথা বলেছি। এর পরেই কেন্দ্রীয় বিশেষজ্ঞ দল উত্তরবঙ্গে এসেছে । এখন দু’দিন থাকব কয়েক জায়গায় ঘুরব।” সাংসদকে সমর্থন করে তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা পূর্ত দফতরের পরিসদীয় সচিব রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “অধিবেশন থাকায় সাংসদ দিল্লিতে ছিলেন। সংসদে জেলার গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরেছেন।”
সংসদের অধিবেশন শেষের পরেও কেন কোচবিহারের সাংসদ জেলার বাইরে ছিলেন সে প্রশ্ন তুলেছেন বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক নিখিল রঞ্জন দে। তাঁর অভিযোগ “জেলায় এনসেফ্যালাইটিস আক্রান্ত বাসিন্দারা হাসপাতালে ভর্তি। এখনও বিষয়টিকে সঠিক ভাবে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না। সাংসদ দিল্লিতে বসে রয়েছেন। সেখানেও কিছু বলতে পারছেন না আবার কোচবিহারের মানুষের পাশেও থাকছেন না।” স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, জেলায় এনসেফেলাইটিস ও তার উপসর্গ নিয়ে ইতিমধ্যে ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা সাড়ে তিন হাজারেরও বেশি। ৬৫ জন উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে ভর্তি রয়েছেন।
পরিস্থিতি পর্যালোচনায় শনিবার কোচবিহারের অতিরিক্ত জেলাশাসক চিরঞ্জীব ঘোষ,পদস্থ স্বাস্থ্যকর্তাদের নিয়ে মহকুমাশাসকদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্স করেন। তুফানগঞ্জ-১ ও ২ নম্বর ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকেও পঞ্চায়েত সমিতি, গ্রাম পঞ্চায়েত ও ব্লক পর্যায়ের স্বাস্থ্য কর্তাদের নিয়ে বৈঠক করা হয়। প্রশাসন সূত্রের খবর, প্রতিটি বৈঠকেই সচেতনতা বাড়ানোর উপরে জোর দেওয়া হয়েছে। প্রাথমিক ও হাইস্কুলগুলিতে প্রচারপত্র বিলি, আলোচনা চক্রের মাধ্যমে রোগের নানা দিক তুলে ধরার নির্দেশ দেওয়া হয়। তুফানগঞ্জের নাটাবাড়ি হাইস্কুলে শনিবার চিকিৎসকদের নিয়ে আলোচনাচক্রও হয়। জেলায় জ্বরে আক্রান্তদের রক্ত পরীক্ষার জন্য দুই লক্ষ কিট বরাদ্দের আর্জি জানিয়েছেন জেলাশাসক পি ঊল্গানাথন। জেলাশাসক বলেন, “কিট পেলে জেলাতেই বাসিন্দারা রক্ত পরীক্ষার সুযোগ পাবেন।”