তিন বছরেও হয়নি রাজ-অস্ত্র প্রদর্শশালা

তিন বছর আগে কোচবিহার রাজবাড়ির অস্ত্র-সম্ভার আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া কর্তৃপক্ষের হাতে দেয় জেলা প্রশাসন। এত দিনেও ওই অস্ত্র সম্ভার প্রদর্শনের জন্য আমর্স গ্যালারি তৈরির কাজ শেষ হয়নি। এক বছরের বেশি আগে কাজ শুরু হলেও চালু হয়নি ‘কয়েন গ্যালারি’। কোচবিহারের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হতে পারে, এমন দুটি গ্যালারি তৈরির ঢিমেতালে চলায় বাসিন্দাদের ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ২৬ জুলাই ২০১৪ ০২:০৭
Share:

তিন বছর আগে কোচবিহার রাজবাড়ির অস্ত্র-সম্ভার আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া কর্তৃপক্ষের হাতে দেয় জেলা প্রশাসন। এত দিনেও ওই অস্ত্র সম্ভার প্রদর্শনের জন্য আমর্স গ্যালারি তৈরির কাজ শেষ হয়নি। এক বছরের বেশি আগে কাজ শুরু হলেও চালু হয়নি ‘কয়েন গ্যালারি’। কোচবিহারের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হতে পারে, এমন দুটি গ্যালারি তৈরির ঢিমেতালে চলায় বাসিন্দাদের ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

Advertisement

এএসআই সূত্রেই জানা গিয়েছে, রাজবাড়ির দোতলার এক ঘর রাজাদের অস্ত্র প্রদর্শনের জন্য গ্যালারি তৈরির জন্য চিহ্নিত করা হয়েছে। কাঠ ও কাচ দিয়ে সেখানে অস্ত্রশস্ত্র সাজিয়ে রাখার আলমারি হচ্ছে। নিশ্চিদ্র নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করার কথা মাথায় রেখে ওই ঘরে জানালা রাখা হচ্ছে না। একটিমাত্র দরজা দিয়ে যাতায়াত করতে হবে। ছয় মাস আগে ওই গ্যালারি ঘর তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে এর জন্য ১২ লক্ষ টাকা খরচ ধরা হয়েছে। পাশেই দোতলার অন্য একটি ঘরে রাজ আমলের মুদ্রা প্রদর্শনের জন্য কয়েন গ্যালারির প্রক্রিয়া তুলনামূলক ভাবে অনেকটা এগিয়েছে। ৪টি বিশাল আলমারির কাজ শেষ। ঘর সংস্কারে জন্য বরাদ্দ না মেলায় সমস্যা হয়েছে।

রাজবাড়ির এক আধিকারিকের কথায়, ২০১৩ সালে প্রথমে আর্মস গ্যালারির জন্য আর্থিক বরাদ্দ মেলে। গত মার্চের আগে টেন্ডার হয়। কিন্তু ওই আর্থিক বছরে কাজ সম্পূর্ণ হওয়া অনিশ্চয়তা থেকে টাকা ফেরত যায়। নতুন আর্থিক বছরে ফের বরাদ্দ দেওয়া হয়। নিরাপত্তার পরিকাঠামো-সহ কিছু বিষয় পুরো ঠিক হয়নি। কোচবিহার হেরিটেজ সোসাইটির পক্ষে সম্পাদক অরূপজ্যোতি মজুমদার বলেন, “গত আর্থিক বছরে ছয় মাস ধরে টাকা পড়ে থাকার পর আর্মস গ্যালারির টেন্ডার হলেও শেষ পর্যন্ত কাজ হয়নি। টাকা ফেরত যায়। এ বারেও কাজের গতি একেবারে কম। কয়েন গ্যালারির ঘর সংস্কার হচ্ছে না। কবে গ্যালারি দুটি চালু হবে তা নিয়ে আমরা সন্দিহান।”

Advertisement

এএসআই ও রাজবাড়ি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ১৮৮৭ সালে মহারাজা নৃপেন্দ্রনারায়ণের আমলে কোচবিহার রাজবাড়ি তৈরি হয়। ১৯৮২ সালে এএসআই রাজবাড়ি অধিগ্রহণ করে। ২০১১ সালের অগস্ট মাসে রাজবাড়ির বিপুল অস্ত্র জেলা প্রশাসন এএসআই কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেয়। হস্তান্তরিত অস্ত্রের তালিকায় ৫৮টি ডবল ব্যারেল বন্দুক, ১৯টি হান্টিং রাইফেল, পিস্তল ও রিভলবার ১০টি, একটি শর্টগান, ৪টি ঢাল, ৪টি মাসকেট, ২টি ভাঙা তির, ১২টি ফাঁকা ম্যগাজিন, ১৫৬ প্যাকেট কার্তুজ ছাড়াও দুই হাজারের বেশি খোলা কার্তুজ রয়েছে।

এএসআই সূত্রের খবর, জেলা ও লাগোয়া এলাকায় রাজ আমলের বেশ কিছু প্রাচীন মুদ্রা উদ্ধার হয়েছে। তার মধ্যে রাজার ছবি, সাল উল্লেখ রয়েছে। সেগুলিও কয়েন গ্যালারিতে থাকবে।

এ নিয়ে কোচবিহারের জেলাশাসক পি উল্গানাথন বলেন, “পুজোর আগে গ্যালারি দুটি চালুর এএসআই কর্তাদের ব্যাপারে অনুরোধ করব।” এএসআই-এর কলকাতা সার্কেলের সুপারিন্টেন্ডেন্ট অশোক পটেল সংবাদমাধ্যমে মন্তব্য করতে চাননি। এএসআইয়ের রাজবাড়ি শাখার আধিকারিক ধীরেন্দ্র কুমার সিংহ ‘সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার অনুমতি নেই’ বলে জানান। রাজবাড়ি সূত্রে খবর, দু’টি গ্যালারি পুজোর আগেই খুলে দেওয়ার চেষ্টা চলছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন