ত্রাণ মেলেনি,ক্ষোভ বিধ্বস্ত এলাকায়

ঝড়ের পর ২৪ ঘন্টা কেটে গেলেও দক্ষিণ দিনাজপুরের দুর্গত এলাকাগুলিতে এখনও ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছায়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, ঝড়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বালুরঘাট ব্লকের জলঘর এবং ভাটপাড়া এলাকা। টিনের চাল উড়ে, দেওয়াল ভেঙে বিধ্বস্ত অধিকাংশ ঘরবাড়ি। অথচ ক্ষতিগ্রস্তদের কাছে এখনও পলিথিন পর্যন্ত পৌঁছয়নি বলে অভিযোগ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বালুরঘাট শেষ আপডেট: ০১ মার্চ ২০১৫ ০১:১১
Share:

৯০০টি বাড়ি আংশিক বা সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিডিও। ছবি: অমিত মোহান্ত।

ঝড়ের পর ২৪ ঘন্টা কেটে গেলেও দক্ষিণ দিনাজপুরের দুর্গত এলাকাগুলিতে এখনও ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছায়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, ঝড়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বালুরঘাট ব্লকের জলঘর এবং ভাটপাড়া এলাকা।

Advertisement

টিনের চাল উড়ে, দেওয়াল ভেঙে বিধ্বস্ত অধিকাংশ ঘরবাড়ি। অথচ ক্ষতিগ্রস্তদের কাছে এখনও পলিথিন পর্যন্ত পৌঁছয়নি বলে অভিযোগ। তাই খোলা আকাশের নিচে রাত কাটাতে বাধ্য হচ্ছেন বাসিন্দারা। জেলাশাসক তাপস চৌধুরী অবশ্য বলেন, “প্রাথমিকভাবে পলিথিন বিলি হয়েছে। ব্লক থেকে ক্ষতির তালিকা তদন্ত করে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে বিদ্যুতের খুঁটি, ইলেকট্রিকের তার ছিঁড়ে পড়ে থাকলেও সেগুলি সরিয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করার জন্য প্রশাসন কোনও উদ্যোগ নেয়নি বলেও বাসিন্দারা নালিশ জানিয়েছেন। ভেঙে পড়া গাছ বিক্রি করা নিয়ে শাসক দলের কর্মী সমর্থকদের মধ্যে বেশি উৎসাহ দেখা গিয়েছে বলে বিরোধীদের অভিযোগ।

Advertisement

এদিন বালুরঘাট শহরের খিদিরপুর শ্মশান এলাকায় ভেঙে পড়া বটগাছের সঙ্গে শ্মশান চত্বরের একটি নিমগাছ নিলাম করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। পুরসভার বিরোধী নেতা আরএসপির সুচেতা বিশ্বাস এই অভিযোগ তুলেছেন। বালুরঘাট পুরসভার চেয়ারপার্সন চয়নিকা লাহা অবশ্য বলেন, “কাউন্সিলারেরা ওই বিষয়টি দেখছেন। অভিযোগ হলে দেখা হবে।

এ দিন জলঘর অঞ্চলের ত্রিকুল এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, গ্রামবাসীরা নিজেদের উদ্যোগে ঝড়ে উড়ে যাওয়া ঘরের টিন খুঁজে নতুন করে ছাউনি দেওয়ার কাজ শুরু করেছেন। ওই গ্রামের কৃষক বিষ্ণু ওঁরাও অভিযোগ করে বলেন, “এখনও পর্যন্ত পঞ্চায়েতের কোনও প্রতিনিধি কিংবা ব্লকের কোনও কর্মী আমাদের এলাকায় খোঁজ নিতেও আসেননি। সাহায্য তো দূরের ব্যাপার।” পাশের তালমন্দিরা গ্রামেরও একই পরিস্থিতি। এখানকার বাসিন্দা বুধন টুডুর কথায়, “উড়ে যাওয়া ঘরের ৯টি টিনের মধ্যে ৫টি খুঁজে পাইনি। ঘরের একটা অংশ ছাউনি দিলেও বাকিটা খোলা। পলিথিন চেয়েও মেলেনি। কি করে রাত কাটবে বুঝতে পারছি না।”

বালুরঘাটের বিডিও শুভ্রজিৎ গুপ্ত বলেন, “প্রায় ৯০০ টি বাড়ি সম্পূর্ণ ও আংশিক ক্ষতি হয়েছে বলে পঞ্চায়েতগুলি থেকে রিপোর্ট এসেছে। ওই রিপোর্ট আমরা জেলা বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরে পাঠিয়ে দিয়েছি। সরেজমিনে তদন্ত করে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হবে। এদিন বালুরঘাট ব্লক থেকে ২০টি পলিথিন ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে বিলি করা হয়। শনিবারেও জেলার বিস্তীর্ণ এলাকা বিদ্যুতবিহীন হয়ে রয়েছে। তপন-বালুরঘাট সড়কে কৃষ্ণনগর এলাকার কাছে রাস্তার উপর গাছ ভেঙে পড়ে থাকলেও বিকেল পর্যন্ত তা সরানোর উদ্যোগ চোখে পড়েনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন