আদালতে তোলা হচ্ছে ধৃত দু’জনকে। সোমবার পিটিআইয়ের তোলা ছবি।
অসমের জঙ্গি হানায় অভিযুক্ত দুই সন্দেহভাজন এনডিএফবি জঙ্গিকে গ্রেফতার করল শামুকতলা থানার পুলিশ এবং স্পেশাল অপারেশন গ্রুপের সদস্যরা। রবিবার সন্ধ্যায় শামুকতলা থানা এলাকার ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কে অপেক্ষারত ওই দুই জঙ্গিকে গ্রেফতার করা হয়। সোমবার সকালে ধৃতদের আলিপুরদুয়ার আদালতে তোলা হয়। এদিন অসমের কচুগাঁও থানার পুলিশ ধৃতদের নিজেদের ট্রানজিট রিমান্ডে নেয়। তবে ধৃতদের পরিবারের দাবি দিল্লিতে কাজের খোঁজে যাচ্ছিল ওই দুই যুবক। পুলিশ তাদের ট্রেন থেকে গ্রেফতার করেছে।
পুলিশ সুত্রে জানাগিয়েছে, ধৃতরা অসমের এনডিএফডি (সংবিজিত গোষ্ঠীর) সদস্য। অসমে সেনা ও পুলিশের টহলদারি জোরদার হওয়ায় এরা ভিন রাজ্যে পালানোর জন্য অসম বাংলা সীমানা পেড়িয়ে শামুকতলা এলকায় চলে আসে। সেখানে থেকে ট্রেন ধরে অন্যত্র যাবার মতলব ছিল। আলিপুরদুয়ারের পুলিশ সুপার অনুপ জায়সবাল জানান, অসম পুলিশ থেকে জানানো হয়েছিল, এনডিএফবি জঙ্গি বাংলা সীমানায় ঢুকতে পারে। তা ছাড়া গোপন সূত্রে খবর পেয়ে এলাকায় নজরদারি শুরু করে পুলিশ। রবিবার সন্ধ্যায় গাঙ্গের বসুমাতারি ও সুদীপ নার্জারিকে সন্দেহের বশে গ্রেফতার করা হয়। দু’জনেরই বাড়ি কোকরাঝাড়ে। তাদের কাছ থেকে কোনও আগ্নেয়াস্ত্র পাওয়া যায়নি। অসমে এদের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে, তা জেরায় ধৃতরা স্বীকার করেছে। সরকারী আইনজীবী মহম্মদ রফি জানান, এদিন ধৃতদের আদালতে তোলা হলে বিচারক অসম পুলিশকে ট্রানজিট রিমান্ড দেয়।
অসমের কচুগাঁও থানা সূত্রে জানা গিয়েছে, ২৪ ডিসেম্বর কচুগাঁও থানার ভরতনগর এলাকায় চার এনডিএফবি জঙ্গি ভোজালি দিয়ে মানসিং মার্ডি নামে এক ব্যক্তিকে খুন করে। ঘটনায় এই দুই জঙ্গিও জড়িত ছিল বলে অভিযোগ। তাদের নামে অসমে ৩০২, ৩৪১ ও ৩৪ ধারায় মামলা রয়েছে।
এদিন আদালতে চত্বরে স্বদীপ নার্জারির বাবা বিরডাঁও নার্জারি বলেন, গত ১ জানুয়ারি তাঁর ছেলে গোসাইগাঁও থেকে কাজের জন্য দিল্লি যাচ্ছিল। সেই রাতেই পুলিশ তাদের ট্রেন থেকে গ্রেফতার করেছে। তাঁরা এখন কচুগাঁও ত্রাণ শিবিরে রয়েছেন। একই দাবি করেন গাঙ্গের বসুমাতারির স্ত্রী-ও। ধৃতদের আইনজীবী বাসুদেব দাস বলেন, “ধৃতদের কাছ থেকে কিছু পাওয়া যায়নি। সন্দেহের বশে তাদের গ্রেফতার করা হয়।”
অসমে সেনা অভিযান জোরদার হওয়ায় এনডিএফবি জঙ্গিরা বিভিন্ন এলাকায় আশ্রয় নিচ্ছে। অসম বাংলা সীমানা পেড়িয়ে জঙ্গিরা আলিপুরদুয়ারে ঢুকতে পারে এমন আশঙ্কা আগে থেকেই ছিল। পুলিশের সে জন্য এক কোম্পানি সিআরপিএফ মোতায়ন ছিল কুমারগ্রাম ও বারবিশা এলাকায়। সম্প্রতি আরও এক কোম্পানি বিএসএফ জওয়ান মোতায়ন করা হয়ছে। এলাকায় আরও জঙ্গি ঢুকেছে কি না, তা নিয়ে পুলিশি নজরদারি শুরু হয়েছে। এনডিএপবি-র এক শীর্ষনেতার মোবাইলের টাওয়ার থেকে সম্প্রতি ধরা পড়েছিল, সে আলিপুরদুয়ারের জয়গাঁ এলাকায় রয়েছে। পুলিশ কর্তাদের একাংশ মনে করছেন, অসম থেকে আলিপুরদুয়ার ঢুকে শামুকতলা, কালচিনি হয়ে ভুটান বা নেপালে যাওয়ার চেষ্টা করতে পারে ওই জঙ্গি গোষ্ঠীর সদস্যরা।