কোচবিহারে আরও দুটি থানা তৈরির জন্য রাজ্য সরকারের কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছে জেলা পুলিশ। কোতোয়ালি থানা ভেঙে পুন্ডিবাড়িতে ও দিনহাটা থানা ভেঙে সাহেবগঞ্জে নতুন থানার প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। সাহেবগঞ্জে থানা হলে বাংলাদেশ সীমান্ত সংলগ্ন দিনহাটা ২ ব্লকে বড় অংশে নজরদারি চালানো যাবে। পুলিশ সুপার অনুপ জায়সবাল বলেন, “জেলা পুলিশের পরিকাঠামোকে শক্তিশালী করার জন্য বেশ কিছু পদক্ষেপ করা হয়েছে।”
স্থানীয় বাসিন্দা ব্যবসায়ীদের দাবি, দু’টি থানা ভেঙে নতুন দু’টি থানা করা অত্যন্ত জরুরি। দিনহাটা থানা থেকে সাহেবগঞ্জ, চৌধুরীহাট, শুকারুরকুঠির মত এলাকায় পুলিশ পৌঁছনোর আগে দুষ্কৃতীরা পালিয়ে যায়। কয়েক মাস আগে দিনহাটার একাধিক ব্যবসায়ীকে কেএলও জঙ্গি পরিচয় দিয়ে ফোন করে টাকা দাবির অভিযোগ ওঠে। কোচবিহার কোতোয়ালি থানা থেকেও চান্দামারি, চিলকির হাট, পুটিমারি-ফুলেশ্বরী, খোলটা মরিচবাড়ি কিংবা আমবাড়ির দূরত্ব প্রায় ২০ কিমি। এই এলাকায় ঢিলেঢালা নজরদারি থাকায় কোচবিহারে চুরিডাকাতি, ছিনতাইয়ের মত নানা অপরাধমূলক ঘটনা ঘটেছে।
দিনহাটা মহকুমা ব্যবসায়ী সমিতি সম্পাদক রানা গোস্বামী বলেন, “বহু দিন আগেই দিনহাটায় আরও একটি থানার দরকার ছিল। সাহেবগঞ্জে নতুন থানার ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রীকেও আর্জি জানিয়েছিলাম।” সেই সঙ্গে এসডিপিও পদমর্যাদার আধিকারিক ও নয়ারহাটে পুলিশের তদন্ত কেন্দ্রটি পূর্ণাঙ্গ থানা তৈরির দাবি উঠেছে। নাগরিক মঞ্চের আহ্বায়ক জয়গোপাল ভৌমিক বলেন, “একটি থানা, পর্যাপ্ত পুলিশ নেই। দুটি এলাকায় গোলমাল হলে আইন শৃঙ্খলা বজায় রাখতে পুলিশ যেতে পারছে না।” তিনি জানান, নানা কাজে চৌধুরীহাটের মত ২২ কিমি দূরের প্রত্যন্ত এলাকা থেকে দিনহাটা থানায় আসতে মানুষের নিত্য দুর্ভোগ হচ্ছে।
কোচবিহার জেলায় ১১টি থানা। তার মধ্যে কোচবিহার কোতোয়ালি ও দিনহাটা থানা বিশাল এলাকা জুড়ে। দুটি ব্লকের ২৮টি গ্রাম পঞ্চায়েত নিয়ে তৈরি থানার এলাকা ৭৪৯ বর্গকিমি। দিনহাটা থানার অধীন ২৮টি গ্রাম পঞ্চায়েতের ৫১৪ বর্গকিমি এলাকা। পুলিশের এক আধিকারিক জানান, দুটি এলাকায় সরকারি জমি রয়েছে। প্রস্তাব অনুমোদন পেলে থানার জমি নিয়ে সমস্যা হবে না। কোচবিহার নাগরিক অধিকার সুরক্ষা মঞ্চের সভাপতি আইনজীবী রাজু রায় বলেন, “অনেক সময় দূরত্বের জন্য পুলিশ যাওয়ার আগে দুষ্কৃতীরা পালাচ্ছে। কোতোয়ালি থানার যা এলাকা তাতে পুন্ডিবাড়ি পূর্ণাঙ্গ থানা করলেও সমস্যা মিটবে না। চান্দামারিতেও দ্রুত একটি পূর্ণাঙ্গ থানা তৈরি করা দরকার।”