দিনভরই যানজট চাঁচলে, উদাসীন পুলিশ-প্রশাসন

রাস্তা দখল করেই যাত্রীর প্রতীক্ষায় সার বেঁধে দাঁড়িয়ে থাকে বাস, ম্যাক্সি, অটো, ট্রেকার থেকে শুরু করে যন্ত্র চালিত সাইকেল ভ্যান। আবার ফুটপাথ জবরদখল করে চলছে হরেক রকমের খাবারের স্টল থেকে জুতো-পোশাকের দোকান।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

চাঁচল শেষ আপডেট: ১২ মে ২০১৪ ০২:৫১
Share:

রাস্তা দখল করেই যাত্রীর প্রতীক্ষায় সার বেঁধে দাঁড়িয়ে থাকে বাস, ম্যাক্সি, অটো, ট্রেকার থেকে শুরু করে যন্ত্র চালিত সাইকেল ভ্যান। আবার ফুটপাথ জবরদখল করে চলছে হরেক রকমের খাবারের স্টল থেকে জুতো-পোশাকের দোকান। ফলে, রাস্তার স্বল্প পরিসরে যাতায়াত করতে গিয়ে থমকে যাচ্ছে যানবাহন। তার মধ্যে দিয়ে গুঁতোগুতি করে যাতায়াত করতে হচ্ছে পথচলতি মানুষ-সহ স্কুল পড়ুয়াদের। যানজটে জেরবার পথে পথচলতি মানুষের সঙ্গে রিকশা, অটো চালকের ঠোকাঠুকি বেঁধে যাচ্ছে। মালদহের চাঁচল মহকুমা সদরের এখন এটাই প্রতিদিনের চিত্র।

Advertisement

শহরের গুরুত্বপূর্ণ সবকটি রাস্তাই সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত যানজটে জেরবার হলেও পুলিশ-প্রশাসনের কোনও রকম হেলদোল নেই বলে অভিযোগ। একাধিক বার যান-বিধি নিয়ন্ত্রণে নানা পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। জবরদখল উচ্ছেদ করা হলেও নজরদারির অভাবে তা মুখ থুবড়ে পড়েছে। তাই যানজট সমস্যা বেড়ে চলেছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। মহকুমাশাসক সঞ্জীব দে বলেন, “ভোট ফুরালেই অভিযান চালানো হবে। এখন নির্বাচন বিধি থাকায় জবরদখল উচ্ছেদ করা যাবে না। সেটা করা না হলে সমস্যা মিটবে না। যন্ত্রচালিত ভ্যান, অটো যাতে না ঢোকে সেটাও দেখা হবে।’’ এসডিপিও পিনাকীরঞ্জন দাস জানান ভোট মিটলে শহর যানজট মুক্ত করতে অভিযান চালানো হবে।

মহকুমা সদর হওয়ায় প্রতিদিন ৬টি ব্লক থেকে নানা কাজে চাঁচলে আসেন বাসিন্দারা। সকাল থেকেই শহরের রাস্তাঘাট কার্যত মানুষের মিছিলে পরিণত হয়। যা শুরু হয় ৮১ নম্বর জাতীয় সড়কের নজরুল ইসলাম বাস টার্মিনাস থেকে। স্বল্প পরিসরের বাস টার্মিনাসে হাতে গোনা কয়েকটি বাস দাঁড়াতে পারে। ফলে অধিকাংশ বাস জাতীয় সড়ক দখল করে দাঁড়িয়ে যাত্রী ওঠানামা করায়। প্রায় একই ভাবে নেতাজি মোড়ের পাশে পুরনো বাসস্ট্যান্ডের রাস্তা দখল করে দাঁড়িয়ে থাকে বাস, অটো, যন্ত্র চালিত সাইকেল ভ্যান। শহরের সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কলেজ রোড ধরেই আদালত, হাসপাতাল, মহকুমাশাসকের দফতর, দুটি স্কুল ও কলেজে পৌঁছতে হয়। সেই রাস্তার দুই পাশেই সকাল থেকেই রাস্তা দখল করে দাঁড়িয়ে থাকে যানবাহন। হাঁটার জো নেই ফুটপাথ দিয়েও। সেখানে চলছে হরেক রকমের ব্যবসা। এমনকী দৃশ্য দূষণের তোয়াক্কা না করে কলেজ রোডের দুপাশে মুরগি ও পাঁঠার মাংস কেটে বিক্রির রমরমা চললেও কারও হেলদোল নেই।

Advertisement

চাঁচল মিনি ট্রাক, ম্যাক্সি ও অটো মালিক সমিতির সম্পাদক রবি ঘোষ এই প্রসঙ্গে বলেছেন, “সব মিলিয়ে ৩০০টি গাড়ি রয়েছে। প্রশাসনকে লিখিত ভাবে স্ট্যান্ডের কথা জানানো হলেও ফল হয়নি। তাই বাধ্য হয়েই যানবাহনগুলিকে রাস্তার পাশে দাঁড়াতে হয়।” জবরদখল সরানোর সঙ্গে যান নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য একাধিক বার প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছে নাগরিক মঞ্চও। মঞ্চের দুই আহ্বায়ক তথা আইএনটিএউসি নেতা দেবব্রত ভোজ ও সিটু নেতা মনোয়ারুল আলম বলেন, যানজটে শহরবাসীর নাভিশ্বাস উঠেছে। পুলিশ-প্রশাসনের হেলদোল দেখছি না। চাঁচল ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক প্রাণগোপাল পোদ্দার বলেন, “যানজট এড়াতে নানা পরিকল্পনা করা হলেও তা বাস্তবে কার্য়কর হয় না। এক সময় শহরে যন্ত্রচালিত ভ্যান, অটো ঢোকা বন্ধ করা হয়েছিল। নজরদারির অভাবে সেই যানবিধি মুখ থুবড়ে পড়েছে। যাদের এ সব নিয়ন্ত্রণ করার কথা তারা হাত গুটিয়ে বসে থাকলে সমস্যা মিটবে কোথা থেকে?”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন