ভক্তিনগর

দীপঙ্কর খুনে বাকিরা ধরা পড়েনি

শিলিগুড়ির সেবক রোডের বাসিন্দা দীপঙ্কর রায় খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত তিনজনকে পালানোর সময় গ্রেফতার করা হয়েছিল। এরপরে দু’দিন কেটে গেলেও আর একজনেরও হদিশ পায়নি পুলিশ। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালানো হলেও কোথাও তাঁদের খুঁজে পাওয়া যায়নি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০১৫ ০২:০৩
Share:

শিলিগুড়ির সেবক রোডের বাসিন্দা দীপঙ্কর রায় খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত তিনজনকে পালানোর সময় গ্রেফতার করা হয়েছিল। এরপরে দু’দিন কেটে গেলেও আর একজনেরও হদিশ পায়নি পুলিশ। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালানো হলেও কোথাও তাঁদের খুঁজে পাওয়া যায়নি। গ্রেফতার হননি ঘটনার পরদিন অভিযুক্তের বাড়িতে আগুন দেওয়া ও জাতীয় সড়ক অবরোধ করে তাণ্ডব চালানোয় অভিযুক্তরাও। তবে এলাকাবাসীদের একাংশের অভিযোগ, প্রভাবশালী তৃণমূল নেতাদের ছত্রছায়ায় থাকার কারণেই তাদের নাগাল পাওয়া যাচ্ছে না। বিরোধীদের দাবি, যে সকল তৃণমূল নেতা ও পুলিশের একাংশ এতদিন অভিযুক্তদের সিণ্ডিকেট চালানো ও তার আড়ালে মাদক ব্যবসায় মদত দিয়েছে, নিজেরা ফেঁসে যাওয়ার আশঙ্কায় নিজেদের প্রভাব খাটিয়ে অভিযুক্তদের গা ঢাকা দিয়ে থাকতে অক্সিজেন জোগাচ্ছে। যদিও তৃণমূল নেতাদের বেশিরভাগই ঘটনার পর থেকে আগেই অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়ে নিজেদের নির্দোষ প্রমাণ করতে মরিয়া।

Advertisement

শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার জগমোহন বলেন, “আশপাশের বিভিন্ন জেলাতে লোক পাঠিয়ে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। তবে এখনও কোনও সূত্র হাতে আসেনি।”

বিজেপির জেলা সভাপতি রথীন বসু অভিযোগ করেন, তৃণমূল পুলিশকে দলদাসে পরিণত করেছে অনেক আগেই। সেবক রোডের যুবক খুনের ঘটনায় তৃণমূলেরই কর্মীরা যুক্ত। তাছাড়া পুলিশের সামনেই গোটা দিন তাণ্ডব চালিয়েছে তৃণমূলি দুষ্কৃতীরা। সে কারণে পুলিশ নিশ্চুপ।” তৃণমূলের রাজত্বে এর চেয়ে বেশি কিছু আশা করা যায় না বলে তিনি মনে করেন। তৃণমূলের লোক হওয়ার কারণেই পুলিশি তদন্তে ঘাটতি হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন দার্জিলিং জেলা বামফ্রন্টের আহ্বায়ক তথা প্রাক্তন পুরমন্ত্রী সিপিএমের অশোক ভট্টাচার্যও। তিনি অভিযোগ করেন, “যে কোনও মৃত্যুই দুঃখজনক। পুলিশ রাজ্য জুড়ে নিজেরাই দর্শক । শিলিগুড়িও তার ব্যতিক্রম নয়।” দার্জিলিং জেলা কংগ্রেস সভাপতি শঙ্কর মালাকার তৃণমূলে আর সিপিএমের গতিবিধিতে পার্থক্য দেখতে পাচ্ছেন না। তিনি বলেন, “পুলিশের কিছু করার নেই। আগে ক্ষমতায় থাকার সময় সিপিএম যা করেছে সেই লোকগুলোই নব্য তৃণমূলি হয়ে একই কাজ করছে।” সুতরাং আলাদা ফল হওয়ার কোনও কারণ দেখছেন না তিনি। খুনের পরে এলাকায় গিয়ে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব, জেলা নেতা কৃষ্ণ পাল, রঞ্জন সরকাররা সিপিএমের উপরে দোষ চাপিয়েছিলেন। মন্ত্রী বলেন, “সিপিএমের দুষ্কৃতীরাই এ কাণ্ড ঘটিয়েছেন। নিহত যুবক তাঁদের সদস্য ছিলেন।” যদিও ওই যুবকের বিরুদ্ধে বধূ নির‌্যাতন, তক্ষক পাচার সহ একাধিক অভিযোগ ছিল।

Advertisement

গত রবিবার ৪ জানুয়ারি রাতে ফোন করে ডেকে নিয়ে গিয়ে কুপিয়ে মাথা থেঁতলে খুন করা হয় সেবক রোডের সরকারপাড়ার বাসিন্দা দীপঙ্কর রায়কে। মাদকের ব্যবসায়ের অংশীদারিত্বের ভাগ নিয়ে বচসাই খুনের কারণ বলে পুলিশ প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছে। ঘটনার খবর জানাজানি হওয়ার পর ভক্তিনগর থানা ঘেরাও, জাতীয় সড়ক অবরোধ সহ এলাকায় অভিযুক্তের বাড়িতে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে। দিনভর উত্তেজনা ছিল এলাকায়। পরে র‌্যাফ নামিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করতে হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন