দুর্নীতি নিয়ে কোচবিহারে ফেসবুকে কাজিয়া দু’নেতার

পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মী নিয়োগের লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষের বিরুদ্ধে ওঠা স্বজনপোষণের অভিযোগকে কেন্দ্র করে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে বিবৃতির লড়াই তুঙ্গে। জেলার দুই নেতা, দিনহাটার বাম বিধায়ক উদয়ন গুহ ও নাটাবাড়ির বিধায়ক রবীন্দ্রনাথবাবুর তরজায় সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট সরগরম।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ২৫ অগস্ট ২০১৪ ০১:৩০
Share:

পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মী নিয়োগের লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষের বিরুদ্ধে ওঠা স্বজনপোষণের অভিযোগকে কেন্দ্র করে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে বিবৃতির লড়াই তুঙ্গে। জেলার দুই নেতা, দিনহাটার বাম বিধায়ক উদয়ন গুহ ও নাটাবাড়ির বিধায়ক রবীন্দ্রনাথবাবুর তরজায় সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট সরগরম।

Advertisement

কয়েকদিন আগে পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর দশটি শূন্যপদে কর্মী নিয়োগের লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে পরীক্ষার্থীদের নাম ও নম্বর জানিয়ে দেওয়া হয়। সফল পরীক্ষার্থীদের তালিকায় রবীন্দ্রনাথবাবুর মেয়ে-সহ এক ঘনিষ্ঠ আত্মীয়র নাম রয়েছে। এর রেশ টেনেই ২১ অগস্ট তৃণমূল জেলা সভাপতির নাম না করে ফরওয়ার্ড ব্লক জেলা সম্পাদক উদয়ন বাবু ফেসবুকে যে ‘স্ট্যাটাস’ দেন তাতে তিনি লেখেন, “সততার প্রতীকে কালি লাগানোর কাজ দিদির ভাইরা আন্তরিকতার সঙ্গে করে যাচ্ছেন। কোচবিহারের ‘বড় ভাই’ নিজের মেয়ে, শ্যালিকার মেয়ে, ছোট-মেজ মোসাহেবদের দশজনের চাকরি বিশ্ববিদ্যালয়ে পাকা করে ফেললেন।” পরদিন ফের তিনি লেখেন, “কোচবিহারের দাদার কীর্তি চাপা দেওয়ার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা হচ্ছে। শাসক দলের নেতারা নিজেরা বাড়ি থেকে বেকার সমস্যা মেটানোর কাজ শুরু করলেন।” তাঁর এই স্ট্যাটাসে ৪০টির বেশি ‘লাইক’ পড়েছে, ‘কমেন্ট’ পড়েছে ১৫টি। এরই উত্তরে রবীন্দ্রনাথবাবুও ফেসবুকে উদয়নবাবুর বিরুদ্ধে সরাসরি তোপ দাগেন। তিনি লেখেন, “উদয়নবাবু বামফ্রন্ট আমলে দিনহাটার গুহ পরিবারের আর কোন কোন সদস্যের চাকরি বাকি আছে বলবেন? আপনার দিদি বোনের চাকরি, আপনার ছেলে, ছেলে বৌয়ের চাকরি, কাকার পরিবারের থেকে ফরওয়ার্ড ব্লক কমরেডদের চাকরি। এইসব দুর্নীতি করে আজ সাধু সাজছেন?” উদয়ন বাবু পাল্টা লিখেছেন, “ঠাকুর ঘরে কে আমি- এমএলএ।”

তৃণমূলের ‘মা-মাটি-মানুষ’স্লোগান নিয়ে ফেসবুকে উদয়নবাবুর করা কটাক্ষ ‘মা-মেয়ে-ফানুস’ নিয়েও তোপ দেগেছেন তৃণমূল জেলা সভাপতি। এ প্রসঙ্গে বাম আমলে বীজ কেলেঙ্কারির অভিযোগ তোলেন তিনি। রবীন্দ্রনাথবাবু লিখেছেন, “খোলসা করে বলবেন, বাম আমলে কে বীজ কেলেঙ্কারির নায়ক ছিলেন?” এর উত্তরে উদয়নবাবু লেখেন,“এই রে, তিরটা ঠিক জায়গা মতো লেগেছে!!!” রবীন্দ্রনাথবাবুর পাল্টা ‘কমেন্ট’-“তির ঠিক জায়গায় ঠিকমতো লাগবে, অপেক্ষা করুন।” রবিবার উদয়নবাবু বলেন, “আমি কারও নাম লিখিনি। রবীন্দ্রনাথবাবু কি তাহলে নিজেকে কোচবিহারের দাদা ভাবছেন?” সেই সঙ্গে তাঁর দাবি, তাঁর ছোট বোন চাকরি করেন না, বড় বোন ব্যাঙ্কের চাকরি থেকে অবসর নিয়ে তৃণমূলের নেত্রী হয়েছেন। ছেলে বেসরকারি ব্যাঙ্কের কর্মী। বৌমা নাতির জন্য ব্যাঙ্কের চাকরি ছেড়েছেন। তাঁর দাবি, এর কোনও ক্ষেত্রেই সুপারিশের কোনও জায়গা নেই। বীজ কেলেঙ্কারি নিয়ে উদয়নের চ্যালেঞ্জ, “তদন্ত করে আমাকে জেলে পাঠান, না পারলে রবিবাবু রাজনীতি ছেড়ে দেবার ঘোষণা করুন।” রবীন্দ্রনাথবাবু বলেন, “আমার শ্যালিকা নেই, শ্যালিকার মেয়ের মত কিছু আজগুবি ঘনিষ্ঠ আত্মীয়র কথা বলা হচ্ছে। তা ছাড়া আমার মেয়ের এখনও চাকরি হয়নি। দুটো বিষয়ে এমএ করেছে, পরীক্ষায় বসতে পারবে না? নাকি যাঁরা এসব বলছেন, সমস্ত মেধা শুধু তাঁদের পরিবারেই ছিল।”

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন