ধৃত তৃণমূল সমর্থকের মুক্তি, বিতর্ক

অবৈধভাবে ঘরে ঢোকা ও হুমকির অভিযোগে ধৃত তৃণমূলের পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যকে থানা থেকে ব্যক্তিগত জামিনে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল পুলিশের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার সকালে দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট থানার ঘটনা। সোমবার রাতে ঘটনার শুরু বালুরঘাট থানার ধুলাতোর এলাকায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বালুরঘাট শেষ আপডেট: ২২ অক্টোবর ২০১৪ ০২:০৩
Share:

অবৈধভাবে ঘরে ঢোকা ও হুমকির অভিযোগে ধৃত তৃণমূলের পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যকে থানা থেকে ব্যক্তিগত জামিনে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল পুলিশের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার সকালে দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট থানার ঘটনা। সোমবার রাতে ঘটনার শুরু বালুরঘাট থানার ধুলাতোর এলাকায়। বালুরঘাট পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল সদস্য তথা খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ অভিযুক্ত শুভাশিস রায়ের বিরুদ্ধে ২৫ নম্বর বিএসএফ কোম্পানির জওয়ান হৃদয়নাথ সিংহ সোমবার রাতেই থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। বিএসএফ কর্তৃপক্ষ তাকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেন। এ দিন সকালে ধৃত পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে ঘরে ঢোকা (৪৪৮ ধারা) এবং হুমকি (৫০৬)র ধারায় মামলা দায়ের করে থানা থেকে জামিনে ছেড়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। ওই ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে সরব হয়েছে বিরোধীরা।

Advertisement

মামলাটির তদন্তকারী অফিসার বালুরঘাট থানার আইসি বিপুল বন্দ্যোপাধ্যায় কোনও মন্তব্য করতে চাননি। দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলা পুলিশ সুপার শীসরাম ঝাঝারিয়া ঘটনাটি নিয়ে খোঁজ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন।

অভিযুক্ত তৃণমূল পঞ্চায়েত কর্মাধ্যক্ষ শুভাশিসবাবু জানান, তাঁর পাশের বাড়িতেই ওই জওয়ান পরিবার নিয়ে ভাড়া থাকেন। সোমবার রাতে এলাকার এক ব্যক্তি ভুল করে ওই জওয়ানের বাড়িতে ঢুকে পড়েন। ঝগড়া শুরু হলে তিনি মধ্যস্থতা করতে যান। ওই প্রতিবেশীকে সরে যেতে বলে বিষয়টি মিটমাট করে নিতে বললে উল্টে তাঁকেই দোষী বলে ধরে নেওয়া হয়। তার উপর ওই জওয়ান বাংলা বুঝতে না পারায় পরিস্থিতি জটিল হয় বলে শুভাশিসবাবুর দাবি। সেই সময় ফাঁড়ি থেকে অফিসারেরা গিয়ে তাঁকে ধরে নিয়ে যান। শুভাশিসবাবুর দাবি, “মিথ্যে অভিযোগ করা হয়েছে।”

Advertisement

বালুরঘাট পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূলের সভাপতি প্রবীর রায়ও শুভাশিসবাবুর পাশেই দাঁড়িয়েছেন। তিনি বলেন, “ভুল বুঝে বিএসএফ থেকে দলের খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ শুভাশিসবাবুকে ধরে মিথ্যা অভিযোগ করেছে। আমরা বিএসএফের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ করছি না। পুলিশকে তদন্ত করে প্রকৃত ঘটনা উদ্ঘাটন করতে বলা হয়েছে।” ওই বিএসএফ জওয়ান বালুরঘাট থানায় লিখিত অভিযোগ করে জানান, রাতে নেশাগ্রস্ত হয়ে শুভাশিসবাবু তার ঘরে ঢুকে পড়েন। ঘরে জওয়ানের স্ত্রী ছিলেন। আপত্তি জানালে তিনি হুমকি দেন বলে অভিযোগ। বিএসএফের এক মুখপাত্র বলেন, “ঘটনার ব্যাপারে থানায় অভিযোগ করা হয়েছে। প্রয়োজনে পুলিশ সুপারের সঙ্গে কথা বলা হবে।”

কংগ্রেস জেলা সভাপতি নীলাঞ্জন রায় অভিযোগ করেন, “সাধারণ মানুষ কিংবা বিরোধীদের কেউ ওই অভিযোগে ধরা পড়লে পুলিশ তাকে জামিন অযোগ্য ধারায় অভিযুক্ত করে আদালতে পাঠাতো। শাসক দলের নেতা বলেই তাকে থানা থেকেই লঘু ধারা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হল। পুলিশের পক্ষপাতিত্ব আবার প্রমাণ হল। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।” যদিও তৃণমূল জেলা সভাপতি তথা আইন পরিষদীয় সচিব বিপ্লব মিত্র বলেন, “আইন আইনের পথে চলবে। আইনের ঊর্ধে কেউ নন। তবে ওই দুটি ধারা জামিনযোগ্য হওয়ায় পুলিশ থানা থেকে ব্যক্তিগত জামিনে ছেড়ে দিতে পারে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন