শিশু-কিশোর পাচারকারী সন্দেহে ধৃতের বাড়ি গিয়ে তাঁর পরিবারের সদস্যদের জেরা করল কেরল পুলিশ সিআইডি। মালদহের চাঁচল, হরিশ্চন্দ্রপুর ও রতুয়ার বিভিন্ন এলাকা থেকে কেরলে যাওয়ার পরে ৫৮ জন শিশু-কিশোরকে পরিচয়পত্র না থাকায় গ্রেফতার করে সেখানকার রেল পুলিশ। পরে তাদের অভিভাবকদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। ওই ঘটনায় পাচারের অভিযোগে তিন জনকে গ্রেফতারও করা হয়। ওই শিশু-কিশোরদের কেরলে পড়তে না কি অন্য কোনও উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, তা খতিয়ে দেখতে সোমবার রাতে মালদহে পৌঁছয় কেরল পুলিশের সিআইডি-র একটি দল।
মঙ্গলবার তারা পুলিশ-প্রশাসনের কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এ দিন দুপুরে তাঁরা ফুলহার পেরিয়ে রতুয়া-১ ব্লকের মহানন্দটোলা গ্রাম পঞ্চায়েতের রুহিমারি এলাকায় যান। কেরলে শিশু-কিশোর পাচারকারী সন্দেহে ওই গ্রামেরই মৌলবী মনসুর রহমানকে গ্রেফতার করেছে কেরল পুলিশ। তিনি কেরলে আনোয়ারুল হুদা কমপ্লেক্সে শিক্ষকতা করতেন। মালদহে তদন্তে এসে এ দিন তাঁর বাড়িতে গিয়েই কেরল কাণ্ডের ঘটনার তদন্ত শুরু করে কেরল সিআইডি। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন রতুয়া থানার কয়েক জন পুলিশকর্মী।
জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, হরিশ্চন্দ্রপুর, চাঁচল সহ যে সব এলাকা থেকে শিশু-কিশোরদের নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, সেই সব গ্রামের পাশাপাশি কেরল কান্ডে ধৃতদের বাড়িতেও কেরল পুলিশের সিআইডি-র ওই দলটির যাওয়ার কথা। জেলা পুলিশের তরফে তাদের সবরকম সাহায্য করা হচ্ছে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, কেরলে ধৃতদের মধ্যে আছেন মহানন্দটোলার রুহিমারি এলাকার মনসুর রহমান। এ দিন তার বাড়িতে গিয়ে ঘণ্টা খানেক ধরে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন সিআইডির ৬ সদস্যের দলটি। বাড়ি ঘুরে দেখার পাশাপাশি চারপাশও ঘুরে দেখেন। পরিবারে ক’জন সদস্য, তার বিস্তারিত খোঁজখবর নেন।
পরিবারের পাশাপাশি বাসিন্দাদের অনেকেই মৌলবী মনসুর রহমানকে ভাল মানুষ বলে সিআইডির কাছে দাবি করেছেন। তাঁর এক ভাইপো গত এক বছর ধরে কেরলে যে ওই প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করছে, তা-ও সিআইডিকে জানানো হয়। আগাম জানিয়ে না যাওয়ায় ধৃতের স্ত্রী এ দিন বাড়িতে ছিলেন না। তবে তাঁর ভাই আখতার হোসেন বলেন, কেরল পুলিশের সিআইডি-র দলটি পরিবার সম্পর্কে বিস্তারিত খোঁজখবর নিয়েছে। তাঁরা যে এই এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা, তার পরিচয়পত্রও দেখানো হয়েছে। জেলা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, এ দিন রতুয়া ছাড়া হরিশ্চন্দ্রপুর যাওয়ার কথা ছিল। সময়ের অভাবে যেতে পারেননি সিআইডি-র দলটি। ফুলহার পেরিয়ে রুহিমারি যাতায়াত করতে বিকেল হয়ে যায়। হরিশ্চন্দ্রপুরের আইসি বাবিন মুখোপাধ্যায় জানান, কেরল পুলিশের দল হরিশ্চন্দ্রপুরের নানারাহী এলাকায় যাওয়ার কথা জানালেও সন্ধ্যা অবধি সিআইডি-র দল সেখানে পৌঁছয়নি।