একাদশ শ্রেণির স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণ ও খুনের অভিযোগের ঘটনার পুলিশি তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
ধূপগুড়ির বাসিন্দাদের অনেকেই জানিয়েছেন, ঘটনার পরে চার দিন কেটে গিয়েছে। একজনকে ধরা হয়েছে ঠিকই। তবে ঠিক কী ভাবে, কারা চক্রান্ত করেছিল তা স্পষ্ট হয়নি। এতে গ্রাম জুড়ে আতঙ্কের পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে। পুলিশের তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন শাসক দলের নেতারাও।
স্থানীয় সাঁকোয়াঝোরা ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য তথা তৃণমূল নেতা কমল রায় বলেন, “আসলে কে, কী ভাবে খুন করেছে তা এখনও স্পষ্ট হয়নি। তদন্তের অগ্রগতি তো আমরা বুঝতে পারছি না। মহিলাদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।” ওই কিশোরীর কয়েকজন প্রতিবেশী জানান, সন্ধ্যার পর মহিলারা আর ঘরের বাইরে যেতে চাইছে না। এই প্রসঙ্গে ধূপগুড়ি থানার আইসি যুগল চন্দ্র বিশ্বাস বলেছেন, “আমরা তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছি। কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদও করা হচ্ছে।”
পুলিশ সূত্রের খবর, বুধবার দুই যুবককে ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। গত রবিবার থেকে মোট তিনজনকে এ নিয়ে জেরা করেছে। এদিন ছাত্রীর পরিবারের লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে বাড়ি লাগোয়া এলাকার বাসিন্দা, দুই যুবককে তুলে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তাদের মধ্যে একজন সম্প্রতি ওই ছাত্রীর পথ আটকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়েছিল বলে জানা গিয়েছে। অন্যজন, মোবাইলের ক্যাশকার্ডের ব্যবসা করেন। সেখান থেকে ছাত্রীটি ক্যাশকার্ড কিনত।
এর আগে ছাত্রীর প্রেমিক অমিত রায় নামের কলেজ ছাত্রকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। তার কাছ থেকে খুনের ঘটনা তেমন তথ্য মেলেনি বলে পুলিশ সূত্রের খবর। ধৃত অমিত নির্দোষ বলেও দাবি করেছেন। তার বাবা ও দাদা এদিন খুনের ঘটনা নিয়ে সিবিআই তদন্তর দাবি তোলেন। এদিন তার জ্যাঠামশাই কৃষ্ণপদ রায় বলেন, “ভাইপো নির্দোষ। ছাত্রীর বাড়ির অদূরে দেহটি মিলেছে। সে চিৎকার করে এলাকার লোকজন বা বাড়ির লোকজন শুনতে পেত। দেহের পাশে যে গামছ মিলেছে, সেটা কোথাকার তা পুলিশের দেখা দরকার। মেয়ের পরিবারের লোকদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন।”
তবে ছাত্রীর মায়ের দাবি, “বাড়ির আশেপাশে থাকলে মেয়ে ওড়না হিসাবে গামছা ব্যবহার করত। অমিত-সহ আরও কয়েকজন মেয়েকে খুন করেছে বলে আমাদের ধারণা। পুলিশি তদন্ত ঠিকঠাক হলে সব তথ্য উঠে আসবে।”
নিহত ছাত্রী যে স্কুলে পড়ত, সেই হাই স্কুলে গত চারদিন ধরে হীরক জয়ন্তী অনুষ্ঠান চলছে। প্রতিদিনই উৎসব মঞ্চকে প্রতিবাদ মঞ্চ হিসাবে তুলে ধরেছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। এদিন অনুষ্ঠানের শেষদিন, দুপুরে মঞ্চে ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষকরা মোমবাতি জ্বালিয়ে প্রতিবাদে সামিল হন।