শেষ দু’দিনই ব্যবসা ছিল বেশি। —নিজস্ব চিত্র।
রাসে এ বার প্রায় ৪০ কোটি টাকার ব্যবসা হয়েছে বলে জানাল কোচবিহারের দু’টি ব্যবসায়ী সংগঠন।
২০১২ সালে রাস মেলার দু’শো বছর পূর্তির সময়েই এক মাত্র এত বেশি অঙ্কের ব্যবসা হয়েছে বলে জানাচ্ছেন কোচবিহার জেলা ব্যবসায়ী সমিতি ও ডিস্ট্রিক্ট চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের কর্তারা। তাঁদের বক্তব্য,বিগত কয়েক বছরে এত বেশি অঙ্কের ব্যবসা হয়নি।
কোচবিহার জেলা ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক সুব্রত সাহা বলেন, “মেলায় সব মিলিয়ে সাড়ে তিন হাজারের বেশি দোকান বসে। দৈনিক ব্যবসার অঙ্ক হিসেব নিকেশ করে দেখা গিয়েছে এ বার প্রায় ৪০ কোটি টাকার ব্যবসা হয়েছে। তবে মেলার শেষের দিকেই অবশ্য বিকিকিনি বেশি ছিল। ডিস্ট্রিক্ট চেম্বার অফ কর্মাস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সম্পাদক রাজেন বৈদ্য জানিয়েছেন, গত বছর মেলায় প্রায় ৩৫ কোটি টাকার ব্যবসা হয়। এ বার রাসমেলায় সেই তুলনায় অন্তত ৫ কোটি টাকা বেশি ব্যবসা হয়েছে। ২০১২ সালে রাসমেলার দুশো বছর পূর্তিতে অবশ্য সাম্প্রতিককালের মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রায় ৫০ কোটি টাকার ব্যবসা হয়েছিল। তবে ওটা ব্যাতিক্রমী বছর। সব্জির দর বেশি থাকায় চাষিদের হাতে কাঁচা টাকা এসেছে। তার ফলে ব্যবসাও বেশ ভাল হয়েছে।
এ বার রাস মেলা শুরু হয়েছিল ৬ নভেম্বর। প্রথমে ২৩ নভেম্বর পর্যন্ত মেলা চলবে বলে ঘোষণা করা হয়। পরে ব্যবসায়ীদের দাবি মেনে মেলার মেয়াদ আরও দু’দিন বাড়িয়ে ২৫ নভেম্বর মঙ্গলবার পর্যন্ত করা হয়। বুধবার ভাঙা মেলাতেও অবশ্য সকাল থেকে দিনভর বিকিকিনি চলে। উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, ২০২ তম বর্ষের রাসমেলা শুরুতে তেমন জমে ওঠেনি। তবে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ পেরনোর পর প্রতিদিনই মেলা চত্বর জনস্রোতে ভেসে গিয়েছে। খাবারের দোকান থেকে রকমারি পণ্য, শীতের জামাকাপড়, বাংলাদেশের ঢাকার জামদানি, পদ্মার নোনা ইলিশ, যশোরের খেজুর গুড়, মণিহারি, নাগরদোলা, সার্কাস-- সর্বত্র ছিল উপচে পড়া ভিড়। ছুটির দিনে রাসমেলা চত্বরের সার্কাসের তাঁবুতে লাইন দিয়ে টিকিট কাটতে উত্সাহীরাও ভিড় জমান।
ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, তুলনামূলকভাবে জামাকাপড়ের দোকানে প্রায় ৫ কোটি, জিলিপি থেকে বিরিয়ানি হরেক খাবারের দোকান মিলিয়ে প্রায় ৩ কোটি, সার্কাস, নাগরদোলা-সহ বিনোদন খাতে প্রায় ২ কোটি-সহ সামগ্রিক কেনাকাটায় ওই ব্যবসা হয়। এ বারের রাসমেলার উদ্বোধক তথা রাজ্যের পরিষদীয় সচিব রবীন্দ্রনাথ ঘোষ অবশ্য বলেন, “রাসমেলা চত্বরের বাইরে হোটেল, রেস্তোঁরা-সহ বিভিন্ন খাবারের দোকান, টোটো, সরকারি-বেসরকারি বাস, রিকশা, ছোটগাড়ির মত পরিবহণের সামগ্রিক ব্যবসাও মেলার ২০ দিন গোটা কোচবিহারেই জমে উঠেছিল। ওই সব হিসেব ধরলে মেলাকে কেন্দ্র করে কোচবিহারে ব্যবসার অঙ্ক ৫০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে। সবচেয়ে বেশি ব্যবসা হয়েছে শেষ দু’দিন।