নবম শ্রেণির পাঠ্যবই অমিল, দুর্ভোগ কোচবিহারের স্কুলে

মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহ পেরিয়েও পাঠ্য বই হাতে এল না কোচবিহারের একাধিক স্কুলের নবম শ্রেণির প্রায় ন’হাজার পড়ুয়ার। পরীক্ষার মুখে তাই দুশ্চিন্তায় অভিভাবকেরাও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ১২ মার্চ ২০১৫ ০২:১৮
Share:

মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহ পেরিয়েও পাঠ্য বই হাতে এল না কোচবিহারের একাধিক স্কুলের নবম শ্রেণির প্রায় ন’হাজার পড়ুয়ার। পরীক্ষার মুখে তাই দুশ্চিন্তায় অভিভাবকেরাও।

Advertisement

জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহেই ওই বই তাদের হাতে তুলে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিল মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। আগামী এপ্রিল মাস থেকে স্কুলগুলিতে শুরু হবে ইউনিট টেস্ট। এ সময়ে পাঠ্য বই হাতে না থাকায় পরীক্ষা নিয়ে দুশ্চিন্তা তৈরি হচ্ছে পড়ুয়াদের। বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ, শিক্ষক থেকে অভিভাবক। যদিও মধ্যশিক্ষা পর্ষদ থেকে জানানো হয়েছে, সর্বশিক্ষা মিশন কোচবিহারের পক্ষ থেকে যে পরিমাণ বই চেয়ে আবেদন করা হয়েছিল, তা পাঠানো হয়েছে।

এর পরেও তুফানগঞ্জ, দিনহাটা, জড়াবাড়ি, ঘুঘুমারির মতো গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বেশির ভাগ স্কুলের অধিকাংশ পড়ুয়ার হাতেই পৌঁছয়নি বই। সবর্শিক্ষা মিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার আরও ন’হাজার বইয়ের আবেদন করেছে তারা। মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রশাসক কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “ওঁদের আবেদন আগামী সোমবারের মধ্যে পৌঁছে যাবে। আগে থেকেই সব বই চাওয়া হলে অন্য জেলার মতো জানুয়ারি মাসেই বই হাতে পেত পড়ুয়ারা।” সর্বশিক্ষা মিশনের প্রকল্প আধিকারিক সঞ্জীবকুমার ঘোষ জেলার বাইরে থাকায় এ বিষয়ে পরে কথা বলবেন বলে জানান। সর্বশিক্ষা মিশনের তরফে জানানো হয়, সারা বছর নবম শ্রেণিতে পড়ুয়ারা ভর্তি হয়। সে কারণে তাঁদের হিসেবে কিছু গণ্ডগোল হয়েছে। ৬১ হাজার বই চেয়ে আবেদন করলেও পরে আধিকারিকরা বুঝতে পারেন, বই প্রয়োজন ৭০ হাজার। সমস্যার কথা স্বীকার করেছেন কোচবিহার জেলা স্কুল শিক্ষা পরিদর্শক বালিকা গোলে। তিনি বলেন, “বইয়ের জন্য আবেদন করেছি। হাতে পেলেই স্কুলে দিয়ে দেওয়া হবে।”

Advertisement

স্কুল শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কোচবিহার জেলায় স্কুলের সংখ্যা ২৬৮টি। নবম শ্রেণিতে পড়ুয়ার সংখ্যা প্রায় ৭০ হাজার। মধ্যশিক্ষা পর্ষদ থেকে নবম শ্রেণির পড়ুয়াদের জন্য বরাদ্দ অঙ্ক, ইংরেজি এবং বাংলা বই। ডিসেম্বর মাসেই পর্যাপ্ত বই চেয়ে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের কাছে আবেদন জানায় সর্বশিক্ষা মিশন। সেই হিসেবেই বই আসে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ থেকে। কেন জেলা থেকে এ বার কম বই চেয়ে আবেদন করা হয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে স্কুলগুলিতে।

এ দিকে ঘুঘুমারি হাইস্কুলের এক ছাত্র জানায়, বই না থাকায় বন্ধুর বই মাঝে মধ্যে বাড়িতে এনে পড়াশোনা চালাতে হচ্ছে। স্কুলটির নবম শ্রেণিতে পড়ে ২৫০ জন পড়ুয়া। এখনও বই হাতে পায়নি তাদের মধ্যে প্রায় ১০০ জন। স্কুলের প্রধান শিক্ষক তপনকুমার কর বলেন, “আগামী মাস থেকে ইউনিট টেস্ট শুরু হবে। হাতে বই না থাকায় পড়ুয়ারা ঠিকমতো পড়াশোনা করতে পারছে না।” জড়াবাড়ি হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক পুলক সাহা বলেন, “এখনও অনেকে বই পায়নি। এ বিষয়ে বার বার শিক্ষা দফতরে জানাচ্ছি। শুধুই আশ্বাস দেওয়া হচ্ছে। এ ভাবে পড়ুয়াদেরই ক্ষতি হচ্ছে।”

পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সংগঠনের জেলা সভাপতি পার্থপ্রতিম রায় বলেন, “সর্বশিক্ষা মিশন আরেকটু দায়িত্ব নিয়ে হিসেব করলে বইয়ের সংখ্যা কম হতো না। যা হোক, এখন যত দ্রুত বই আনা সম্ভব, তার চেষ্টা করছি। কয়েক দিনের মধ্যেই সমস্যা মিটে যাবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন