ইটাহারের চাকলা এলাকা থেকে ৭০টি হাতবোমা একটি একনলা বন্দুক এবং পাইপগান উদ্ধার করেছে পুলিশ। উদ্ধার হয়েছে বোমা তৈরির মশলাও। মঙ্গলবার দুপুরে এলাকায় একটি পুকুর দখলের অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়ায়। দু’পক্ষের মধ্যে বোমাবাজিও হয় বলে অভিযোগ। এরপরেই এলাকায় তল্লাশি চালিয়ে একটি বাড়ি থেকে বোমা এবং বন্দুক উদ্ধার করে পুলিশ। লোকসভা ভোটের মুখে বোমা ও বন্দুক উদ্ধারের ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। বোমা উদ্ধারের পরে পুলিশ সেগুলিকে পুকুরে ডুবিয়ে নিষ্ক্রিয় করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, এ দিন দুপুরে পুকুর দখলকে কেন্দ্র করে দুই পরিবারের মধ্যে বিবাদ শুরু হয়। তারপরেই শুরু হয় বোমাবাজি। বোমাবাজির ঘটনায় অভিযোগ উঠেছে এলাকার বাসিন্দা সইদুল রহমানের বিরুদ্ধে। এ দিন সইদুল কয়েকজনকে নিয়ে প্রতিবেশি সাময়েন মুর্মু নামে এক ব্যক্তির পুকুর দখল করার চেষ্টা করে বলে অভিযোগ। মাছ ধরার জন্য পুকুরে জালও ফেলা হয় বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে সাময়েনবাবু পরিবারের তরফে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে তাঁদের লক্ষ করে বোমা ছোড়া বলে অভিযোগ। অভিযোগ পেয়ে পুলিশ অভিযুক্ত সইদুলের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে বোমা-বন্দুক উদ্ধার করে। উত্তর দিনাজপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ডেভিড ইভান লেপচা বলেন, “পুকুর দখল করাকে কেন্দ্র করেই গোলমালের সূত্রপাত। মূল অভিযক্ত সইদুল সহ মোট চারজনের খোঁজে তল্লাশি চলছে।” ভোটের আগে এই ঘটনায় রাজনৈতিক চাপানোতরও শুরু হয়েছে। অভিযুক্ত এলাকায় সিপিএম সমর্থক বলে পরিচিত বলে তৃণমূলের দাবি। তৃণমূলের জেলা পরিষদ সদস্য মোশারফ হোসেনে অভিযোগ, “অভিযুক্তরা সকলেই সিপিএমের কর্মী। লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল কর্মী সমর্থকদের উপর হামলার উদ্দেশ্যেই তারা বাড়িতে বোমা ও আগ্নেয়াস্ত্র মজুত করা হয়েছিল।” যদিও সিপিএমের ইটাহার জোনাল কমিটির প্রাক্তন সম্পাদক হবিবুর রহমান বলেন, “অভিযুক্তদের সঙ্গে দলের সম্পর্ক নেই। নির্বাচনের মুখে সুবিধা পেতে তৃণমূল অপপ্রচার চালাচ্ছে।” যাঁর পুকুর দখলের চেষ্টা হয়েছে বলে অভিযোগ, সেই সাময়েন বলেন, “দীর্ঘদিন ধরেই সইদুল কিছু দুষ্কৃতীদের নিয়ে আমার পুকুরটি দখলের চেষ্টা করছে। এ দিন বাধা দেওয়ায় আমাদের লক্ষ করে বোমা ছুড়ে পালিয়ে যায়। পুলিশে অভিযোগ জানিয়েছি।” সইদুলের স্ত্রী বেরিয়া বিবির অভিযোগ, “ওই পুকুরটির লিজের মেয়াদ এখনও শেষ হয়নি। লিজ ছেড়ে দেওয়ার জন্য সাময়েন মুর্মু পরিবারের সদস্যরা তির-ধনুক নিয়ে তাঁদের বাড়িতে হামলা চালাচ্ছিল।” তাঁর দাবি, “আত্মরক্ষার্থে স্বামী বাড়িতে হাতবোমা ও আগ্নেয়াস্ত্র মজুত করতে বাধ্য হয়েছিলেন।”