পুজোর আগে শহরের বিভিন্ন রাস্তা সংস্কারে উদ্যোগী হল জলপাইগুড়ি পুরসভা। বেশ কয়েকটি এলাকায় আধুনিক পথবাতি বসানোরও পরিকল্পনাও নিয়েছে পুর কর্তৃপক্ষ। সেই সঙ্গে পুজোর আগেই শহর জঞ্জালমুক্ত করতে বিশেষ অভিযান শুরু হতে চলেছে বলে জানানো হয়েছে। যদিও পুরসভার ঘোষণা কতটা বাস্তবায়িত হবে তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন বিরোধীরা। তাঁদের অভিযোগ, পুরসভার কর্তারা নানা সময়ে টাকা নেই বলে দাবি করলেও, বিভিন্ন কাজে প্রায় দেড় কোটি টাকার টেন্ডার ডাকা হয়েছে। তাই সে সব কাজ কী ভাবে হবে তা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধী বাম কাউন্সিলররা। তৃণমূল পুর বোর্ডের তরফে অবশ্য বিরোধীদের অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে দাবি করা হয়েছে। তাঁদের পাল্টা অভিযোগ, রাজনৈতিক স্বার্থেই পরিষেবায় বাধা দিতে চাইছেন বিরোধীরা। পুরসভার চেয়ারম্যান মোহন বসু বলেন, “পুজোর আগে শহরে দু’ধরণের কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন পুজো কমিটিকে সঙ্গে নিয়ে পরিবেশ সচেতনতা তৈরিতে প্রচার করা হবে, তেমনিই উত্সবের মরসুমে যাতে শহরবাসীকে কোনও দুর্ভোগ পোহাতে না হয় তার জন্য একগুচ্ছ প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে সড়ক সংস্কার থেকে, নতুন আলো লাগানো, জঞ্জাল অপসারণ সবই রয়েছে।”
পুরসভা সূত্রে জানানো হয়েছে, ২৫টি ওয়ার্ডের রাস্তা মেরামতের কাজ শুরু হয়েছে। প্রতিটি ওয়ার্ডে তিনটি করে আধুনিক পথবাতি বসানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। পুজোর দিনগুলিতে দর্শনার্থীদের সুবিধের জন্য আরও বেশ কয়েকটি আলোর ব্যবস্থা করা হবে। বিভিন্ন ওয়ার্ডের যে রাস্তাগুলি বেহাল হয়ে পড়েছে সেগুলির সংস্কার হবে। প্রতিমা নিরঞ্জনের ঘাটগুলিকেও সংস্কার করার কথা পুরসভার তরফে জানানো হয়েছে।
সিপিএম কাউন্সিলর তথা বিরোধী দলনেতা প্রমোদ মণ্ডল বলেন, “পুজোর আগে শহরের রাস্তা মেরামত করা পুরসভার দায়িত্ব। যদিও কয়েক বছর ধরে সে কাজ বন্ধ। প্রতিটি রাস্তা ভেঙে গিয়েছে। সংস্কারের নামে জোড়াতালি দেওয়ার কাজ করা হচ্ছে। এভাবে চলতে পারে না।” পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান তপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাল্টা দাবি, “পরিষেবা দিতে সব রকম প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। আমরা চাই বিরোধীরাও সহযোগিতার জন্য এগিয়ে আসুন। শুধু রাজনীতি করে উন্নয়নে বাধা দিতে চাইলে শহরবাসী মেনে নেবে না।”
সংস্কারের এই উদ্যোগকে ‘চমক’ বলে দাবি করেছে কংগ্রেসও। পুরসভার কংগ্রেস সদস্য নির্মল ঘোষ দস্তিদার টেন্ডার প্রক্রিয়া নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি বলেন, “কয়েকজন সদস্যকে নিয়ে দলত্যাগের পরে বোর্ড সংখ্যালঘু হয়েছে। ওঁদের টেন্ডার ডাকার কোনও অধিকার নেই। অর্থ বরাদ্দ ছাড়া টেন্ডার ডাকা যায় না।” তবে ভাইস চেয়ারম্যানের পাল্টা প্রশ্ন, “সংখ্যালঘু বোর্ড হলে অন্যরা অনাস্থা আনছেন না কেন? আমাদের কী অধিকার আছে সেটা ভাল জানা আছে। ওঁদের কোনও সংশয় থাকলে প্রশাসনের কাছে যেতে পারেন।”