গত বিধানসভা নির্বাচনেও দশরথ তিরকের বিরুদ্ধে প্রচার করেছেন। দেওয়াল লিখেছেন। বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন। ডুয়ার্সের কুমারগ্রামের আরএসপি বিধায়ক দশরথ তিরকে দল পালটে তৃণমূলে নাম লিখিয়েছেন। লোকসভা নির্বাচনে আলিপুরদুয়ার লোকসভা কেন্দ্রে প্রার্থী হয়েছেন দশরথবাবু। তাই সেই তৃণমূল কর্মীদের এবার দশরথবাবুর হয়েই ময়দানে নামতে হচ্ছে। এই নিয়ে কুমারগ্রাম বিধানসভা ক্ষেত্রে তৃণমূল কর্মী সমর্থকরা একাংশ রীতিমত দ্বিধায় পড়েছেন।
দলীয় সূত্রের খবর, বিষয়টি নিয়ে দলের অন্দরে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। অনেক ব্লক ও জেলা কমিটির নেতারাও তাঁদের ক্ষোভের কথা দলের মধ্যে বলা শুরু করে দিয়েছেন। তবে শাস্তির মুখে পড়তে হতে পারে ভেবে কেউ প্রকাশ্যে মুখ খুলছেন না। কুমারগ্রাম এলাকার তৃণমূল কর্মী সুজন দেব, অনন্ত দাস, বিনয় তরফদারদের কথায়, “দশরথবাবুর বিরুদ্ধে গত বিধানসভা ভোটে প্রচার করেছি। মানুষকে তাঁর বিরুদ্ধে ভোট দিতে বলেছি। এবার তাঁর হয়ে প্রচারে নামতে হচ্ছে। অনেক ভোটারদের প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে। অপ্রস্তুত হতে হচ্ছে।’’ খোদ দশরথ তিরকে অবশ্য বলছেন, “উন্নয়নের স্বার্থে তৃণমূলে যোগ দিয়েছি। কুমারগ্রামের মানুষকে সেটা বোঝাতে পেরেছি। দলের কর্মী সমর্থকরা রীতিমত উচ্ছসিত। কোন দ্বিধা বা ক্ষোভ থাকলে তা সহজেই মিটে যাবে। আলিপুরদুয়ারে ঘাসফুলের জয় নিশ্চিত।”
তবে কর্মীদের ক্ষোভের কথা স্বীকার করছেন একাংশ নেতাও। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তৃণমূলের জেলা কমিটির এক নেতা জানান, দশরথবাবু দলে আসামাত্র তাঁকে লোকসভা ভোটে প্রার্থী করায় কর্মী সমর্থকদের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। তিন বছরের মধ্যে একবার তার বিপক্ষে রাস্তায় নেমে এবার সঙ্গে নামতে হচ্ছে। লোককে বোঝাতে সমস্যা হচ্ছে। তবে দল যাঁকে প্রার্থী করেছে, তাঁকে সবাই মেনে নেবেন। কর্মী, সমর্থকদের বিষয়টি বোঝানো হচ্ছে। তৃণমূলের কুমারগ্রাম ব্লক কমিটির সভাপতি দুলাল দে অবশ্য এ সমস্ত দ্বিধা বা ক্ষোভকে গুরুত্ব দিতে রাজি নন। তিনি বলেন, “দশরথবাবু দলে যোগদানের পর তৃণমূল কর্মী সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক উচ্ছ্বাস দেখা গিয়েছে। তাঁর মাধ্যমে এলাকার উন্নয়ন করার জন্য তাঁকে দল প্রার্থী করেছে। গ্রামে গ্রামে কর্মী সভা করে কর্মীদের প্রচারে ঝাঁপিয়ে পড়ার নির্দেশ দিয়েছি।”
এই প্রসঙ্গে আরএসপি-র কুমারগ্রাম জোনাল সম্পাদক দীপক দাস বলেন, “দশরথবাবু প্রার্থী হওয়ায় আমাদের জয় নিশ্চিত। ওই দলে তো ক্ষোভ, বিক্ষোভ শুরু হয়ে গিয়েছে। আমাদের কাছেও অনেকে এসে বলেছেন। কুমারগ্রামের মানুষের সঙ্গে দশরথ তিরকে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন।”